দুর্গাপূজা নিয়ে গুজবে কান দেবেন না: ডিএমপি কমিশনার

দুর্গাপূজায় সামাজিক যোগাযোগ ও অন্যান্য মাধ্যমে ছড়ানো কোনো গুজবে কান না দিয়ে নিশ্চিন্তে উৎসব পালনে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া।

তিনি বলেছেন, পূজা উপলক্ষে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে সুদৃঢ়, কঠোর, নিশ্ছিদ্র এবং সমন্বিত নিরাপত্তাব্যবস্থা।

মঙ্গলবার সকাল ১১টায় আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজার নিরাপত্তা-সংক্রান্ত সমন্বয় সভায় হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতাদের উদ্দেশে এসব কথা বলেন ডিএমপি কমিশনার।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, এবারের শারদীয় দুর্গাপূজা ঢাকা মহানগরীর ২৩০টি পূজামণ্ডপে অনুষ্ঠিত হবে। পূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরুর আগে মণ্ডপগুলোতে সুইপিং করবে র‌্যাব-পুলিশের ডগ স্কোয়াড। বাহিনীকে সাধারণত বোমা এবং মাদক শনাক্তে কাজে লাগানো হয়। এছাড়াও এবার নিরাপত্তার স্বার্থে মন্দিরের পাশে কোনো হকার কিংবা মেলা বসতে দেয়া হচ্ছে না।

হিন্দু ধর্মে সবচেয়ে বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান শারদীয় দুর্গাপূজার কার্যক্রম ৮ অক্টোবর শুভ মহালয় দিয়ে শুরু হচ্ছে। বিজয়া দশমী দিয়ে শেষ হবে ১৯ অক্টোবর।

এক বার্তায় ডিএমপি মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগ জানায়, সভায় দুর্গাপূজায় ডিএমপি গৃহীত নিরাপত্তাব্যবস্থা তুলে ধরা হয়। পূজামণ্ডপের নিরাপত্তায় মণ্ডপগুলো পুলিশ ও র‌্যাবের ডগ স্কোয়াড দিয়ে সুইপিং করা হবে। প্রত্যেক পূজামণ্ডপে ইন ও আউটের জন্য আলাদা গেটের ব্যবস্থা, মণ্ডপের ভেতরে ও বাইরে জেনারেটরসহ পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা, অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র রাখা, সিসিটিভি-আর্চওয়ে স্থাপন, পুরুষের পাশাপাশি নারী স্বেচ্ছাসেবক মোতায়েন, স্পেশাল ব্রাঞ্চ (এসবি) মোতায়েন ও প্রতিমা বিসর্জনের দিনে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা রাখা যাতে কোনো ব্যাঘাত না ঘটে।

দুর্গাপূজা উদযাপন কমিটির নেতাদের উদ্দেশে ডিএমপি কমিশনার বলেন, পূজামণ্ডপের গুরুত্বানুযায়ী বিভিন্ন শ্রেণিতে বিভক্ত করা হয়েছে। আপনারা সোশ্যাল মিডিয়াসহ যে কোনো গুজবের বিরুদ্ধে সচেতন থাকুন। কেউ মিথ্যা ও অসত্য তথ্য ছড়িয়ে দেশের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করার অপচেষ্টা করলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। পুলিশের পক্ষ থেকে দুর্গাপূজার নিরাপত্তায় সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, পূজামণ্ডপকেন্দ্রিক কোনো হকার ও ভ্রাম্যমাণ দোকান বসতে দেয়া হবে না। নিরাপত্তার স্বার্থে বিশেষ করে কোনো ধরনের মেলা বসতে দেয়া হবে না। ছিনতাই ও ইভটিজিং প্রতিরোধে মোতায়েন থাকবে পুলিশের বিশেষ টিম। সাদা পোশাকে ও ইউনিফর্মে মোতায়েন থাকবে পর্যাপ্ত পুলিশ সদস্য। পূজামণ্ডপে প্রবেশের পূর্বে অবশ্যই মেটাল ডিটেকটর, আর্চওয়ে ও ম্যানুয়ালি তল্লাশি করে প্রবেশ করানো হবে।

কমিশনার বলেন, ঢাকা মহানগর এলাকায় প্রতিমা তৈরি থেকে শুরু করে বিসর্জন পর্যন্ত কার কী দায়িত্ব তার নির্দেশনা ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট বিভাগের অফিসারদের দেয়া হয়েছে। নিরাপত্তার জন্য ঢাকেশ্বরী মন্দিরে কন্ট্রোলরুম খোলা হবে এবং এখান থেকে রাজধানীর সব পূজামণ্ডপের নিরাপত্তা তদারকি করা হবে।

সমন্বয় সভায় পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা ও সরকারি সেবাদানকারী সংস্থার প্রতিনিধি, ফায়ার সার্ভিস, বিদ্যুৎ বিভাগ, সিটি কর্পোরেশন প্রতিনিধি, বাংলাদেশ দুর্গাপূজা উদযাপন কমিটি এবং ঢাকা মহানগর দুর্গাপূজা উদযাপন কমিটির প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।