মণিরামপুরে ভিজিএফের ১৫ টন চাল জব্দ, চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আত্মসাতের অভিযোগ

রাজগঞ্জে গরিব ও দুস্থদের জন্য বরাদ্দ ৩০৩ বস্তা ভিজিএফের চাল স্থানীয় একটি গুদাম থেকে জব্দ হয়েছে। সোমবার বিকেলে প্রশাসনের সহযোগিতায় মণিরামপুর উপজেলার রাজগঞ্জের (খাটুরা বাজারের) হরিহরনগর ইউনিয়ন পরিষদের সামনে নূর ইসলামের গুদাম থেকে প্লাস্টিকের বস্তায় রাখা চালগুলো জব্দ করেন। প্রতি বস্তায় আনুমানিক চাল রয়েছে ৫০ কেজি। একইসঙ্গে গুদাম থেকে (সরকারী বরাদ্দ কৃত বস্তা) একটি বস্তা উদ্ধার হয়েছে। পরে চালগুলো ইউনিয়ন পরিষদের গুদামে সিলগালা করে সংশ্লিষ্ট সচিব শারমিন সুলতানার হেফাজতে রাখা হয়েছে। সন্ধ্যায় এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত চাল গুদামে ঢোকানোর কাজ চলছিল।

অভিযোগ করা হচ্ছে, সদ্য বিজয়ী ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জহুরুল ইসলাম চালগুলো কার্ডধারী গরিবদের মাঝে বিতরণ না করে বিক্রির উদ্দেশে ওই গুদামে রেখেছেন। সোমবার রাতে চালগুলো ট্রাকে করে পাচার করার কথা ছিল। তবে চেয়ারম্যান অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

আর গুদামের মালিক নূর ইসলামের দাবি, তিনি চালগুলো সুবিধাভোগীদের কাছ থেকে কিনেছেন। তবে গুদামে পাওয়া সরকারি বস্তাটির ব্যাপারে সরাসরি কোনো উত্তর দিতে পারেননি চেয়ারম্যান ও নূর ইসলাম।

স্থানীয়রা বলছেন, চেয়ারম্যানের চেলাবেলা ইউনিয়ন পরিষদের গুদাম থেকে সরকারি ৪০০ বস্তা চাল নূর ইসলামের গুদামে ঢোকায়। সেখানে সরকারি বস্তা থেকে চালগুলো প্লাস্টিকের বস্তায় ঢেলে বস্তাগুলো সরিয়ে ফেলা হয়। কিন্তু অসাবধানতাবশত একটি বস্তাটি থেকে যায়।

এদিকে চেয়ারম্যানের কথিত চাল আত্মসাতের ঘটনা নিয়ে সোমবার সকাল থেকে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছিল। পরে স্থানীয়দের দেওয়া খবরের ভিত্তিতে সেখানে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষে অভিযান চলে। অভিযানে বেরিয়ে আসে চাল আত্মসাতের চাঞ্চল্যকর তথ্য।

মণিরামপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ইয়ারুল হক বলেন, দুপুরে ইউএনও স্যার আমাকে বিষয়টি জানান। পরে অফিসের উপ-সহকারী প্রকৌশলী গোলাম সরোয়ারকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়। তিনি গিয়ে খাটুরা বাজারের নূর ইসলাম নামের এক ব্যক্তির গুদাম তল্লাশি করে প্লাস্টিকের ৩০৩ বস্তা চাল জব্দ করেন। যার আনুমানিক ওজন ১৫ টন।

পিআইও বলেন, চালগুলো জব্দ করে সংশ্লিষ্ট ইউপি সচিব শারমিন সুলতানার হেফাজতে ইউনিয়ন পরিষদের গুদামে রাখা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ঈদের পরে ইউএনও আহসান উল্লাহ শরিফী এবং জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন অফিসার নূরুল ইসলাম তদন্তে যাবেন।

হরিহরনগর ইউপি চেয়ারম্যান জহুরুল ইসলাম বলেন, ‘ভিজিএফের চাল কার্ডধারীদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। এই চালের ব্যাপারে আমি কিছু জানি না।’ উদ্ধার হওয়া সরকারি বস্তার ব্যাপারে তিনি সরাসরি কিছু বলেননি।

জানতে চাইলে মণিরামপুরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আহসান উল্লাহ শরিফী বলেন, সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যানকে বলেছি গোডাউনের মালিকের ব্যাপারে লিখিত দিতে। আর প্রকল্প অফিসারকে চেয়ারম্যানের ব্যাপারে লিখিত দিতে বলা হয়েছে। লিখিত পেলে বিষয়টি নিয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।