ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় শহর ইজিয়ামের দখল নিয়েছে রুশ বাহিনী। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইগর কোনোশেনকভ বৃহস্পতিবার মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে কোনোশেনকভ বলেন, ইউক্রেনে রাশিয়ার সেনাবাহিনী তাদের বিশেষ সামরিক অভিযান অব্যাহত রেখেছে। আজ, ২৪ মার্চ সকালে দেশটির খারকিভ অঞ্চলের শহর ইজিয়ামের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিয়েছেন রুশ সেনারা।
ইউক্রেনের সাবেক রাজধানী ও দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর খারকিভের খুব কাছেই অবস্থান ইজিয়ামের। দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা রাশিয়ার এই দাবি স্বীকার করে নিয়েছেন;
তবে বলেছেন, দখল ফিরে পেতে ইজিয়ামে এখনও লড়াই করছে ইউক্রেনীয় সেনারা। বার্তাসংস্থা এএফপিকে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, ইজিয়ামের দখল ফিরে পেতে সেখানে আমাদের সেনা সদস্যরা এখনও লড়াই করছেন।
পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটোকে কেন্দ্র করে ২০০৮ সাল থেকে দ্বন্দ্ব চলছে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে। ওই বছরই ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য আবেদন করেছিল ইউক্রেন।
সম্প্রতি ন্যাটো ইউক্রেনকে পূর্ণ সদস্যপদ না দিলেও ‘সহযোগী সদস্য’ মনোনীত করার পর আরও বাড়ে এই দ্বন্দ্ব। ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য আবেদন প্রত্যাহারে ইউক্রেনকে চাপে রাখতে গত দুই মাস রাশিয়া-ইউক্রেন সীমান্তে প্রায় দুই লাখ সেনা মোতায়েন রেখেছিল মস্কো।
কিন্তু এই কৌশল কোনো কাজে আসেনি। উপরন্তু এই দু’মাসের প্রায় প্রতিদিনই যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা অভিযোগ করে গেছে— যে কোনো সময় ইউক্রেনে হামলা চালাতে পারে রুশ বাহিনী।
অবশেষে ২২ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় দুই ভূখণ্ড দনেতস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয় রাশিয়া; এবং তার দু’দিন পর, ২৪ তারিখ ইউক্রেনে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ শুরুর নির্দেশ দেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
মঙ্গলবার ২৭তম দিনে পৌঁছেছে এই অভিযান। গত ১০ দিনের ব্যবধানে এই নিয়ে দু’টি শহর দখল করল রুশ বাহিনী। এর আগে ১৫ মার্চ দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খেরসনের দখল নেয় রুশ সেনারা।
ইজিয়াম শহরটি কৌশলগতভাবে তাৎপর্যপূর্ণ রাশিয়ার জন্য। কারণ মাত্র ৫০ হাজার মানুষ অধ্যুষিত এই ছোট শহরটি দোনেতস্ক ও লুহানস্কের অন্যতম প্রবেশদ্বার। এছাড়া এই শহরটিতে একটি রেল জংশন আছে, যা ইউক্রেনের রেল যোগাযোগের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। সূত্র: বিবিসি