নিখোঁজ হওয়া স্কুল ছাত্রীর সন্ধান মেলেনি গত পাঁচ দিনেও

গতপাঁচ দিন গত হলেও যশোরের মণিরামপুর থেকে নিখোঁজ হওয়া স্কুল ছাত্রীর সন্ধান মেলেনি। সে কোথায় কেমন আছে তা জানতে এবং তাকে ফিরে পেতে ব্যাকুল হয়ে পড়েছে তাঁর পরিবারের সদস্যরা। এব্যাপারে থানায় মামলা করতে গেলে তা গ্রহণ করা হয়নি বলে অভিযো উঠেছে।

উপজেলার শ্যামনগর গ্রামের অসিত কুমার দাসের একমাত্র মেয়ে অথৈ মণিরামপুর সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণির ছাত্রী। অসিত কুমার দাস দুর্বাডাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষাকতা করেন। বর্তমানে গুতর অসুস্থ।

২৩ জানুয়ারি সকালে বাড়ি থেকে স্কুলে যাবার কথা বলে বের হয়ে আর ফিরে আসেনি অথৈ। পরিবারের দাবি তাকে অপহরণ বা ফুসলিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এই ঘটনার সাথে মনোহরপুরের বখাটে যুবক সান কুমার তারক ও তার পরিবারের সদস্যরা জড়িত। ঘটনার দিন তাদের( অথৈও তারক)কেশবপুরে দেখা গেছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে। এছাড়া ওইদিনের পর থেকে তারক দাসের ব্যবহার করা সবগুলো মোবাইল বন্ধ রয়েছে। এব্যাপারে ওই দিন থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন অসিত কুমার দাস। অভিযোগটি তদন্ত করছেন মণিরামপুর থানার এস আই আব্দুল মান্নান।

অসিত কুমার দাস সাংবাদিকদের জানান ,আমরা ঘটনার দিন থানায় মামলা করতে গেলে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামলা গ্রহণ না করে অভিযোগ দিতে বলেন। অভিযোগ দায়েরের পর থানায় বার বার যোগাযোগ করা হলেও পুলিশ কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না। বরং ”এ কথা সে কথা বলে এড়িয়ে যাচ্ছেন”। তাঁর দাবি অভিযুক্ত তারক দাসের নিকট আত্মীয় পুলিশ অফিসার। তার ভয়ে তদন্ত কর্মকর্তা নিস্ক্রীয় রয়েছেন।

এব্যাপারে তদন্ত কর্মকর্তা এস আই আব্দুল মান্নান বলেন, যথাযথ নিয়মে তদন্ত প্রক্রিয়া অব্যাহত আছে। এখনও স্কুল ছাত্রী অথৈই’র কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি।

অথৈইয়ের কাকা তপন কুমার দাস বলেন, তাঁর দাদা অসিত কুমার দাস ব্রেন টিউমারে আক্রান্ত। ভারতের ভেলোরে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন কয়েক দিন আগে । এঅবস্থায় তাঁর একমাত্র সন্তান আদরের মেয়েকে কাছে না পেয়ে তিনি ভেঙ্গে পড়েছেন। যে কোন সময়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তপন কুমার দাস বলেন, তাঁর দাদার সহায় সম্পত্তি টার্গেট করে অবুজ কিশোরীকে ফুসলিয়ে নিয়ে গেছে তারক গং। দ্রুত তাকে উদ্ধার করা না হলে বড় ধরনের ক্ষতি হতে পারে। উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কোন রকম এএসসি পাশ করা তারকের পিতা হরেকৃষ্ণ মণিরামপুর বাজারে একটি সোনার দোকানে কাজ করেন।

অথৈইয়ের অপর কাকা মদন কুমার দাস বলেন, বিষয়টি আইন শৃংখলা বাহিনীর কর্মকর্তাদের জানানো হলেও কোন সুফল পাওয়া যায়নি। নিরুপায় হয়ে তারা আদালতের শরনাপন্ন হয়েছেন। গত বুধবার যশোর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালে মামলা দায়ের করা হয়। বিজ্ঞ আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে সিআইডির ওপর তদন্তভার ন্যাস্ত করেছেন। কিন্তু গত দু’দিনে মামলার কোন অগ্রগতি না হওয়ায় তিনিও আঙ্গুল তোলেন ওই পুলিশ অফিসারের দিকে। তিনি বলেন,অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদ মর্যাদার ওই অফিসার সান কুমার তারকের আপন চাচাত ভাই। অতিসম্প্রতি তিনি সাতক্ষীরা থেকে বদলি হয়ে পঞ্চগড়ে যোগদান করেছেন। মদন কুমার দাস বলেন, পুলিশের ভাই বলে শিশু নির্যাতন করে পার পেয়ে যাবে তা হতে পারে না। এ ব্যাপারে তিনি পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন।