যশোরে কলেজছাত্রীর রহস্যজনক মৃত্যু

যশোর শহরের লোন অফিসপাড়ায় সানজিদা সুহানা (১৬) নামে এক কলেজছাত্রীর অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। বুধবার মৃত্যুর ঘটনায় পরিবারের সদস্যদের পরস্পর বিরোধী বক্তব্য পাওয়া গেছে। কলেজছাত্রীর নানা-নানির দাবি ছুরি মেরে হত্যা করা হয়েছে। আর তার পিতা বলছেন, মেয়ে মাদকাসক্ত ছিল। সে আত্মহত্যা করেছে। পাল্টাপাল্টি বক্তব্যে ধু¤্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। এজন্য মৃত্যুর সঠিক কারণ জানতে পুলিশ লাশের ময়নাতদন্ত করেছে। যশোর জেনারেল হাসপাতালে ময়নাতদন্ত হয়েছে।

যশোর কোতোয়ালি থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শামিম আক্তার জানান, এটা হত্যা নাকি আত্মহত্যা এই মুহূর্তে তা বলা যাবে না। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট এলে জানা যাবে। তবে নিহত সুহানা যে একজন মাদকসেবী ছিল তাতে কোনো সন্দেহ নেই। তিনি আরও বলেন, নিহতের বাম উরুতে খোদাই করে বড় করে ‘চাকামা’ লেখা আছে। তার দুই হাতের বিভিন্ন জায়গা ব্লেড দিয়ে কেটে ক্ষতবিক্ষত করা।

নিহতের নানা মাগুরা জেলার শ্রীপুর উপজেলার তারাউজিয়াল গ্রামের বাসিন্দা মীর সুজায়েত আলী বলেন, যশোর শহরের লোন অফিসপাড়ার সালাউদ্দিন সুমনের সাথে আমার মেয়ে শাহিনা আক্তারের বিয়ে হয়। তাদের মেয়ে সানজিদা সুহানা। প্রায় ১২ বছর আগে সুহানার বাবা-মা অর্থাৎ সুমন-শাহিনার বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। তখন সুহানা আমাদের বাড়িতে থাকতো। সে এসএসসি পাশ করার পরে লেখাপড়ার জন্য তার বাবার বাড়ি যশোরের লোন অফিসপাড়ায় ফিরে আসে এবং যশোর সরকারি সিটি কলেজে ভর্তি হয়। মৃত্যুর আগে সে এই কলেজে এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষে পড়তো।’ বৃদ্ধ সুজায়েত দাবি করেছেন, ‘বুধবার আমার নানতি সুহানাকে তার বাবা, দাদা ও দাদি হত্যা করে লাশ ঘরের ফ্যানের সাথে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে।

নিহতের নানী শিরিন আক্তার ও খালা মীর সাদিয়া বলেন, ‘বাম উরু ও হাতে ছুরি মেরে সুহানাকে খুন করা হয়েছে। তার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। বাম উরুতে অনেকটা ক্ষত দেখা যাচ্ছে।’

তবে বাবা সালাহউদ্দিন সুমন এই সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তার মেয়ে মাদকাসক্ত ছিল। সে আত্মহত্যা করেছে। তিনি আরও বলেন, ‘আমার মেয়ে নিয়মিতভাবে ইয়াবা সেবন করতো। কিছু দিন আগে শহরের রেলস্টেশনের পাশে দুইজন খারাপ মেয়ের সাথে তার গভির সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এই নিয়ে তাকে বকাঝকা করা হয়। সেই কারণে সুহানা গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ঘরের ফ্যানে ঝুলে আত্মহত্যা করেছে।’