বাজেটে সর্বজনীন পেনশনের রূপরেখা

abul malডেস্ক রিপোর্ট: কিছু নির্দিষ্ট এলাকায় সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা চালু করতে চায় সরকার। পরীক্ষামূলক উদ্যোগ হিসেবে এমনটা করা হচ্ছে। প্রস্তাবিত বাজেটে এ বিষয়ে একটি রূপরেখা তুলে ধরে গতকাল অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত তার বাজেট বক্তব্যে বলেন, এই ব্যবস্থার আওতায় একজন কর্মজীবী মাসিক ভিত্তিতে নির্দিষ্ট পরিমাণ চাঁদা দেবেন। একইভাবে তার নিয়োগকর্তা ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট কর্মজীবীর জন্য পেনশন আকারে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ জমা করবেন। সরকারও একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ ওই স্কিমে জমা করবে।

তিনি বলেন, এই ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে গঠিত তহবিল বিনিয়োগ থেকে পাওয়া অর্থ সর্বজনীন পেনশন তহবিলে জমা হতে থাকবে। জমানো সেই চাঁদা ও আয়ের পরিমাণের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি অবসর সময়ে মাসিক পেনশন হিসেবে পাবেন। তবে, এই ব্যবস্থার জন্য যে মৌলিক কাঠামোর দরকার, তা সময়সাপেক্ষ।

তিনি বলেন, সরকারি কর্মচারী ও জনগণের মধ্যে সমান সুযোগ দিয়ে প্রয়োজনীয় কর্মপরিকল্পনা, ধারাবাহিক কৌশলগত পরিবর্তন, প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো সৃষ্টি, কারিগরি সক্ষমতা ও যথাযথ নীতি-কৌশল প্রণয়ন করা দরকার। সার্বিক বিষয় বিবেচনায় নিয়ে বেসরকারি পর্যায়ে আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক কাজে নিয়োজিত সব কর্মজীবীর জন্য একটি টেকসই সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা প্রবর্তনের কাজ এই অর্থবছরেই শুরুর আশা রাখি। শুরুতে অন্তত কয়েকটি নির্দিষ্ট এলাকায় হলেও পরীক্ষামূলক উদ্যোগ হিসেবে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা চালু করার ইচ্ছা সরকারের আছে বলেও জানান তিনি।

বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী বলেন, দেশের মোট বয়স্ক জনসংখ্যার মধ্যে পেনশনভোগীর সংখ্যা খুবই কম। বর্তমানে শুধু সরকারি কর্মচারী এবং অল্প কিছু বেসরকারি সংস্থার কর্মচারীরা এই সুবিধা পান। সব মিলিয়ে পেনশন সুবিধার আওতায় থাকা পরিবারের সংখ্যা ৭ থেকে ৮ লাখ।

অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারীদের বাইরে হতদরিদ্র ৩৫ লাখ ব্যক্তি মাসিক ৪০০ টাকা হারে বয়স্ক ভাতা পাচ্ছেন, যা মোট বয়স্ক জনসংখ্যার মাত্র এক-চতুর্থাংশ। বয়স্ক ভাতার পরিমাণ মানসম্মত জীবনধারণের জন্য যথেষ্ট নয় উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, জনমিতির স্বাভাবিক ধারায় এক সময় উন্নত দেশের মতো আমাদের দেশেও বয়স্ক জনগোষ্ঠীর অনুপাত বাড়বে। তখন স্বাভাবিক বাজেট বরাদ্দের আওতায় তাদেরকে সহায়তা দেয়া কঠিন হয়ে পড়বে। অথচ আমরা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সুফল সবার কাছে পৌঁছাতে চাই, কমাতে চাই বৈষম্য। এ কারণেই, বর্তমান সরকারি পেনশন কার্যক্রমের বাইরে বেসরকারি পর্যায়ের আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক খাতে কর্মরত সব কর্মজীবী মানুষের জন্য সর্বজনীন পেনশন চালু করতে চাই।