করোনা টিকা কেনাকাটায় দুর্নীতি এবং ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ-টিআইবির অর্থায়নে অস্ট্রেলিয়ান কোম্পানি বিএইচপির নাম জড়িয়ে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব আহমদ কায়কাউসের যে বক্তব্য গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে, তা সঠিক নয়। বরং বিভ্রান্তিকর এবং ভুল তথ্য ও ধারণা-ভিত্তিক বলে ব্যাখ্যা দিয়েছে সংস্থাটি।
টিআইবির পরিচালক (আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন) শেখ মনজুর-ই-আলম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি তে রোববার (১৭ এপ্রিল) এ ব্যাখ্যা দেয়া হয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আহমদ কায়কাউস তার বক্তব্যে, টিআইবিকে উদ্ধৃত করে কোভিড-১৯ টিকা কেনায় গড়ে ৬৯ টাকা ঘুষ দেয়ার যে বিষয় অবতারণা করেছেন, সেটি পুরোপুরি বিভ্রান্তিকর।
কেননা ১২ এপ্রিল টিআইবি প্রকাশিত ‘করোনা ভাইরাস সংকট মোকাবিলায় সুশাসন: অন্তর্ভুক্তি ও স্বচ্ছতার চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনে ৬৯ টাকা ঘুষ দেবার বিষয়টি এসেছে টিকা গ্রহণের ক্ষেত্রে গ্রহীতাদের বুথ ফেরত জরিপের ফলাফলে। যা কোনোভাবেই টিকা কেনাকাটার সাথে যুক্ত নয়।
এতে আরও বলা হয়, গবেষণার অংশ হিসেবে ৩ হাজার ৩৯৩ জন টিকাগ্রহীতার দৈবচয়নের ভিত্তিতে ‘এক্সিট-পোল’ সাক্ষাৎকার গ্রহণ করা হয়। এরমধ্যে ২ শতাংশ টিকাগ্রহীতা অনিয়ম-দুর্নীতির শিকার হন,
যার মধ্যে সময়ক্ষেপণ, টিকাকেন্দ্রে রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের ও সরকারি কর্মকর্তাদের সুবিধা দেওয়া, দুর্ব্যবহার এবং কিছু কেন্দ্রে টিকা থাকা সত্ত্বেও টিকাগ্রহীতাদের ফিরিয়ে দেওয়া অন্যতম।
এদের মধ্যে আবার অতিরিক্ত ভিড় এড়িয়ে দ্রুত টিকা পেতে ১০ দশমিক ১ শতাংশ সেবাগ্রহীতাকে গড়ে ৬৯ টাকা ঘুষ হিসেবে দিতে হয়েছে বলে জরিপে উঠে এসেছে। এটি কোনোভাবেই টিকা কেনায় কথিত ঘুষ দেয়ার সাথে সম্পর্কিত নয়।
বিজ্ঞপ্তিতে টিআইবি আরও বলেছে, মুখ্যসচিব মহোদয় টিআইবির অর্থায়ন নিয়েও ভুল তথ্য বা ধারণার ভিত্তিতে অস্ট্রেলিয়ান মাইনিং কোম্পানি বিএইচপির নাম জড়িয়ে ফেলেছেন।
টিআইবি কখনোই বিএইচপির কাছ থেকে কোনো ধরনের তহবিল গ্রহণ করেনি এবং করার প্রশ্নও আসেনি। বিএইচপির সঙ্গে টিআইবির কখনো কোনোভাবেই পরিচিতি বা যোগাযোগও হয়নি।
টিআইবিকে মূলত অর্থায়ন করে আসছে ব্রিটিশ ফরেইন, কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফিস, সুইডিশ ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট কোঅপারেশন এজেন্সি (সিডা) এবং সুইস এজেন্সি ফর ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড কোঅপারেশন। এ সংক্রান্ত সকল তথ্য টিআইবির ওয়েবসাইটে উন্মুক্ত রয়েছে।
টিআইবির অর্থায়ন ও উল্লিখিত গবেষণা প্রতিবেদন বিষয়ে কোনো ধরনের ভুল বোঝাবুঝি এড়াতে টিআইবি গবেষণা ও অর্থায়ন বিষয়ে সকল প্রকার তথ্য বিনিময় ও অধিপরামর্শ কার্যক্রমে আগ্রহী বলে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।