নিরাপদ সড়কের দাবীতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পর টনক নড়েছে সব পরিবহন মালিকদের। সেই সুবাদে তারা গাড়ির রেজিষ্ট্রেশন, ড্রাইভিং লাইসেন্স, রুট পারমিট নিতে ঝিনাইদহ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) তে ভীড় করছেন। তবে তারা কাংক্ষিত সেবা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে। পদে পদে হয়রানী ও জনদুর্ভোগে মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। বিআরটিএ অফিস পরিবহন মালিকদের জনদুর্ভোগ লাঘবে সকাল ৯ টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকলেও ব্যাংক খোলা রাখা হচ্ছে সকাল থেকে বেলা দুইটা পর্যন্ত। ফলে টাকা জমা দিতে না পেরে বেশির ভাগ মানুষ ফিরে যাচ্ছেন।
অন্যদিকে ঝিনাইদহ বিআরটিতে রয়েছে লোকবল সংকট। নানাবিধ কারণে পরিবহন মালিকরা হয়রানীর শিকার হচ্ছেন।
সাইফুল ইসলাম একজন সরকারী কর্মকর্তা। তিনি শিক্ষানবিশ ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে আসেন। এসে দেখেন ব্যাংকে উপচে পড়া ভীড়। ভোর সকাল থেকে মানুষের ধীর্ঘ লাইন। দুইটার পর আর তার আর টাকা জমা নেন নি।
শেখ মুজিবর রহমান রিপন থাকেন ঢাকায়। তিনি এসেছিলেন তার হারানো ড্রাইভিং লাইসেন্স তুলতে। ঝিনাইদহ ডিসি অফিসে স্থাপিত এনআরবিসি ব্যাংকের কালেকশন বুথে টাকা জমা দিতে না পেরে তিনি একই ব্যাংকের হাটগোপালপুর শাখায় যান টাকা জমা দিতে। রাত জেগে ঢাকা থেকে এসে সন্ধ্যার দিকে পান তার কাগজ। ততক্ষনে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন।
আজাদ রহমান হরিণাকুন্ডু থেকে এসেছিলেন শিক্ষানবিশ ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে। তিনিও টাকা জমা দিতে না পেরে হয়রানীর শিকার হন। টাকা জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে একাধিক ব্যাংকের সাথে বিআরটিএ’র চুক্তি না থাকায় মানুষ হয়রানীর শিকার হচ্ছেন বলে বিআরটিএ কর্মকর্তারা জানান।
তবে এ সমস্যা আচিরেই কেটে যাবে বলে জানান ঝিনাইদহ বিআরটিএর সহকারী পরিচালক বিলাস সরকার। তিনি জানান, তার অফিসে কোন হয়রানীর সুযোগ নেই। হয়তো টাকা জমা দিতে না পারায় ২/১ দিন দেরি হচ্ছে। লোকবল কম হওয়া সত্বেও গ্রাহকরা আসার সাথে সাথেই কাজ করে দেওয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, টাকা জমা দেওয়ার এই সমস্যা স্থানীয় ভাবে নিরসনের কোন পথ থাকলে সেটা অবশ্যই আমরা করতাম। আমরা হেড অফিসকে সমস্যা নিরসনের জন্য বলেছি। গ্রাহকদের অভিযোগ গাড়ির রেজিষ্ট্রেশন, ড্রাইভিং লাইসেন্স, রুট পারমিট করতে দালালরা অতিরিক্ত টাকা চেয়ে বসছে। তারা সরাসরি অফিসারের সাথে কথা বলতে পারছেন না।
শিমুল নামে এক ট্রাক মালিক জানান, তার রুট পারমিট করতে দুই হাজার টাকা অতিরিক্ত দাবী করা হয়। এ ভাবে বহু মানুষের নানাবিধ অভিযোগের স্তুপ জমা পড়ছে প্রতিদিন। কিন্তু কোন প্রতিকার মিলছে না। গ্রাহকরা যাতে একাধিক ব্যাংকে টাকা জমা দিতে পারেন সেই দাবী করেছেন।