ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় হামাসকে উৎখাত আর তাদের কবল থেকে জিম্মি উদ্ধারের নামে ইসরায়েলের নির্বিচার হত্যাযজ্ঞ চলছেই। প্রতিদিনই তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলা; দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে লাশের মিছিল। নিরাপদ বলে কোনো স্থান বাকি নেই গাজাবাসীর জন্য। একদিকে আকাশ ও স্থল অভিযান, অন্যদিকে ত্রাণ সরবরাহ বন্ধ; গাজা যেন সাক্ষাৎ নরক হয়ে উঠেছে তার বাসিন্দাদের জন্য। এমনকি ঈদেও থেমে নেই ইসরায়েলের এই গণহত্যা। এ সময়টাতে একদিনের জন্যও গাজাবাসীর ওপর হামলায় বিরতি দেয়নি ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)।
সবশেষ ঈদের তৃতীয় দিনেও অবরুদ্ধ উপত্যকাটিতে দফায় দফায় গোলাবর্ষণ করেছে ইসরায়েলি বিমান বাহিনী। দিনভর এ হামলায় অন্তত ১০৮ জনকে হত্যা করেছে তারা। সেইসঙ্গে আহত হয়েছেন আরও ৩৯৩ জন। এর আগে, ঈদ ও ঈদের পরদিন মিলিয়ে অন্তত ১১৭ জন নিরপরাধ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে ইসরায়েলি বাহিনী।
সোমবার (৯ জুন) এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে আনাদোলু এজেন্সি।
রোববার সন্ধ্যার পর এক বিবৃতিতে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এই ইসরায়েলি আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত সব মিলিয়ে ৫৪ হাজার ৮৮০ জন নিহত হয়েছেন গাজায়। সেইসঙ্গে আহতের সংখ্যা পৌঁছেছে ১ লাখ ২৬ হাজার ২২৭ জনে। হতাহতদের ৫৬ শতাংশই নারী ও শিশু।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের এক হামলার প্রতিক্রিয়াস্বরূপ গাজায় ভয়াবহ এক অভিযানে নামে ইসরায়েলি বাহিনী। দীর্ঘ ১৫ মাস সামরিক অভিযানের পর যুক্তরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপে গত ১৯ জানুয়ারি গাজায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় ইসরায়েল। তারপর প্রায় দুমাস গাজায় কম-বেশি শান্তি বজায় ছিল; কিন্তু গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহারের প্রশ্নে হামাসের মতানৈক্যকে কেন্দ্র করে মার্চ মাসের তৃতীয় গত সপ্তাহ থেকে ফের গাজায় বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল।
গত ১৮ মার্চ থেকে শুরু দ্বিতীয় দফার এ অভিযানে এখন পর্যন্ত গাজায় নিহত হয়েছেন ৪ হাজার ৬০৩ জন ফিলিস্তিনি এবং আহত হয়েছেন আরও প্রায় ১৪ হাজার ৬৮৬ জন।