‘বাঘারপাড়ায় আমজাদ রাজাকার বাহিনী বেপোরোয়া হয়ে উঠেছে’

যশোর বাঘারপাড়া উপজেলায় প্রেমচারা গ্রামের রাজাকার আমজাদ হোসেন মোল্যার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে মামলায় হওয়ার পর থেকে তার পক্ষীয়রা বেপোয়ারা হয়ে উঠেছে। একের পর এক মামলার স্বাক্ষীদের বাড়ি ঘর ভাংচুর ও স্বাক্ষীর চাচাতো ভাইকে হত্যা পর্যন্ত করা হয়েছে বলে জেলা ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়েছে।

শনিবার (১৮ আগস্ট) প্রেসক্লাব যশোরে সংগঠনের সভাতি হারুন-অর-রশিদ লিখিত বক্তব্যে জানান, আমজাদ রাজাকারের বিরুদ্ধে মামলা হওয়ার পর থেকেই তার লোকজন বাদী ও স্বাক্ষীদের হুমকি-ধামকি দিয়ে আসছে। দক্ষিণ চাঁদপুর গ্রামের ছবেদ আলীকে পরিকল্পিত ভাবে এই রাজাকার বাহিনী হত্যা করে ট্রাইব্যুনালের স্বাক্ষী এহিয়ার রহমান, মহাব্বত হোসেন, কামরুল ইসলামের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। তাদের দাবি আমজাদ রাজাকারের মামলা তুলে নিয়ে এ মামলা তুলে নেওয়া হবে। সর্বশেষ গত ৮ আগস্ট স্বাক্ষী এহিয়ার রহমানের চাচাত ভাই তফসির মোল্যাকে হত্যা করার পর এলাকায় আতংক বিরাজ করেছে। অথচ পুলিশ রাজাকার পক্ষীয়দের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না। আমজাদ রাজাকারের বাহিনীর মূলহোতা আলোচিত সন্ত্রাসী তরিুকুল, আনোয়ার হোসেন টুটুল, আলম মোল্যা, টাক জাহিদুল, মানিক হোসেন, জুলফিক্কার, তোরাপ মোল্যা এলাকায় বাদী ও স্বাক্ষীদের প্রকাশ্যে নির্যাতন করছে। এদের অর্থদাতা হলেন আমজাদ রাজাকারের ছেলে খোকন মোল্যা, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান শওকত হোসেন মন্ডল ও আদম ব্যবসায়ী মহাসীন বিশ্বাস।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত ৮ আগস্ট আমজাদ এর পক্ষীয়রা রাতের আধারে বাড়ির বারান্দায় ঘুমন্ত অবস্থায় তফসির মোল্যাকে গলাকেটে হত্যা করে। তবে, কোন রহস্যজনক কারণে প্রশাসন এখনো কাউকে গ্রেফতার করেনি। উল্টো নিহত তফসিরের স্ত্রীসহ চারজন পুত্র সন্তান থাকা পর পুলিশ বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামী করে মামলা দায়ের করেছে। নিহত তফসির মোল্যার পরিবারের ওপর আগেও একাধিক বার হামলা করা হয়েছে। গত ১৮ ফেব্রুয়ারী তফসির মোল্যার বাড়ি ভাংচুর করে লুটপাট করা হয়। এ ঘটনায় বাঘারপাড়া থানায় একটি মামলা করা হয়েছে যার নম্বর জিআর-৩২/১৮। এরপর গত ১৭ জুলাই তফসির এর পরিবারের ওপর আবারো হামলা করা হয়। এ নিয়ে তফসির মাল্যার ছেলে বাদী হয়ে যশোর ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। যার নম্বর বাঘারপাড়া সিআর২০১/১৮। আর সর্বশেষ নিহত তফসিরকে কে রাতের আধারে ঘুমন্ত অবস্থায় জবাই করে হত্যা করা হয়। পুলিশ এখনো পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করেনি। তাই তার পরিবারের লোকজন প্রাণ নাশের আশংকায় আছে।

আমজাদ রাজাকারের বিচার ও তার বাহিনীর বিরুদ্ধে নেওয়ার দাবিতে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির জেলা শাখা মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন করে। মানববন্ধন শেষে সংবাদ সম্মেলন করা হয়।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন, ঘাতক দালাল নির্মূর কমিটির জেলা শাখার সভাপতি হারুন অর রশীদ, জেলা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি অসীশ কুমার কুন্ডু, জেলা শিল্পকলা একাডেমীর সাধারন সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাহামুদ হাসান বুলু, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি ডি.এম শহীদুজ্জামান, ওর্য়ার্কাস পার্টির জেলা শাখার সভাপতি ইকবাল কাবির জাহিদ, পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক যোগেশ দত্ত, বিবর্তন যশোরের সাধারন সম্পাদক আতিকুজ্জামান, যুদ্ধপরাধী মামলার বাদী খলিলুর রহমান, আলাউদ্দিন, স্বাক্ষী এহিয়ার রহমান, নিহত তফসির মোল্যার ছেলে তৈয়েবুর রহমান প্রমুখ।