ঝিকরগাছা সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসের দলিল লেখকদের কর্মবিরতি

স্টাফ রিপোর্টার: চরম অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা ও অসৌজন্যমূলক আচরণের অভিযোগে যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলা সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসের দলিল লেখকরা অনির্দিষ্ট কালের জন্য কর্মবিরতির ঘোষণা করেছেন। ফলে জমি কেনাবেচায় আগ্রহী জনসাধারণের দূর্ভোগের পাশাপাশি সরকারের মোটা অংকের রাজস্ব হাতছাড়া হওয়ার আশংঙ্কার সৃষ্টি হয়েছে। ঝিকরগাছা সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসে প্রতি সপ্তাহের অন্তত ২৫০টি দলিল রেজিষ্ট্রি সম্পাদিত হয়ে থাকে। এর বিপরিতে ষ্ট্যাম্পসহ সরকারের রাজস্ব আয় প্রায় ৩০/৩২ লাখ টাকা। দলিল লেখক সমিতির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে গত বুধবার থেকে তারা এই কর্মবিরতিতে যাচ্ছেন।

ঝিকরগাছা সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসের দলিল লেখক সমিতির সভাপতি আব্দুল আজিজ ও সাধারণ সম্পাদক সন্তোসকুমার সরকারসহ সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, কর্মকর্তা প্রায়শই দলিল লেখকদের সাথে চরম অসৌজন্যমূলক আচরণ করে থাকেন। সাব-রেজিষ্ট্রার মোঃ মশিয়ুর রহমান সরকারের নিয়মনীতিমালা বা প্রজ্ঞাপন উপেক্ষা করে নানা অযুহাতে দলিল রেজিষ্ট্রি সম্পাদন ব্যাহত করে থাকেন। দলিলের দাতা কিম্বা গ্রহিতার জাতীয় পরিচয় পত্র বা ভোটার আইডিকার্ড কোন কারণে না থাকলে জন্মনিবন্ধন সনদপত্র দাখিল করলেও তিনি তা আমলে নেন না।

এক্ষেত্রে সাব-রেজিষ্ট্রার মশিয়ুর রহমানের দাবি, এনএন ফিসের কোন অতিরিক্ত অর্থ আদায় করার অভিযোগ ও অস্পষ্টতার কারণ নেই। বিভাগীয় সিদ্ধান্তের আলোকে নকলনবিশগণের পারিশ্রমিক বাবদ আদায়কৃত অর্থের রশিদ প্রদানের মাধ্যমে ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা রাখার নির্দেশনা রয়েছে। এক্ষেত্রে ১০ পৃষ্টার দলিল প্রতি পে-অডার বাবদ ১৬০টাকা ও নকলনবিশদের পারিশ্রমিক বাবদ ২৪০টাকা রশিদের মাধ্যমে জমা রাখা হয়। তবে, সরকারের পূর্বেকার সিদ্ধান্ত পরিবর্তিত করে ১০পৃষ্টার দলিলে প্রথম দুই পৃষ্টা ফিস ফ্রি থাকলেও বর্তমানে সেই দুই পৃষ্টার পারিশ্রমিক দিতে হবে। অথচ দলিল লেখকরা এই বিষয়টি মানতে নারাজ। লিখিত নির্দেশনা দেখতে চাইলে সেটা সম্ভব নয় বলে তিনি জানান।

এদিকে ঝিকরগাছা সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসে কর্মকর্তা ও অধস্থনদের বিরুদ্ধে নিয়মানুবর্তিতার গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। অত্র অফিসে সপ্তাহের মঙ্গল, বুধ ও বৃহস্পতিবার দলিল রেজিষ্ট্রির দিন ধার্য্য থাকলেও মাত্র দু’দিন দলিল রেজিষ্ট্রি সম্পাদন হয়ে থাকে। পাশাপাশি কর্মদিবসের রবি, সোম, মঙ্গল এই তিনদিনে অধস্থন কর্মকর্তা কর্মচারীদের অফিসে খুব একটা দেখা মেলে না। এমন অভিযোগ অনেকের। অত্র অফিসে লাইসেন্সধারী দলিল লেখক রয়েছেন ৬৫ ও নকলনবিশ রয়েছেন ২৬ জন।