যশোর প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় এমপিওভুক্তির দাবিতে যশোরে শিক্ষক-অভিভাবকদের মানববন্ধন

প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়গুলোর স্বীকৃতি ও এমপিওভুক্তির দাবিতে যশোরে মানববন্ধন করেছেন চার জেলার শিক্ষক ও অভিভাবকেরা। বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় প্রেসক্লাব যশোরের সামনে বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় সমন্বয় পরিষদের ব্যানারে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধনে যশোরের আট উপজেলা ছাড়াও ঝিনাইদহ, মাগুরা ও নড়াইল জেলার বিভিন্ন প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও অভিভাবকেরা অংশ নেন। এ সময় তারা ‘দাবি মোদের একটাই, প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় এমপিও চাই’, ‘অবহেলা নয়, ন্যায্য অধিকার চাই’ ইত্যাদি স্লোগান সংবলিত প্ল্যাকার্ড হাতে বিভিন্ন দাবি জানান।
বক্তারা বলেন, শিক্ষানীতির পূর্ণ বাস্তবায়নে প্রতিবন্ধীদের শিক্ষার অধিকার নিশ্চিত করা অপরিহার্য। অথচ প্রতিবন্ধী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো এখনও এমপিওভুক্ত হয়নি। সরকারের নানা আশ্বাসের পরও কার্যত কোনো অগ্রগতি হয়নি বলে অভিযোগ করেন তাঁরা।

সংগঠনের যশোর শাখার সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হামিদ জানান, শুধুমাত্র যশোর জেলায় ৭৪টি প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ে ১২ হাজার শিক্ষার্থী এবং ১২ শতাধিক শিক্ষক-কর্মচারী মানবেতর জীবন যাপন করছেন। তিনি বলেন, “আমরা দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষা, থেরাপি ও জীবন দক্ষতা উন্নয়নমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছি। অথচ স্বীকৃতি না থাকায় বিদ্যালয়গুলো নানা সমস্যায় জর্জরিত।”

মানববন্ধনে হুইলচেয়ারে করে অংশ নেন শার্শার নাভারণ প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা আবু বক্কর। তিনি বলেন, “আমার দুটি পা নেই, আমি বুঝি প্রতিবন্ধীদের কষ্ট। ২০১৭ সালে নিজের জমিতে বিদ্যালয় গড়েছি, ২০১৮ সালে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সনদও পেয়েছি। কিন্তু এখনও এমপিও হয়নি।”
এক অভিভাবক শহিদুল ইসলাম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “প্রতিবন্ধী সন্তানের বাবার কষ্ট বোঝা কঠিন। আমাদের সন্তানেরাও বোঝা হয়ে থাকতে চায় না। সরকার যেন তাদের স্বীকৃতি দেয়।”

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন সংগঠনের যশোরের সভাপতি রাজু আহমেদ, সহসভাপতি আব্দুল সালাম, সহসম্পাদক মুক্তারুজ্জামান ও প্রচার সম্পাদক মমতাজ খাতুন।

মানববন্ধন শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে দড়াটানা হয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়। পরে প্রধান উপদেষ্টার বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন নেতৃবৃন্দ।