চট্টগ্রাম কলেজে ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষ

ছাত্রলীগের ঘোষিত কমিটি নিয়ে ফের রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে চট্টগ্রাম সরকারি কলেজ। বুধবার দ্বিতীয় দিনের মতো দু’গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়া, সড়ক অবরোধ, গাড়ি ভাঙচুর ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এসময় দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে বহিরাগতদের উপস্থিতি দেখা যায়।

এদিন সকাল থেকে কলেজ ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের দু‘গ্রুপের অবস্থানের পর উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। দুপুর ১টার দিকে কলেজের সামনের সড়কে শুরু হয় সংঘাত। এসময় পুলিশ লাঠিচার্জ করে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। তবে অস্ত্রধারীদের হাতের নাগালে পেয়েও গ্রেপ্তারের চেষ্টা করেনি পুলিশ।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে চকবাজার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল কালাম বলেন, সংঘাতের সময় পুলিশ কোন অস্ত্র দেখেনি। কোন ককটেল বিস্ফোরণ ঘটেনি। তাই পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তার করেনি।

অন্যদিকে মহানগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (চকবাজার জোন) নোবেল চাকমা বলেন, চট্টগ্রাম সরকারি কলেজের গণি বেকারির সামনে ছাত্রলীগের দু‘পক্ষ মুখোমুখি হয়।

তখন ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার মধ্যে তিনটি ককটেল বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। এমনকি মুখ বাঁধা বেশ কয়েকজনের হাতে-কোমরে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রও ছিল। কিন্তু পুলিশ তাদের কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
তিনি আরও বলেন, কলেজ ছাত্রলীগের ২৫ সদস্যের ঘোষিত কমিটি নিয়ে ছাত্রলীগের তিন পক্ষের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়। এরমধ্যে দু‘পক্ষ এক হয়ে অপরপক্ষের সাথে সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে। মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে এ নিয়ে একটি পক্ষ প্রথম কলেজের সামনের সড়কে বিক্ষোভ শুরু করে। এ সময় তারা সড়ক অবরোধ করে। আবার আরেকটি পক্ষ কলেজ ক্যাম্পাসের ভেতরে বিক্ষোভ শুরু করে। যাদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, হাতাহাতি ও মারামারির ঘটনা ঘটে।

সড়কে গাড়ি ভাঙচুর শুরু ও ককটেল বিস্ফোরণ নিয়ে চট্টগ্রাম সরকারি কলেজ ক্যাম্পাস এবং আশপাশের দুটি কলেজ ও তিনটি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় এলাকায় দিনভর ছিল উত্তপ্ত। সড়ক অবরোধের কারণে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ায় দুর্ভোগে পড়ে নগরীর মানুষ।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুর ১টার দিকে কলেজ ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হলে গণি বেকারী থেকে চকবাজার পর্যন্ত সড়ক যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এসময় ছাত্রলীগের দুই গ্রুপকে প্রকাশ্যে অস্ত্র প্রদর্শন করতে দেখা যায়। একের পর এক ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় ছাত্রলীগের দুই গ্রুপ। এতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে পুরো এলাকায়। পুলিশ দুই গ্রুপকে ধাওয়া দিয়ে লাটিচার্জ করে ছত্রভঙ্গ করলেও হাতের নাগালে পেয়েও অস্ত্রধারী কাউকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করেনি।

প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও জানান, সংঘর্ষ চলাকালে ছাত্রলীগ কর্মীরা গণি বেকারী থেকে কাজেম আলী স্কুলের আশে পাশে থাকা দোকানপাট ও খাবার হোটেলগুলোতে ইটপাটকেল মেরে ভাঙচুর করেছে। এসময় ভোজন নামে একটি হোটেলে ব্যাপক ভাঙচুর করে তারা।

গণি বেকারীর কর্মচারী নাজিম উদ্দিন বলেন, একদিকে ককটেল বিস্ফোরণ হচ্ছিল অন্যদিকে গাড়ি ভাঙচুর করছিলেন একদল যুবক। দোকানের সামনে দরজার কাচও ভাঙচুর করা হয়। এসময় পথচারি, স্কুলের শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। অনেকে প্রাণভয়ে ছুটোছুটি শুরু করেন।