উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার পদটা চ্যালেঞ্জিং: জিনাত জাহান

টাঙ্গাইল: টাঙ্গাইল জেলার ১২ উপজেলার ১০টিতেই নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হিসেবে বর্তমানে দায়িত্ব পালন করছেন নারীরা।এর মধ্যে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্বে রয়েছেন জিনাত জাহান।

সম্প্রতি তিনি সঙ্গে একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। তিনি টাঙ্গাইল সদর উপজেলার বিভিন্ন বিষয়সহ সমসাময়িক বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন।

তিনি বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার পদটা অনেক চ্যালেঞ্জিং। সকল ধরনের কাজ সরকার নিদের্শিত, সমন্বয় সাধন করে মাঠ পর্যায়ে সরকারের প্রতিনিধি।এ সময় সকল বিভাগের সাথে সমন্বয় করে কাজ করতে হয়। এবং আমি সেই লক্ষেই কাজ করে যাচ্ছি।

আমি এ ধারনা পোষন করি যে এ কাজটি সফলতার সাথে চালিয়ে নিতে পারছি। সকল প্রতিকূলতা ও চ্যালেঞ্জ এর মধ্যে দিয়ে।

টাঙ্গাইল সদর উপজেলার সমস্যা ও সমাধান বিষয়ে তিনি বলেন, টাঙ্গাইল সদর উপজেলার ন্যাচারাল সমস্যাগুলোর মধ্যে একটি বন্যা কবলিত সমস্যা।আমাদের বারোটা ইউনিয়নের মধ্যে চারটি ইউনিয়ন বন্যার সময় অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়।

রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি ভেঙ্গে যায় সেই সময় এই ক্ষয়ক্ষতি কাঁটিয়ে উঠতে আমাদের অনেক বেশি কষ্ট হয়। তবে আমরা সমন্বয় সাধন করে কাজ চালিয়ে যাই।

সদর উপজেলায় আসার পর আমি যে কাজগুলোতে বেশি গুরুত্ব দিয়েছি তার মধ্যে বর্তমানে সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন একটি।আমরা সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করার পর কর্তব্য হিসেবে কিছু কাজ চালু করেছি।

যেমন অফিসের পিছনে যে সকল মৎষ চাষীরা রয়েছে তাদের একটা সংগঠন থাকে তাদের সাথে আমার মতবিনিময় করি।

তারা যেন পুকুর পারে বসে আমাদের সেবা পেতে পারে তা আমরা ব্যবস্থা করেছি। অনলাইন গনশুনানী করি ইউনিয়নগুলোর সঙ্গে।

যেখানে সাধারণ মানুষ তার সমস্যার কথা বলতে পারে যাতে করে তার সমস্যার কথা ইউনিয়নে বসে বলতে পারে সে ব্যবস্থা করেছি। টেলিমেডিসিন কার্যক্রম করেছি।টাঙ্গাইলে বারোটি উপজেলার মধ্যে সর্বপ্রথম এটি আমি চালু করেছি। সকল ধরনের সেবা যাতে পেতে পারে সেই ব্যবস্থা করেছি।

তাদের কষ্ট করে সদর হাসাপাতালে আসতে না হয় তাদের কথা বিবেচনা করে এটা করেছি। যে গুলো আমার সাধ্যের মধ্যে রয়েছে সেই সেবা গুলো প্রেরণ করি।এছাড়াও আমি পাঁচ থেকে ছয়টি ডিজিটাল কার্যক্রম চালু করেছি।

নির্বাহী অফিসারের বাসভবন যেটা বাংলাদেশে সকল স্থানে রয়েছে যেটি এখানে ছিল না এবং ৩৫ বছরেও করা হয়নি সেটি আমি এসেই সরকারি সহযোগীতায় করেছি।

জেলা প্রশাসক, এমপিসহ সকলে মিলে এটা উদ্ধোধন করি। আমি মনে করি এটা বড় একটি কর্মযোগ্য কাজ। আগেই হওয়া উচিত ছিল। এবং উপজেলা চত্বরে সুন্দর একটি শহীদ মিনার করেছি।

তিনি তার শিক্ষাজীবন নিয়ে বলতে গিয়ে বলেন, আমি স্কুল, কলেজ থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম হয়েছি। মেধা তালিকায় আমার স্থান ছিল বোর্ডে। তখন মেধা তালিকা হতো।

শিক্ষা জীবনের ধারাবাহিক সাফল্যেই ২৭তম বিসিএস এ প্রশাসন ক্যাডারে উত্তীর্ণ হয়ে সহকারী কমিশনার পদে মৌলভীবাজারে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আজ থেকে ১০ বছর পূর্বে যোগদান করি।

কর্ম জীবনের শুরু থেকেই দৃঢ়তা, সততা আর দক্ষতা দিয়েই পেশাজীবনে এগিয়ে চলার চেষ্টা করি।গত ২০১৬ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি টাঙ্গাইল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)র দায়িত্ব পাই।

তার এই দায়িত্ব গ্রহণের পরই সদর উপজেলাবাসী পেয়েছেন জেলার প্রথম পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল নাগরিক সেবা পদ্ধতি।টাঙ্গাইল সদর উপজেলার অন্যতম সমস্যাগুলোর মধ্যে মাদক সংক্রান্ত সমস্যা অন্যতম।

সদর উপজেলাকে মাদক মুক্ত করার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি ও আমরা নিয়মিত মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে থাকি।বাল্যবিবাহ দূরীকরণে যথাযথ ব্যবস্হা নেয়া হচ্ছে। এছাড়া বয়স্ক ভাতা ও বিধবা ভাতা পেতে যাতে কারো কোন সমস্যা না হয় ও দ্রুততম সময়ে পেতে পারে সেব্যবস্হাও গ্রহণ করা হয়েছে।