গ্যাসের দাম বাড়ছে

আবাসিক ও বাণিজ্যিক সংযোগ ছাড়া অন্য ক্ষেত্রে গ্যাসের দাম বাড়ানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদবিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী। বিদ্যুৎ, ক্যাপটিভ বিদ্যুৎ, সারকারখানা ও শিল্প খাতে এই দাম বাড়ানো হবে বলে জানান তিনি।

শনিবার ঢাকায় এক আলোচনা অনুষ্ঠানে জ্বালানি উপদেষ্টা বলেন, খুব শিগগিরই গ্যাসের দাম বাড়ানো হবে। তবে আমরা বিইআরসিকে বলেছি, দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখতে।

তিনি বলেন, বর্তমানে ২০ হাজারের মতো বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা হয়েছে। এটাকে ৪০ হাজার মেগাওয়াট নেয়ার পরিকল্পনা আছে।

উপদেষ্টা বলেন, নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রসারে সরকার নানা উদ্যোগ নিয়েছে। এজন্য নেট মিটারিং পদ্ধতি চালু করা হয়েছে। নতুন এই পদ্ধতি শুরু করতে অনেকে নানা চিন্তা করছেন। কিন্তু উদ্যোক্তারা নিজেদের ছাদ ব্যবহার করলে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনে ৪০ ভাগ ব্যয় সাশ্রয় হবে। এখানে জমি প্রয়োজন নেই। উদ্যোক্তারা দিনের বেলা সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন করে নিজেদের প্রয়োজন মেটাবেন। অতিরিক্ত বিদ্যুৎ গ্রিডে দেবেন। তার যখন প্রয়োজন হবে তখন গ্রিড থেকে বিদ্যুৎ নেবেন। ছুটির দিনে তিনি পুরো বিদ্যুৎ গ্রিডে সরবরাহ করতে পারবেন। প্রয়োজনে সরকার প্রণোদনা দেবে।

তিনি বলেন, আমরা অনেক জায়গাতে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন করতে চেয়েছি। এর মধ্যে দেশের বিমানবন্দরগুলোতে প্যানেল বসালে ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া যেতে পারে। কিন্তু সিভিল এভিয়েশন এতে আপত্তি জানিয়েছে। আমরা তাদের বলেছি দিল্লি বিমানবন্দরে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে। তারা দেখে এসেছে। এবার তারা রাজি হবে আশা করি।

জ্বালানি উপদেষ্টা বলেন, সময়ের পার্থক্যকে কাজে লাগানোর চিন্তা চলছে। বাংলাদেশের যখন সূর্যের আলো থাকে না। তখন গুজরাটে থাকে। সেখানে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন করে আমদানি করা যায়।

গত জুনে এলএনজি আমদানি চূড়ান্ত হওয়ার পরই গ্যাসের দাম বাড়ানোর তোড়জোড় শুরু হয়। আবাসিক ও বাণিজ্যিক ছাড়া সব ক্ষেত্রে গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দেয়া হয় উত্তোলন ও বিতরণ কোম্পানিগুলোর পক্ষ থেকে।

এর আগে গত ১১ জুন থেকে গ্যাসের দাম বাড়ানোর বিষয়ে গণশুনানি শুরু করে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)।

শুনানিতে প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের গড় দাম ৭ টাকা ৩৯ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ১২ টাকা ৯৫ পয়সা করার প্রস্তাব করেছে কোম্পানিগুলো। সব মিলিয়ে ৭৩ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। শুনানিতে পেট্রোবাংলার পক্ষ থেকে বিইআরসিকে বলা হয়- ভ্যাট, ব্যাংক চার্জ, রিগ্যাসিফিকেশন চার্জসহ নানা ধরনের চার্জ যোগ করে আমদানি করা এলএনজির বিক্রয়মূল্য দাঁড়াবে ৩৩ টাকা ৪৪ পয়সা। যা বর্তমানে বিক্রিত গ্যাসের চার গুণ বেশি। শুনানি শেষ হওয়ার ৯০ কার্যদিবসের মধ্যে দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেয়ার কথা।

বিইআরসি সূত্র জানায়, সরকার এলএনজি আমদানির শুরুতে গ্যাসের ওপর থাকা সব ধরনের কর প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এখন জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) থেকে কোম্পানিগুলোকে এ সংক্রান্ত চিঠি দেয়া হবে। ওই চিঠি পেলেই কমিশন বর্ধিত গ্যাসের দাম ঘোষণা করব।