রাজগঞ্জে দুই সন্তানের জননীর রহস্যজনক মৃত্যু

যশোরের রাজগঞ্জে মঞ্জু খাতুন (২৮) নামে দুই সন্তানের জননীর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। পরিবারের অভিযোগ, তার স্বামী বাবলু মুন্সি গলা টিপে হত্যা করেছেন।

বাবলু মালয়েশিয়া প্রবাসী তিন মাসের ছুটিতে সে বাড়ীতে বেড়াতে আসে৷ একই গ্রামে অন্য এক মেয়ের সঙ্গে পরকীয়ার জেরে তিনি স্ত্রীকে হত্যা করেছেন বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় স্বজনরা হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। খবর পেয়ে মঙ্গলবার দুপুরে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠিয়েছে।

মঞ্জুর চাচাতো ভাই আবুল কালাম জানান, প্রায় ১৫ বছর আগে ঝাঁপা মিস্ত্রিপাড়ার রাজ আলী মুন্সির ছেলে বাবলু মুন্সি সঙ্গে বিয়ে হয় একই গ্রামের বাগাডাঙ্গিপাড়ার জমশেদ মোড়লের মেয়ে মঞ্জু খাতুনের। তাদের জিহাদ (১১) ও লামিয়া (৮) নামে দুটি সন্তান রয়েছে। পরকীয়া নিয়ে তাদের সংসারে অশান্তি লেগেই ছিল। এরইমধ্যে মালয়েশিয়ায় কাজের সন্ধানে যান বাবলু। কিন্তু সংসারের অশান্তি কমেনি। এই পর্যন্ত ৭-৮ বার বিষয়টি নিয়ে গ্রাম্য শালিসও হয়েছে। মাস দুয়েক আগে বিদেশ থেকে ফিরে শালিসের মাধ্যমে মঞ্জুকে ঘরে তোলেন বাবলু।

মঞ্জুর চাচাতো ভাই কালামের অভিযোগ, পাড়ার একটি মেয়ের সঙ্গে পরকীয়া রয়েছে বাবলুর। এই কারণে সোমবার বিকেলে ছেলে জিসান ও বাবা-মাকে মাঠে পাঠিয়ে দিয়ে মঞ্জুকে গলাটিপে হত্যা করে সে। বিষয়টি চাপা দিতে এরপর মেয়ে লামিয়াকে নিয়ে বাবলু রাজগঞ্জ বাজারে যায়। সেখান থেকে ফিরে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে আশপাশের লোকের কাছে প্রচার করে মঞ্জু স্ট্রোক করে মারা গেছে। আমাদেরকেও একই কথা বলে ফোন করে বাবলু।

সন্ধ্যায় আমরা এসে দেখি বাড়ির বারান্দায় মঞ্জুকে কাপড় দিয়ে ঢেকে ফেলে রেখেছে। তখন বৈদ্যুতিক আলোয় কিছু বোঝা যায়নি। সকালে দেখি মঞ্জুর গলায় কালো দাগ। এতে আমরা নিশ্চিত হয়েছি, মঞ্জুকে গলা টিপে মেরে ফেলেছে বাবলু। এই বিষয়ে আমরা হত্যা মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি।

জানতে চাইলে মঞ্জুর বাবা জমশেদ আলী কান্নায় ভেঙে পড়েন। ফলে তিনি গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে কথা বলতে পারেননি।

স্থানীয় ইউপি সদস্য সাজ্জাদ হোসেন বলেন, শুনেছি সোমবার বিকেলে বাবলু তার ছেলেটিকে সাথে নিয়ে রাজগঞ্জ বাজারে গেছে। তখন মঞ্জু খাটের ওপর শুয়ে ছিল। পরে সে নিচে পড়ে যায়। এসময় পাশের তিন নারী এসে মঞ্জুকে ধরেন। তাদের হাতের ওপরই মঞ্জুর মারা গেছে৷

এবিষয়ে জানতে চাইলে ঝাঁপা পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই সাখাওয়াত হোসেন বলেন, লাশের গলার কাছে একটা লালচে দাগ পাওয়া গেছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ মর্গে পাঠানো হচ্ছে।