ঝিনাইদহে অল্প বয়সী তরুণদের সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হওয়ার পাল্লা দিনকে দিন ভারি হচ্ছে। বিশ^বিদ্যালয়, কলেজ এমনকি স্কুলের ছাত্রদের আবদার পুরণ করতে তাদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে নতুন নতুন ব্র্যান্ডের মটরসাইকেল। আর এসব দ্রুতগতির মটরসাইকেলের তীব্র গতির কাছে হেরে যাচ্ছে তরুণ বয়সীরা। অহরহ সড়কে মারা যাচ্ছে স্কুল কলেজের শিক্ষাথীরা। এমন একজন সুদর্শন কলেজ ছাত্র তামিম প্রধান। ঝিনাইদহ সিটি কলেজে অনার্স থার্ড ইয়ারের তামিম প্রধান হলিধানী ইউনিয়ন সেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক পিতা ইউনুস প্রধানের ছেলে। তিনি মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে কোমায় রয়েছেন। পুলিশ সুত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার গভীর রাতে তামিম ও তার বন্ধু মারুফ মটরসাইকেলযোগে বাড়ি ফিরছিলেন। দ্রুতগতির কারণে তাদের মটরসাইকেল নিয়ন্ত্রন হারিয়ে নগরবাথান বাজার নামক স্থানে একটি গাছের সঙ্গে ধাক্কা খায়। এতে গুরুতর আহত হন তামিম ও মারুফ। তামিমকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানে ঠিকমতো চিকিৎসা না পেয়ে শনিবার বিকালে স্কয়ার হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। ক্ষনে ক্ষনে তার মৃত্যুর সংবাদ এলাকায় পৌছালেও এখনো তার দেহে প্রাণ আছে বলে প্রতিবেশি মাহফুজ জানান। অপরদিকে ঝিনাইদহের বিভিণœ সড়কে অল্প বয়সী তরুণদের মটরসাইকেল দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। তাদের না আছে ড্রাইভিং লাইসেন্স, না আছে মটর বাইকের কাগজপত্র। বিকাল হলে এবং কলেজ টাইমে সড়ক মহাসড়ে দ্রুত গতিতে ছুটে চলছে তারা। সম্পতি ঝিনাইদহ জেলার বিভিন্ন সড়কে অন্তত ৭ জন তরুণ নিহত হয়েছেন। হাইওয়ে পুলিশ সুত্রে বলা হয়েছে, গত বুধবার শৈলকুপার বড়দাহ নামক স্থানে রনি নামে এক তরুণ দ্রুত গতিতে চলার সময় নিহত হন। সদর উপজেলার চুটলিয়া মোড়ে সুমন, ভাটই বাজারে মাহিন, কোদালিয়া গ্রামে কলেজ ছাত্র মিজানুরসহ একাধিক যুবক ও কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। এ বিষয়ে আব্দুল ওহাব নামে এক অভিভাবক জানান, কলেজ বা ভার্সিটিতে উঠলেই ছেলেরা বায়না ধরে। গোসল ও খাওয়া বন্ধ করে এমনকি আত্মহত্যারও হুমকী দেয়। তখন বাধ্য হয়ে ছেলের বায়না পুরণ করতে মটরসাইকেল কিনে দিচ্ছে অসহায় পিতারা। ফলে মটরসাইকেলের গতির কাছে জীবন প্রদিপ নিভে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে একজন পিতার স্বপ্নসাধ ধুলিষ্যাৎ হয়ে যাচ্ছে।
এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ হাইওয়ে পুলিশের ওসি মিজানুর রহমান জানান, অনেক সময় আমরা তরুণদের হেলমেট ব্যবহার করার পরামর্শ দিচ্ছি। এছাড়া রাস্তায় মটরসাইকেল নিয়ন্ত্রনে রেখে চালানোর কথাও বলছি। কিন্তু তারা কিছুই মানে না। যে কারণে সড়কে অল্প বয়সী তরুণদের মৃত্যু হচ্ছে।