যশোরের চৌগাছায় লাইলাতুল জান্নাত (৩০) নামে দুই সন্তানের জননী বিষপানে আত্মহত্যা করেছে। তিনি উপজেলার স্বরুপদাহ ইউনিয়নের তিলকপুর গ্রামের এনামুল কবির ইসমাইলের স্ত্রী এবং নড়াইল জেলার মহেশখোলা গ্রামের অ্যাডভোকেট তাইয়েব আলীর মেয়ে।
বৃহস্পতিবার ইফতারের পর তিনি ঘরের দরজা বন্ধ করে বিষ (ঘাস মারার কীটনাশক) পান করেন। রাতেই তাকে চৌগাছা হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়। অবস্থা খারাপ হলে তাকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। শুক্রবার পর্যন্ত সেখানে তার অবস্থার কোন উন্নতি না হওয়ায় শুক্রবার ওই রাতে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। শুক্রবার রাতে ঢাকা নেওয়ার পথে তিনি মারা যান।
এদিকে জান্নাতের বাবা অ্যাডভোকেট তাইয়েব আলী তার মেয়ের হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন চৌগাছা থানায়। তিনি বলেন, পরিকল্পিত হত্যা।
পুলিশ শনিবার সকালে জান্নাতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য যশোর মর্গে পাঠিয়েছে।
চৌগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা( ওসি) রিফাত খান রাজিব বলেন, পোস্টমর্টেম রিপোর্ট এলে বলা যাবে কীভাবে ওই নারীর মৃত্যু হয়েছে।
পাবিরবারিক সুত্রে জানা যায়, প্রায় ১৫ বছর আগে জান্নাতের বিয়ে হয়। কিন্তু শুরু থেকেই তাদের দাম্পত্য জীবনে কলহ-কোন্দল লেগেই থাকতো। বড় ছেলে ইমরান হোসেন ইশরাকের জন্মের পর জান্নাত পারিবারিক কোন্দলের কারণে বেশ কয়েক বছর নড়াইল গিয়ে ছিলেন। সে সময় জান্নাতের বাবা জামাই ইসমাইলের নামে ২-৩টি মামলা করেন। ৩-৪ বছর মামলা চলার পর সমঝোতার মাধ্যমে আবার তারা ঘরসংসার শুরু করেন। দুইমাস আগে তাদের আরো একটি ছেলের জন্ম হয়।
ইসমাইল হোসেন বলছেন, ‘বৃহস্পতিবার ইফতারের পর আমি তিলকপুর বাজারে যাই। এ সময় আমার স্ত্রী আমার বড় ছেলে সপ্তম শ্রেণির ছাত্র ইশরাকের কোলে ছোট ছেলে ইশানকে (দুই মাস) দিয়ে তার ঘরের দরজা বন্ধ করে কীটনাশক খায়। আমার ছেলের কান্নাকাটি ও চেচামেচিতে আমার মা-বাবা ছুটে এসে ঘরের দরজার সিটকিনি ভেঙে তাকে উদ্ধার করে। আমিও সংবাদ পেয়ে বাড়ি এসে তাকে চৌগাছা হাসপাতালে নিয়ে যাই।’
পারিবারিক কোন্দলের কথা জানতে চাইলে ইসমাইল দাবি করেন, ওই দিন কোনো গোলমাল হয়নি।