টাইব্রেকারে শেষ স্পেনের বিশ্বকাপ, কোয়ার্টারে রাশিয়া

স্পোর্টস ডেস্ক: শেষ ষোলোতেই শেষ হয়ে গেল স্পেনের বিশ্বকাপ। ২০১০ আসরের চ্যাম্পিয়নদের টাইব্রেকারে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালের টিকিট কেটেছে স্বাগতিক রাশিয়া। মাত্র ১২ মিনিটে আত্মঘাতী গোলে পিছিয়ে পড়েও প্রথমার্ধেই সমতা আনে রাশিয়া। এরপর নির্ধারিত ৯০ মিনিটের খেলা শেষ হয় ১-১ সমতায়। অতিরিক্ত ৩০ মিনিটেও কোনো দল গোল করতে পারেনি। খেলা গড়ায় টাইব্রেকারে। যেখানে রাশিয়ার জয় ৪(১)-৩(১) গোলে।

রোববার মস্কোর লুঝনিকি স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় রাত ৮টায় শুরু হয় ম্যাচটি। স্বাগতিকদের ম্যাচটিকে ঘিরে পুরো রাশিয়াতেই ছিল এদিন উৎসব। আর রাশিয়ান দর্শকদের গর্জনে লুঝনিকি স্টেডিয়াম তো হয়ে উঠেছিল উত্তাল সমুদ্র। যেখানে লড়াই করাটা স্পেনের জন্য শুধু কঠিনই ছিল না। ছিল আরো বড় কিছু। তাছাড়া বিশ্বকাপ বা ইউরোতে স্বাগতিক দেশের বিপক্ষে কখনো জয়ের রেকর্ডও ছিল না তাদের। এদিনও গল্পটা বদালো না। তাই রাশিয়ানরা টিকে থাকলো বিশ্বকাপে। অথচ বিশ্বকাপ শুরুর আগে গ্রুপ পর্ব পেরোতে পারাটাই বড় অর্জন হিসেবে ধরে রেখেছিল রাশিয়া। সেখানে এখন কোয়ার্টার ফাইনালে অর্থাৎ সেরা আটে খেলবে তারা।

এদিন টাইব্রেকারে স্পেনের দু-দুটি শট রুখে দিলেন রাশিয়ান গোলরক্ষক ইগোর আকিনফিভ। পুরো খেলায় গোলবার সামলেছেন দারুণভাবে। এরপর পেনাল্টিতে যা করলেন তাতে রাশিয়ানদের মনে নিশ্চিতভাবেই তার নামটা অম্লান হয়ে থাকবে। অন্যদিকে চিরকাল হতাশার দহনে পুড়ে যাবেন কোকে ও ইয়াগো আসপাস। স্পেনের হয়ে তৃতীয় শটটা নিয়েছিলেন কোকে। যা রুখে দিলেন আকিনফিভ। এরপর আসপাসের পঞ্চম শটটা তো রুখে দিয়ে বনে গেলেন নায়ক।

আসপস নিজে হয়তো কোনোভাবেই ভাবেননি বলটা জালে ঢুকবে না। আকিনফিভ যে দিকে লাফালেন তার অন্যদিক দিয়েই শটটা নিলেন আসপাস। কিন্তু রাশিয়ান গোলরক্ষকের পায়ে লেগে তা প্রতিহত। ওই শটে গোল হলে পরের শটটা রুখে দিয়ে খেলায় টিকে থাকতে পারত স্পেন। তখন হয়তো আসতো সাডেন ডেথ। কিন্তু সেরকম কিছু হলোনা। রাশিয়ানরা পেনাল্টি শটগুলো নিলেন দারুণ। চার চারটি শটেই গোল করলেন। স্প্যানিশ গোলরক্ষক ডেভিড দি গিয়া পারলেন না একটিও রুখতে।

এরআগে নির্ধারিত ৯০ মিনিট ও অতিরিক্ত আরো ৩০ মিনিটে স্প্যানিশরা যে জয় তুলে নিতে পারলো না তার জন্য ভাগ্যকেও দায়ি করতে পারে তারা। রাশিয়ান প্রতিরোধ প্রশংসা তো পাবেই। কিন্তু টিকিটাকা ফুটবলের জাল ছড়িয়ে বারবার আক্রমণ করেও গোল আদায় করে নিতে পারেনি স্পেন। ১২ মিনিটে আত্মঘাতী গোলে এগিয়ে যাওয়া স্পেনের। এরপর প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার আগেই রাশিয়া তা পরিশোধ করে দেয়। ৪১ মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোলটি করেন আর্টেম জুবা।

কিন্তু পরবর্তিতে রাশিয়ার রক্ষণে একের পর এক আক্রমণ করে গেছে স্পেন। ৭৯ শতাংশ বল নিজেদের দখলে রেখেছে তারা। অবিশ্বাস্য যে পুরো ম্যাচে যেখানে রাশিয়া ২৯০ বার নিজেদের মধ্যে বল দেওয়া নেওয়া করেছে, সেখানে স্প্যানিশরা করেছে ১১১৪ বার। গোলমুখো অন টার্গেট শট নিয়েছে ৯বার। কিন্তু এই পরিসংখ্যান আজীবন মিথ্যেই থেকে যাবে টাইব্রেকার নামক ভাগ্যের কাছে। অথবা অন্যভাবে বললে একজন ইগোর আকিনফিভের কাছে।