মহেশপুর ৩৮ বছর বয়সীর দপ্তরী হিসেবে নিয়োগ !

বসির আহাম্মেদ, ঝিনাইদহ: সরকারী চাকরীতে প্রবেশের বয়সসীমা হচ্ছে ৩০ বছর। আর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হলে ৩২ বছর। কেও এর বেশি বয়সে চাকরী নিতে বা আবেদনই করতে পারবেন না, এটাই সরকারী নিয়ম। কিন্তু ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার ভালাইপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়োগপ্রাপ্ত দপ্তরী কাম প্রহরী দেলোয়ার হোসেনের বয়স ৩৮ বছর। ভোটার তালিকানুযায়ী তার জন্ম তারিখ ৫ অক্টোবর ১৯৭৯। ফলে বয়স জালিয়াতি করে চাকরী নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। ঘটনাটি এখানেই থেমে নেই, আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে।

জসিম উদ্দিন নামে এক চাকরী প্রত্যাশী বাদী হয়ে ঝিনাইদহ সহকারী জজ আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছেন (যার মামলা নং ১৬০/১৮)। মামলায় নিয়োগ কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুল ইসলামসহ মোট ৬ জনকে বিবাদী করা হয়েছে।

মামলা সুত্রে জানা গেছে মহেশপুর উপজেলায় ২৬টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দপ্তরী কাম প্রহরী পদে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। এই বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী মহেশপুর উপজেলার ভালাইপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একজন দপ্তরী কাম প্রহরী পদের বিপরীতে ১৪ জন প্রার্থী আবেদন করেন। গত ৯ জুন মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষায় ৮ জন অংশ নেন। পরীক্ষা শেষে মোঃ দেলোয়ার হোসেনকে নিয়োগ দেওয়া হয়। দেলোয়ার হোসেনের জাতীয় পরিচয়পত্রে ৪৪০৮৩৯০০০২৭২ বয়স জালিয়াতির বিষয়টি ফুটে উঠেছে। ঝিনাইদহ জেলা নির্বাচন অফিস থেকে দেলোয়ারের বেশি বয়সের প্রমান মিলিছে।

অভিযোগ উঠেছে মোটা অংকের ঘুষের বিনিময়ে সবগুলো পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আর এই খাতে লেনদেন হয়েছে ৮ থেকে ১০ লাখ টাকা। এদিকে গত ৩ জুলাই সদ্য দপ্তরীতে নিয়োকারী দেলোয়ার হোসেনের বয়স জালিয়াতির ঘটনাটি ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসককে লিখিতভাবে অবহিত করা হয়।

এ ব্যাপারে মহেশপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ কামরুল ইসলাম ঘুষ দুর্নীতির কথা অস্বাকীর করে জানান, বিধি মোতাবেক নিয়োগ প্রতিক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে। তবে এ ক্ষেত্রে যদি বয়স জালিয়াতি হয়ে থাকে তা আদালত দেখবেন। বিষয়টি নিয়ে ভালাইপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নন্দ দুলাল কবিরাজ জানান, দেলোয়ারের অষ্টম শ্রেনীর সার্টিফিকেটে ও জন্ম নিবন্ধন সনদে বয়স ৩০ সীমার মধ্যে আছে। যাচাই বাছাই কমিটিতেও এমন অভিযোগ উঠেছিল। তারপরও নিয়োগবোর্ড তাকে নিয়োগ দিয়েছেন।