চামড়ার ন্যায্যমূল্যের দাবিতে জাতীয় ভোক্তা অধিকার রক্ষা আন্দোলনের মানববন্ধন

চামড়ার ন্যায্যমূল্যের দাবিতে জাতীয় ভোক্তা অধিকার রক্ষা আন্দোলনের মানববন্ধন
চামড়ার ন্যায্যমূল্যের দাবিতে জাতীয় ভোক্তা অধিকার রক্ষা আন্দোলনের মানববন্ধন

কোরবানির পশুর চামড়ার ন্যায্য মূল্য না পাওয়া এবং দেশের চামড়া শিল্পের ধ্বংসের পেছনে সিন্ডিকেট ও বিদেশি চক্রান্তের অভিযোগ তুলেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার রক্ষা আন্দোলন।  বৃহস্পতিবার (১২ জুন) বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণে আয়োজিত এক মানববন্ধন ও সমাবেশ থেকে বক্তারা এই দাবি জানান।

তারা বলেন, দেশের সোনালী আঁশ খ্যাত পাট শিল্পের ধ্বংসের পর অপার সম্ভাবনাময় চামড়া শিল্পকেও একই কায়দায় শেষ করার চেষ্টা চলছে।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার রক্ষা আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আতা উল্লাহ খান তার বক্তব্যে বলেন, পতিত ফ্যাসিস্ট আমলের পুরনো চক্র ও সিন্ডিকেট আরও বেশি সক্রিয় হয়ে উঠেছে। চামড়া সিন্ডিকেট কৌশলে দরপতন ঘটিয়ে এবারের কোরবানির চামড়ার বাজার ধ্বংস করছে। এতে করে গরিব ও অসহায় মানুষ আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, গত বছরের মতো এবারও সব ধরনের চামড়া কম দামে বিক্রি করতে হয়েছে।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার রক্ষা আন্দোলনের আহ্বায়ক সাবেক সহকারী কর কমিশনার মীর্জা শরিফুল আলমের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান আলোচক ছিলেন গবেষক ও কলামিস্ট লায়ান মীর আবদুল আলীম। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন রাজনীতিবিদ লায়ান নুরুজ্জামান হীরা, রাজনীতিবিদ আব্দুল্লাহ আল মামুন, মিজানুর রহমান মিজু, মোস্তাক আহমেদ ভাসানী প্রমুখ।

বক্তারা অভিযোগ করেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়ার দাম ৬০ থেকে ৬৫ টাকা নির্ধারণ করে দিলেও, বাস্তবে চামড়া ৫৫ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে এর দাম আরও কম ছিল। কোরবানিদাতাদের কাছ থেকে মৌসুমী ব্যবসায়ী ও ফড়িয়ারা সর্বোচ্চ ৪০০ থেকে ৬৫০ টাকায় গরুর চামড়া কিনেছে এবং ট্যানারি মালিকদের কাছে ৫০০ থেকে ৮০০ টাকায় বিক্রি করেছে।

বক্তারা বলেন, সিন্ডিকেটের কারণে চামড়ার দাম নিয়ে ‘অন্তরালের খেলা’ চলছে, যা বন্ধ করা জরুরি। বিপুলসংখ্যক পশু জবাই হলেও মৌসুমী ব্যবসায়ী ও ফড়িয়ারা ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হয়েছেন এবং প্রতি বছরের মতো এবারও বেশিরভাগ ছাগলের চামড়া নষ্ট হয়েছে বলেও তারা জানান।

বক্তারা আরও বলেন, বাংলাদেশের পাট শিল্পকে কৌশলে শেষ করে দেওয়ার পর চামড়া শিল্পকে শেষ করে দেওয়ার এই চক্রান্তকে তারা বিদেশি চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছেন। তাদের মতে, বিদেশি চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্রে পা দিয়ে অসাধু ট্যানারি মালিকদের ফ্যাসিস্ট সিন্ডিকেট কৌশলে চামড়ার দাম কমিয়ে লাভবান হচ্ছে, যা দেশের চামড়াশিল্পকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।

তারা উল্লেখ করেন যে, দেশে ও বিশ্ববাজারে চামড়াজাত পণ্যের দাম আকাশচুম্বী হওয়া সত্ত্বেও কোরবানির চামড়া শিল্প নিয়ে সুগভীর চক্রান্ত চলছে। এই অবস্থা থেকে উত্তরণে বিদেশি বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টির পাশাপাশি প্রতিযোগিতার সক্ষমতা বাড়ানোর উপর জোর দেন তারা। বক্তারা ১৬ বছরের ফ্যাসিস্টের দোসর অপরাধী সিন্ডিকেটকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।