হাটহাজারীর ত্রিপুরা পল্লীতে অজ্ঞাত রোগে ৪ শিশুর মৃত্যু, আক্রান্ত ২১

হাটহাজারী উপজেলার ত্রিপুরা পল্লীতে গত এক সপ্তাহে অজ্ঞাত রোগে অক্রান্ত হয়ে একই পরিবারের ৩শিশুসহ ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই উপজাতীয় পল্লীতে আরো ২১ জন আক্রান্ত হয়েছে। তাদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশংকাজনক। আশংকা জনক তিন জনকে আলাদাভাবে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।রবিবার হাটহাজারী স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সের একটি টিম উক্ত ত্রিপুরা পল্লী পরিদর্শন করে।

জানা যায়, উপজেলার উক্ত এলাকায় গত (২১শে আগষ্ট) মঙ্গলবার অন্ন রায় ত্রিপুরা (৫) এবং কিশা মনি ত্রিপুরা (৩) নামে দুই শিশুর মৃত্যু হয়। ২৪শে আগষ্ট শুক্রবার সমরায় ত্রিপুরা(৪) নামে এক শিশু মারা যায়। অন্ন বালা ত্রিপুরা(৭) নামে এক শিশু রবিবার (২৬ আগষ্ট) মারা গেছে। এ নিয়ে শেম কুমার ত্রিপুরার পরিবারের তিন জন শিশুর মৃত্যু হয়। এতে করে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। পাশাপাশি এলাকায় আতংক ছড়িয়ে পড়লে পুরো দুর্গম ত্রিপুরাপল্লী যেন অসহায় হয়ে পড়ে।

খবর পেয়ে রবিবার সকালের দিকে হাটহাজারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরিবার পরিকল্পনা কর্মকার্তা ডাক্তার আবু সৈয়দ মোঃ ইমতিয়াজ হোসাইনের নেতৃত্বে মোট ৬জন চিকিৎসক সেখানে গিয়ে ২১জন রোগীকে হাটহাজারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। তার মধ্যে তিন জনের অবস্থা আশংকাজনক।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঐ এলাকায় প্রায় ৫৫টি পরিবারের ৪শত লোকের বসবাস এ দুর্গম ত্রিপুরাপল্লীতে। এই পল্লীতে কমিউনিটি ক্লিনিক থাকলেও ডাক্তাররা রীতিমত আসেনা। ফলে সেখানে রোগীও তেমন আশার আগ্রহ হারিয়ে ফেলে।

ওই এলাকার স্থানীয় একজন বাসিন্দা জানান, দীর্ঘদিন পূর্বে একবার একজন স্বাস্থ্য কর্মী আসলেও আজ পর্যন্ত কেউ আমাদের কোন খবর রাখেনি। বর্তমানে আমরা আতংকে বসবাস করছি। আরো অনেক শিশুই এ রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েছে।

ত্রিপুরাপল্লী এলাকার বনকুমার ত্রিপুরা জানান, প্রথমে শিশুদের শরীরে জ্বর, তারপর শরীরে একধরনের বিরল ঘাঁ পুরো শরীর বিস্তার করে। এরপর খিচুনি শুরু হয়। তারপর ধীরে ধীরে শিশুরা মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।

এ ব্যাপারে হাটহাজারী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকার্তা (টি এইচ ও) ডাঃ আবু সৈয়দ মোঃ ইমতিয়াজ হোসাইন জানান, ত্রিপুরা এলাকায় এখনো কি রোগ তা নির্ণয় করা যাচ্ছেনা। গুরুতর অসুস্থ ৫ জনের রক্তের নমুনা নিয়ে ঢাকার আই.ই.ডি.সি.আর এ পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে। তবে অসুস্থ রোগীদের হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে। সোমবার স্বাস্থ কমপ্লেক্সের একটি টিম গিয়ে ত্রিপুরা পল্লী এলাকায় প্রতিটি ঘরে ঘরে গিয়ে তাদেরকে চিকিৎসা দেওয়ার কথা রয়েছে।