যশোরে সুন্দরী জুলির ফাঁদে পড়ে ৩৫ লাখ টাকা হারালেন শাহিনূর

সুন্দরী নারীর প্রেম,বিয়ের সম্পর্ক ও বিদেশে পাঠানোর প্রলোভন দেখিয়ে দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণা করে আসছেন জুলি বেগম নামের এক নারী। এবার তাঁর প্রতারণার শিকার হয়েছেন যশোরের শাহিনূর মিয়া নামের এক প্রবাসী। ইতালিতে পাঠানোর আশ্বাস দিয়ে জুলি তাঁর কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন প্রায় ৩৫ লাখ টাকা। সর্বশেষ প্রতারণার অভিযোগে শাহিনূর মিয়া যশোর আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছেন। অভিযুক্ত জুলি বেগম যশোর জেলার ঝিকরগাছা উপজেলার বারবাকপুর গ্রামের জাহাঙ্গীর আলীর মেয়ে।

মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, ভুক্তভোগী শাহিনূর মিয়া দীর্ঘদিন মালয়েশিয়ায় ছিলেন এবং দেশে ফিরে বিদেশগামী কর্মী প্রেরণের কাজ করতেন। ২০১৭ সাল থেকে তিনি নিজ বাড়িতে অবস্থান করছিলেন এবং বিভিন্নজনকে বিদেশ পাঠিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। এক সময় ঢাকায় একটি মেডিকেল সেন্টারে পরিচয় হয় জুলি বেগমের সঙ্গে। ওই মেডিকেল সেন্টারে চাকরি করতেন জুলি।

দেখতে আকর্ষণীয়, চটপটে ও সুশ্রী জুলির সঙ্গে দ্রুতই গড়ে ওঠে প্রেমের সম্পর্ক। প্রেমের সূত্র ধরে ২০২৪ সালে বিয়ে করেন তারা। কিন্তু সেখান থেকেই শুরু হয় প্রতারণার মূল কাহিনি। বিয়ের পর জুলি বেগম স্বামী শাহিনূরকে ইতালিতে পাঠানোর আশ্বাস দেন। বিভিন্ন খাতে খরচ দেখিয়ে একাধিক কিস্তিতে প্রায় ৩৫ লাখ টাকা নেন জুলি। শুরুতে কিছু ডকুমেন্ট দেখিয়ে বিশ্বাস অর্জন করলেও দীর্ঘ সময়েও ভিসা বা ফ্লাইটের কোনো ব্যবস্থা হয়নি। বরং হঠাৎ করে জুলি জানান,শাহিনূরকে মালয়েশিয়ায় পাঠানো হবে। এই সময়েই শাহিনূরের কাছে আসতে শুরু করে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। জানা যায়, জুলি বেগম অতীতেও একাধিক ব্যক্তিকে প্রেম বা বিয়ের ফাঁদে ফেলে বিদেশে পাঠানোর নামে টাকা নিয়েছেন।

এসব ঘটনায় অনেকে সর্বস্বান্ত হয়েছেন,কেউ কেউ থানায় অভিযোগও করেছেন। অভিযোগ অনুযায়ী, এভাবে জুলি হাতিয়ে নিয়েছেন প্রায় অর্ধ কোটি টাকারও বেশি। প্রতারণার বিষয়টি জানতে পেরে শাহিনূর টাকা ফেরত চাইলে জুলি তালবাহানা শুরু করেন এবং তাদের বৈবাহিক সম্পর্ক অস্বীকার করতে থাকেন। স্থানীয় পর্যায়ে ঝিকরগাছা প্রেসক্লাব ও থানায় বহুবার মীমাংসার চেষ্টা হয়, কিন্তু কোনো ফল মেলেনি। বাধ্য হয়ে শাহিনূর মিয়া চলতি বছরের ২ মে যশোর আদালতে একটি প্রতারণার মামলা দায়ের করেন। মামলাটি বর্তমানে তদন্তাধীন।

ঝিকরগাছা থানার তদন্ত কর্মকর্তা এএসআই জাকির হোসেন জানান, “অভিযুক্ত জুলিকে একাধিকবার থানায় তলব করা হলেও তিনি আসতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। খুব শিগগিরই আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।”স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জুলি বেগম তার সৌন্দর্য ও চতুর কথাবার্তা দিয়ে সহজেই পুরুষদের ফাঁদে ফেলতে পারদর্শী। তার নামে ইতোমধ্যে আরও কিছু অভিযোগ উঠেছে, যা পুলিশ খতিয়ে দেখছে।