বলিউডের আলোচিত- সমালোচিত অভিনেতা সঞ্জয় দত্তের জীবন নিয়ে নির্মিত ‘সাঞ্জু’ ছবিটি এখন আলোচিত। সঞ্জয়ের কাহিনী নিয়ে গত ২৯ জুন মুক্তি পাওয়া ছবিটি এরই মধ্যে ২০০ কোটি রুপি আয় করেছে। এমন খবর প্রকাশ করেছে টাইমস অব ইন্ডিয়া। বক্স অফিস এখন ‘সাঞ্জু’র দখলে।
‘থ্রি ইডিয়টস’ ও ‘মুন্না ভাই এমবিএসএস’ খ্যাত পরিচালক রাজকুমার হিরানি পরিচালনা করেছেন ছবিটি। সঞ্জয়ের ‘সাঞ্জু’ চরিত্রে অভিনয় করেছেন রণবীর কাপুর। এ ছাড়া পরেশ রাওয়াল, আনুশকা শর্মা, সোনম কাপুর, মণীষা কৈরালা ও দিয়া মির্জা এই ছবির বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন।
সম্প্রতি এনডিটিভির খবরে জানা যায়, রণবীরকে কীভাবে ‘সাঞ্জু’ চরিত্রের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছিল। বিষয়টি নিয়ে ‘ফক্স স্টার হিন্দি’ ইউটিউব চ্যানেল একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে। ভিডিওতে রাজকুমার হিরানি ও রণবীর জানিয়েছেন সাঞ্জু চরিত্রটির জন্য কী করেছিলেন তাঁরা।
সাঞ্জুর পরিচালক ও প্রযোজক সঞ্জয়ের চরিত্রের জন্য এমন কাউকে খুঁজছিলেন যেন তাঁকে দেখতে সঞ্জয় দত্তের মতোই লাগে। তবে পরিচালক রাজকুমার হিরানির জন্য এটা অনেক কঠিন ছিল।
প্রযোজক বিধু বিনোদ চোপড়া বলেন, ‘সাঞ্জু চরিত্রের জন্য কে অভিনয় করবেন?’
রাজকুমার হিরানি ২০১৬ সালে জানুয়ারিতে রণবীরকে মেসেজ দেন এবং বলেন, ‘ আমি তোমার সঙ্গে কথা বলতে চাই এবং তোমার জন্য সুখবরও আছে।’
রণবীর মেসেজ দেখে উত্তরে বলেছিলেন, ‘আশা করি, এটা সঞ্জয় দত্তের জীবনী না।’
রণবীর আরো বলেন, ‘যদি সঞ্জয় দত্তের মতো আমার লুক না আসে তাহলে এই ছবি করা সম্ভব নয়।’
পরে অবশ্য সাঞ্জুর চরিত্রটির রণবীর করতে রাজি হয়ে যান এবং চরিত্রটিকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে গ্রহণ করেন।
এরপর শুরু হয় রণবীরকে সাঞ্জু চরিত্রের জন্য তৈরি করার চ্যালেঞ্জ। প্রথমেই রাজকুমার হিরানির জন্য চ্যালেঞ্জ ছিল, সঞ্জয়ের শারীরিক গঠনের মতো রণবীরকে তৈরি করা। রণবীর বলেন, ‘আমি ১৩ থেকে ১৪টা ছবি করেছি এবং এটাই আমার সুযোগ ছিল যে আমার শরীর নিয়ে কিছু করা।’
জিমে অনেক পরিশ্রম করে সঞ্জয়ের মতো শরীর বানাতে সক্ষম হন রণবীর। পরিচালক পাঁচ-ছয়টি লুক চেয়েছিল রণবীরের, যাতে একটা ২০ বছরের যুবক, আরেকটি ৫৫ বছরের বৃদ্ধের মতো দেখায় তাঁকে। কারণ সঞ্জয়ের মতো বয়সীর এমন লুক আনা অনেক কঠিন ছিল। তারপর বিদেশি মেকাপ আর্টিস্ট দিয়ে রণবীরের লুক পরিবর্তন করা হয় কয়েকবার।
প্রায় ছয় ঘণ্টা চেয়ারে বসে মেকাপ নিতে হয়েছিল রণবীরকে। এভাবে ঘণ্টার পর ঘণ্টা মেকাপ আর্টিস্টদের চেষ্টায় রণবীরের কয়েকটা লুক পরিবর্তন করা হয়। কিন্তু শেষে পরিচালক সেসব লুক দেখে তা বাতিল করে দেন। পরিচালক চেয়েছিলেন অবিকল সঞ্জয়ের মতো দেখতে রণবীরকে তৈরি করতে।
অবশেষে, আবারও মেকাপ আর্টিস্টদের চেষ্টায় রণবীরের লুক সঞ্জয়ের মতো দেখতে তৈরি করা হয় এবং পরিচালক তখন দেখে বলেছেন, ‘এবার দেখতে একেবারেই সাঞ্জুর মতো লাগছে।’
তখনই রাজকুমার হিরানির আত্মবিশ্বাস বেড়ে যায় এবং বলেন, ‘এবার সাঞ্জু ছবিটি তৈরি করা যাবে।’
এভাবেই রুপালি পর্দায় সাঞ্জু হয়ে উঠেন রণবীর কাপুর।