সেনাবাহিনী ছাড়া জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু হবেনা : নজরুল ইসলাম খান

বিএনপির কেন্দ্রীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, সেনাবাহিনী ছাড়া আগামী জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু হবেনা। এ সরকার একটি অমানবিক ও দানবিক সরকার। সরকার অন্যায়ভাবে বিএনপির বয়োবৃদ্ধ নেতাদেরকে জেলে বন্দি করে রেখেছে। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াসহ সকল রাজবন্দিদের মুক্তির জন্য আরো ইস্পাত কঠিন আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।

তিনি বলেন, বীর চট্টগ্রাম থেকে অতীতের মত আন্দোলনের তীব্রতা বাড়াবে নেতাকর্মীরা। মরহুম সৈয়দ ওয়াহিদুল আলমের মত দলের প্রতি অনুগত নেতা রাজনৈতিক অঙ্গনে আর জম্মাবেনা।

শুক্রবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জাতীয় সংসদের সাবেক হুইপ ও বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা সৈয়দ ওয়াহিদুল আলমের শোক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

নজরুল ইসলাম বলেন, সৈয়দ ওয়াহিদুল আলমের মৃত্যুকালে তাঁর দুঃখ একটাই নেত্রীকে মুক্ত দেখে যেতে পারেননি। রাজনৈতিক জীবনে সকল ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে রাজনীতি করার আহ্বানই ছিল সৈয়দ ওয়াহিদুল আলমের রাজনৈতিক শেষ বক্তব্য। বেগম খালেদা জিয়া ছাড়া কোন নির্বাচন হতে দেয়া হবেনা বলেও মন্তব্য করেন নজল ইসলাম খান।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপি’র কেন্দ্রীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক মন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, রাজনীতিতে ওয়াহিদুল আলমের অবদান আলোচনায় শেষ করা যাবেনা। স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে আপোষহীন ছিলেন তিনি। প্রতিটি রাজনৈতিক সংকটে ছিলেন সহায়কের ভুমিকায়। তিনি ছিলেন একজন সৎ ও ত্যাগি রাজনীতিবিদ। রাজনীতিতে তাঁর অবদান ছিল অসাধারণ।

হাটহাজারীর লালিয়ার হাট মাদরাসা মাঠে চাকসু ভিপি নাজিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত শোক সভায় বক্তব্য রাখেন কল্যাণ পাটির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বীর প্রতীক, বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান বেগম সেলিমা রহমান, বরকত উল্লাহ বুলু, মো. শাহজাহান, জয়নাল আবেদিন ফারুক, গোলাম আকবর খোন্দকার, এস এম ফজলুল হক, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, সৈয়দা আসিফা আশরাফি পাপিয়া, মাহবুবের রহমান শামীম, ব্যারিস্টার রুহিন ফারহানা, ডা. শাহাদাত হোসেন, জাফরুল ইসলাম চৌধুরী, মহিলা দলের নেত্রী সুলতানা আহমেদ, বেগম নুরী আরা ছাফা। হাটহাজারী উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব সোলাইমান মঞ্জু, সৈয়দ মোঃ ইকবাল।

মোঃ হারুন ও মোস্তফা আলম মাসুমের সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য রাখেন ব্যারিস্টার সাকিলা ফারজানা, শামীমা বরকত, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী, আবুল হাসেম বক্কর, সাথী উদয় কুসুম বড়ুয়া, আবু সুফিয়ান, এম এ হালিম, উপজেলা চেয়ারম্যান মাহবুবুল আলম চৌধুরী, ইদ্রিস চেয়ারম্যান, মো. এনামুল হক, আহমদ খলিল খান, মনোয়ারা প্রমুখ।

ব্যারিস্টার সাকিলা ফারজানা বলেন, সৈয়দ ওয়াহিদুল আলম তাঁর জীবনের সব সময়টুকু বিএনপি এবং হাটহাজারীবাসীর জন্য দিয়েছেন। আমি সবার কাছে কৃতজ্ঞ। আমার বাবার অসমাপ্ত কাজ করার জন্য আমি হাটহাজারীবাসীর কাছে দোয়া চাই।

কল্যাণ পাটির চেয়ারম্যান মেজর (অব.)সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম বলেন, আগামী দিনে কঠিন সময় আসছে। দেশনেত্রীকে মুক্ত করতে হবে। এজন্য ঐক্যের কোন বিকল্প নেই।

বিএনপি ভাইস চেয়ারম্যান সেলিনা রহমান বলেন, এখন আর ঘরে বসে থাকার সময় নয়। ঐক্যবদ্ধ হউন, রাজপথে নামুন।

বিএনপি ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লাহ বুলু বলেন, নেত্রী কারাগারে এখন আর বসে থাকার সময় নেই। সংগ্রামের মাধ্যমে কাপনের কাপড় মাথায় বেঁধে আন্দোলন করে নেত্রীকে মুক্ত করতে হবে।

বিএনপি ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, দেশের আইন চলে এক ব্যক্তির কথায়। সেই আইন দিয়ে নেত্রীকে জেল থেকে বের করা যাবে না। আন্দোলন করে জেলের তালা ভেঙ্গে নেত্রীকে বের করতে হবে।

বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা গোলাম আকবর খোন্দকার বলেন, মরহুম সৈয়দ ওয়াহিদুল আলম যেভাবে রাজপথে থেকে আন্দোলন সংগ্রাম করেছেন সেভাবে আমাদেরকেও রাজপথে নামতে হবে।

বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা এস এম ফজলুল হক বলেন, দেশে কোন গণতন্ত্র নেই, গরীব দু:খী মানুষের কোন স্বাধীনতা সেই। রক্ত দিয়ে দেশের গণতন্ত্র রক্ষা করে বেগম জিয়াকে মুক্ত করতে হবে।

বিএনপির প্রচার সম্পাাদক এ্যানি বলেন, বৃহত্তর আন্দোলনের মাধ্যমে দেশনেত্রীকে মুক্ত করতে হবে। এজন্য ঐক্যবদ্ধ হওয়া ছাড়া কোন বিকল্প নেই।

বিএনপি সাংগঠনিক সম্পাদক মাহাবুবুর রহমান শামীম বলেন, আইনের মাধ্যমে বেগম জিয়াকে মুক্ত করা যাবে না, আন্দোলনের মাধ্যমে বেগম জিয়াকে মুক্ত করতে হবে।

ব্যারিস্টার রুহিন ফারহানা বলেন, বাংলাদেশ এখন গভীর সংকট অতিক্রম করছে। তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে গ্রেফতার করে পরিত্যাক্ত একটি কারাগারে রেখেছেন। অচিরেই নেত্রীকে মুক্ত করতে হবে। তিনি বলেন, সরকারের বিদায় ঘণ্টা বেজে গেছে। যার যার অবস্থান থেকে আন্দোলনের জন্য প্রস্তুতি নিন।

সাবেক সংসদ সদস্য পাপিয়া সরওয়ার বলেন, পুলিশের অনুমতি নিয়ে সমাবেশ করে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা যাবে না। আন্দোলন করে রাস্তায় নেমে দেশনেত্রীকে মুক্ত করতে হবে।