চামড়া পাচার ঠেকাতে সীমান্তে এক মাসের সতর্কতা

প্রতিবেশী দেশ ভারতে কোরবানির চামড়া পাচার ঠেকাতে বেনাপোলের বিভিন্ন সীমান্তে সর্বোচ্চ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। সীমান্তবর্তী অঞ্চলগুলোতে গোয়েন্দা নজরদারি ও বিজিবির টহল জোরদার করা হয়েছে। চামড়া চোরাকারবারিদের তালিকা করে তাদেরকেও রাখা হয়েছে কঠোর নজরদারিতে।

চামড়াবোঝাই কোনো ট্রাক যাতে সীমান্ত অভিমুখে যেতে না পারে সেজন্য সীমান্তবর্তী সড়কগুলোতে বসানো হয়েছে বিজিবির চেকপোস্ট। রাত দশটার পর বাংলাদেশি নাগরিকদের জিরো লাইনে না যাওয়ার জন্য সতর্ক করা হযেছে কঠোরভাবে। ঈদের দিন সকাল থেকে পরবর্তী এক মাস এই সতর্কতা বলবৎ থাকবে বলে জনিয়েছেন বিজিবি কর্মকর্তারা।

চামড়া ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, এবছর ট্যানারি মালিকরা সিন্ডিকেট করে চামড়ার দাম অনেক কম নির্ধারণ করেছেন। অথচ পাশের দেশ ভারতে চামড়ার দাম অনেক বেশি। চামড়ার দর কম নির্ধারণ করায় মাঠ পর্যায়ের ব্যবসায়ীরা লোকসানের মুখে পড়েছে বলে জানান তারা।

ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, বাংলাদেশ থেকে কম দামে চামড়া কিনে সীমান্ত পার করলেই সেখানে বেশি দামে বিক্রি করা যায়। এজন্য পাচারকারী চক্রগুলো ইতোমধ্যে প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে। তারা সুযোগ বুঝে এসব চামড়া ভারতে পাচার করে দেয়ার পরিকল্পনা করছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।

দেশের চাহিদার মোট ৪০ শতাংশ চামড়া সংগ্রহ করা হয় কোরবানি ঈদে। বাকি ৬০ শতাংশ কাঁচা চামড়া সংগ্রহ হয় বছরজুড়ে। চামড়া ব্যবসায়ীদের মতে, পার্শ্ববর্তী দেশের চেয়ে বাংলাদেশের চামড়ার গুণগত মান উন্নত। প্রতিবেশী দেশের পশুর চামড়া নিম্নমানের বলে এদেশের চামড়ার সঙ্গে মিশিয়ে আন্তর্জাতিক বাজারে রপ্তানি করা হয়। চোরাকারবারীরা প্রতিবেশী দেশে চামড়া পাচার করে ওই অর্থ দিয়ে ভারত থেকে অন্যান্য মালামাল কিনে আনে। যশোর সীমান্তবর্তী অঞ্চল হওয়ায় এখান থেকে খুব সহজে ভারতে চামড়া পাচার করা যায়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চামড়া ব্যবসায়ী এক নেতা জানান, বেনাপোল, শার্শা, ঝিকরগাছা, সাতক্ষীরা ও কলারোয়া সীমান্ত পথ দিয়ে সাধারণত চামড়া পাচার হয়ে থাকে। তিনি বলেন, চামড়ার দাম সঠিকভাবে নির্ধারণ করলে ব্যবসায়ীদের মধ্যে স্বস্তি থাকে। ফলে পাচার হওয়ার আর সম্ভাবনা থাকে না। তিনি চামড়ার সঠিক দাম নির্ধারণের জন্য ট্যানারি মালিকদের প্রতি আহ্বান জানান।

বিজিবির উপমহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল খালিদ আল মামুন বলেন, চামড়া পাচার প্রতিরোধে সীমান্তে সর্বোচ্চ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। বাংলাদেশি নাগরিকদের রাত দশটার পর জিরো লাইনে না যাওয়ার জন্য সতর্ক করা হয়েছে।