রেমালের অবস্থান এখন কোথায়?

‘রেমাল’ উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে উপকূল অতিক্রম সম্পন্ন করেছে। এটি মোংলার দক্ষিণ-পশ্চিম দিক দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ-খেপুপাড়া উপকূল অতিক্রম করছে। এটি আরও উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে ক্রমশ বৃষ্টিপাত বাড়িয়ে পরবর্তী ২-৩ ঘণ্টার মধ্যে কিছুটা দুর্বল হয়ে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। সোমবার সকালে আবহাওয়ার ১৭ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, প্রবল ঘূর্ণিঝড় রেমাল উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে মোংলার দক্ষিণপ-শ্চিম দিক দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ-খেপুপাড়া উপকূল অতিক্রম করেছে। প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৯০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১২০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।

পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ১০ নম্বর মহাবিপদসংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী এবং এর অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ১০ নম্বর মহাবিপদসংকেতের আওতায় থাকবে।

এ ছাড়া কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৯ নম্বর মহাবিপদসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর এবং এর অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো এই মহাবিপদসংকেতের আওতায় থাকবে।

খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার নদীবন্দরগুলোকে চার নম্বর নৌ-মহাবিপদসংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

প্রবল ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে দমকা হাওয়াসহ ভারি (প্রতি ঘণ্টায় ৪৪-৮৮ মিলিমিটার) থেকে অতিভারী (প্রতি ঘণ্টায় ৮৯ মিলিমিটারের বেশি) বর্ষণ হতে পারে। অতি ভারি বর্ষণের প্রভাবে কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলের কোথাও কোথাও ভূমিধ্বস হতে পারে।

প্রসঙ্গত, ঘূর্ণিঝড়ে বাতাসের গতিবেগ থাকে প্রতি ঘণ্টায় ৬২ থেকে ৮৮ কিলোমিটার। বাতাসের গতি ৮৯ থেকে ১১৮ কিলোমিটার থাকলে প্রবল, ১১৯ থেকে ২১৯ পর্যন্ত অতিপ্রবল এবং বাতাসের গতিপ্রতি ঘণ্টায় ২২০ কিলোমিটারের বেশি থাকলে সুপার সাইক্লোন বিবেচনা করা হয়ে থাকে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক বলেন, ‘এটা ঠিক যে, ঘূর্ণিঝড় স্থলভাগে ওঠার সময় এবং পরে বৃষ্টি ঝরিয়ে দুর্বল হয়। তবে রেমাল এখন পর্যন্ত শক্তিমাত্রা ধরে রেখেই উপকূল অতিক্রম করছে। আমরা আশঙ্কা করছি, এই ঝড়টি শক্তিমাত্রা ধরে রেখেই উপকূল অতিক্রম সম্পন্ন করতে পারে।’

তিনি বলেন, ‘রেমাল’ ক্রমাগত দুর্বল হয়ে প্রবল ঘূর্ণিঝড় থেকে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেবে। এরপর স্থল নিম্নচাপে পরিণত হবে এবং দেশের উত্তর দিকে এগোতে থাকবে। স্থল নিম্নচাপ হওয়ার পর আবদ্ধ হয়ে পড়লে ২৮ মে পর্যন্ত বাংলাদেশে থেমে থেমে বৃষ্টি হতে পারে।’