জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বলেছেন, ‘কখন যে কী বলি আমি তার ঠিক নেই’। এ সময় তিনি হাসতে থাকেন আর বলেন, ‘মানুষের দুঃখ সহ্য করতে পারি না আমি। এর জন্য হয়তো বলি।’
শনিবার রাজধানীর কাকরাইলে ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স মিলনায়তনে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের সঙ্গে জাতীয় পার্টির নির্বাচনী সমঝোতা উপলক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে নানা বিষয়ে কথার মধ্যে এরশাদ ‘কখন যে কী বলি আমি তার ঠিক নেই’- উল্লেখ করে হাসতে থাকেন। পরে হাসিমুখেই তিনি বলেন, ‘মানুষের দুঃখ সহ্য করতে পারি না আমি। এর জন্য হয়তো বলি।’
অবশ্য এরশাদের এ দৈত অবস্থানের ইঙ্গিত এই সংবাদ সম্মেলনেও পাওয়া যায়। তিনি একবার বলেন, তিনশ আসনে প্রার্থী দেবেন। আবার বলেন, বিএনপি নির্বাচনে এলে জাতীয় পার্টি এক ধরনের কৌশল নেবে। আর না এলে ৩০০ আসনেই মনোনয়ন দেয়ার প্রস্তুতি আছে জাতীয় পার্টির। আমরা ঐক্যবদ্ধ হচ্ছি, আমাদের সংঘবদ্ধ প্রচেষ্টায় ইসলাম ঘুরে দাঁড়াবে। আমাদের উদ্দেশ্য ইসলামকে প্রতিষ্ঠিত করা।
প্রশ্নোত্তর পর্বের আগে জাপা চেয়ারম্যান বলেন, ‘দেশে সুশাসনের অভাব, মানুষ মুক্তি চায়, পরিবর্তন চায়। দেশের মানুষ একটি শক্তিশালী রাজনৈতিক দল চায়, তারা পরিবর্তন চায়। সেই পরিবর্তন আসবে নির্বাচনের মাধ্যমে। সে পরিবর্তনের লক্ষ্যে ইসলামের চেয়ে বড় শক্তি আর নাই। আর নির্বাচনের করে ক্ষমতায় গিয়ে আমরা সেটা প্রমাণ করব।’
খেলাফত মজলিস নির্বাচনে কী প্রতীকে লড়বে এমন প্রশ্নের জবাবে এরশাদ বলেন, ‘সেটা পরে আলোচনা হবে। আমরা রিকশা প্রতীকে লড়ব, না তারা লাঙ্গল প্রতীকে লড়বে।’
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগে মহাজোট ছেড়ে দেন এরশাদ। ওই নির্বাচনের আগে এরশাদ ভোট বর্জনের ঘোষণা দিলেও তার স্ত্রী রওশন এরশাদের নেতৃত্বে জাতীয় পার্টির অন্য অংশ নির্বাচনে যায়। একপ্রকার ‘অনিচ্ছায়’ রংপুর সদর আসন থেকে এরশাদ সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। কারণ ভোট বর্জনের ঘোষণা দেয়ার পর তিনটি আসনেই মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের আবেদন করেছিলেন তিনি, তবে ঢাকা-১৭ ছাড়া অন্য দুই আসনে তার প্রার্থিতা রয়ে যায় সময় মতো প্রত্যাহার না হওয়ায়। মজার ব্যাপার হলো, ভোটের পর এরশাদ শপথ নেবেন না জানালেও পরে তিনি শপথ নেন আর প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূতের দায়িত্বও তিনি পান। যা তিনি এখনো পালন করছেন। আবার নানা সময় এরশাদ তার নিজ দলের মন্ত্রীদের পদত্যাগের কথা জানিয়েছেন, কিন্তু বাস্তবে সেটা হয়নি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী, সুনীল শুভ রায়, এসএম ফয়সল চিশতী, মেজর মো. খালেদ আখতার (অব.), শফিকুল ইসলাম সেন্টু, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, অ্যাডভোকেট ড. নুরুল আজহার, ভাইস চেয়ারম্যান মো. আরিফুর রহমান খান, নুরুল ইসলাম নুরু, আলমগীর শিকদার লোটন, সরদার শাহজাহান, যুগ্ম মহাসচিব গোলাম মোহাম্মদ রাজু, জাহাঙ্গীর হোসেন মানিক, শেখ আলমগীর হোসেন, আশরাফ সিদ্দিকী, জহিরুল আলম রুবেল, বিএনএ’র যুগ্ম-মহাসচিব শেখ মোস্তাফিজুর রহমান প্রমুখ।