উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত: অলৌকিকভাবে বেঁচে গেলেন এক যাত্রী

ভারতের গুজরাটের আহমেদাবাদে এয়ার ইন্ডিয়ার উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় এক যুবক অলৌকিকভাবে বেঁচে গেছেন। তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।

এর আগে ওই উড়োজাহাজের ২৪২ আরোহীর সবাই প্রাণ হারিয়েছেন বলে জানিয়েছিলেন ভারতের বেসামরিক বিমান পরিবহনমন্ত্রী কে রামমোহন নায়ডু।
আহমেদাবাদ পুলিশের কমিশনার জিএস মালিক বার্তা সংস্থা এএনআইকে জানান, পুলিশ উড়োজাহাজের ১১এ আসনের এক যাত্রীকে জীবিত পেয়েছে। ওই যাত্রীর নাম বিশ্বকুমার রমেশ। তিনি ব্রিটিশ নাগরিক। তাকে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। সব মিলিয়ে কতজনের মৃত্যু হয়েছে, তা এখনই বলা সম্ভব নয়। যেহেতু লোকালয়ে উড়োজাহাজ ভেঙে পড়েছে, তাই মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে।

বৃহস্পতিবার (১২ জুন) দুপুরে আহমেদাবাদের মেঘানিনগর এলাকায় সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে লন্ডনের গ্যাটউইক বিমানবন্দরের উদ্দেশে উড্ডয়নের কিছুক্ষণ পরই বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার মডেলের উড়োজাহাজটি বিধ্বস্ত হয়।

এতে ২৩২ জন যাত্রী এবং ১০ জন ক্রু ছিলেন। যাত্রীদের মধ্যে ছিলেন ১৬৯ জন ভারতীয়, ৫৩ জন ব্রিটিশ, একজন কানাডীয় এবং সাতজন পর্তুগিজ নাগরিক।

সংবাদমাধ্যম জানায়, উড়োজাহাজটি বিধ্বস্ত হয়ে একটি মেডিকেল কলেজের হোস্টেলের ওপর গিয়ে পড়ে। এতে ওই কলেজের পাঁচ শিক্ষার্থী নিহত হন। সেসময় হোস্টেলে খাবারা খাচ্ছিলেন শিক্ষার্থীরা।

দুর্ঘটনাস্থলের দৃশ্যে দেখা যায়, উড়োজাহাজের ধ্বংসাবশেষ হোস্টেলের ডাইনিং হলের দেয়াল ভেদ করে ঢুকে পড়ে। কিছু প্লেটের ওপর তখনও খাবার দেখা যাচ্ছিল।

একটি ভিডিওতে দেখা যায়, উড়োজাহাজটি অস্বাভাবিকভাবে নিচুতে উড়ছিল এবং উঁচুতে উঠতে হিমশিম খাচ্ছিল। এরপর স্থানীয় সময় দুপুর ১টা ৩৮ মিনিটে এটি মাটিতে আছড়ে পড়ে বিকট বিস্ফোরণে আগুনে পুড়ে যায়। যেহেতু উড়োজাহাজটি লন্ডনের দীর্ঘ রুটে যাচ্ছিল, তাই এতে বিপুল পরিমাণে জ্বালানি ছিল।

উড্ডয়নের কিছুক্ষণ পরই পাইলট ‘মে-ডে’ সিগন্যাল বা জরুরি সংকেত পাঠান নিয়ন্ত্রণ কক্ষে। এরপর নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও আর কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। এনডিটিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বিমান নিরাপত্তা বিশ্লেষক সঞ্জয় লাজার জানান, বিমানটি স্পষ্টতই উচ্চতা অর্জন করতে পারছিল না।

বেশ কয়েকটি ভিডিওতে আহতদের অ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া দৃশ্যও ধরা পড়েছে। অন্তত দুই ডজন অ্যাম্বুলেন্স ঘটনাস্থলে রয়েছে। পুলিশ দুর্ঘটনাস্থলের আশপাশের সড়কে যান চলাচল সীমিত করেছে।

বেসামরিক বিমান পরিবহনমন্ত্রী রাম মোহন নাইডু কিঞ্জারাপু এক্স হ্যান্ডলে দেওয়া পোস্টে জানান, তিনি নিজে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন এবং সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে দ্রুত ও সমন্বিত পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

বেসামরিক বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রক সংস্থা ডিরেক্টরেট জেনারেল অব সিভিল অ্যাভিয়েশন এক বিবৃতিতে জানায়, দুর্ঘটনার ঠিক আগে পাইলট ক্যাপ্টেন সুমিত সাবারওয়াল এবং ফার্স্ট অফিসার ক্লাইভ কুন্দার মে-ডে কল পাঠিয়েছিলেন।