যেসব বিষয়ে সংলাপ হবে

এত দিন সংলাপের জন্য হাহাকার করেছিলেন বিএনপির নেতারা। নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের উদ্যোগ নিতে বারবার সংলাপের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ছিলেন তাঁরা। কিন্তু প্রতিবার সেই আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছিলেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতা ও মন্ত্রীরা।

এবার সেই সংলাপের আহ্বানে সাড়া দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। তবে সেই সংলাপ হবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে। এই জোটের আহ্বায়ক গণফোরামের সভাপতি ও সংবিধান প্রণয়ন কমিটির চেয়ারম্যান ড. কামাল হোসেন। জোটে আছে দেশের অন্যতম বৃহত্তর দল বিএনপি। আছে গণফোরাম, জেএসডি, নাগরিক ঐক্যসহ বেশ কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তি।

আগামী ১ নভেম্বর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবনে সেই সংলাপ অনুষ্ঠিত হবে। সংলাপের আমন্ত্রণ জানিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ও গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেনকে চিঠি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রীর চিঠি পৌঁছে দিতে আজ মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর বেইলি রোডে ড. কামাল হোসেনের বাসায় যান আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ। দুই নেতা একে অপরের সঙ্গে হাত মেলান এবং কুশল বিনিময় করেন। ড. কামাল হোসেন গোলাপের চিঠি গ্রহণ করে কিছুক্ষণ কথাবার্তা বলেন। এ সময় সেখানে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য ও গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টুও উপস্থিত ছিলেন।

চিঠি দেওয়া শেষে আবদুস সোবহান গোলাপ সাংবাদিকদের বলেন, ‘উনারা যে সময় চেয়েছেন আলোচনার জন্য, সেই পরিপ্রেক্ষিতে আগামী পহেলা নভেম্বর (বৃহস্পতিবার) ২০১৮ গণভবনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী লীগ সভাপতি জননেত্রী শেখ হাসিনা উনাদের আমন্ত্রণ করেছেন সন্ধ্যা ৭টায়। সেই পত্রটি আমি সরাসরি ড. কামাল হোসেন সাহেবের কাছে পৌঁছে দিয়েছি।’

আর ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য মোস্তফা মহসিন মন্টু বলেন, ঐক্যফ্রন্টের সাত দফা ও ১১ লক্ষ্য নিয়ে সংলাপে-আলোচনা করা হবে। ঐক্যফ্রন্টের পক্ষে সংলাপে থাকবেন ১৫ জন সদস্য।

মন্টু সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা কয়জন যাচ্ছি এবং কে কে যাচ্ছি, লিস্টটা উনারা চেয়েছেন। আজকে আমরা লিস্টটা দিয়ে দেবো। আমরা শুধু সাত দফা নয়, সাত দফাসহ অন্যান্য বিষয় এবং বর্তমান যে ইস্যুগুলো আছে, সবগুলো নিয়ে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন করার প্রেক্ষাপট তৈরি করার জন্য উনাকে অনুরোধ করব। এবং এর জন্য উনি (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) যদি কোনো সাহায্য-সহযোগিতা আমাদের কাছে চান, অবশ্যই আমাদের পক্ষ থেকে ড. কামাল হোসেন সাহেব বিস্তারিত কথা বলতে পারবেন।’

তবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট তাদের সব দাবি ও লক্ষ্য নিয়ে সংলাপ করতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে। এ ব্যাপারে ড. কামাল হোসেনকে দেওয়া চিঠিতে কিছু কথা লিখেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি লিখেছেন, ‘জনাব, সালাম ও শুভেচ্ছা নিবেন। আপনার ২৮ অক্টোবর ২০১৮ তারিখের পত্রের জন্য ধন্যবাদ। অনেক সংগ্রাম ও ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখতে সংবিধানসম্মত সকল বিষয়ে আলোচনার জন্য আমার দ্বার সর্বদা উন্মুক্ত। তাই, আলোচনার জন্য আপনি যে সময় চেয়েছেন, সে পরিপ্রেক্ষিতে আগামী ০১ নভেম্বর ২০১৮ তারিখ সন্ধ্যা ০৭-০০ টায়, আপনাদের আমি গণভবনে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।’

ঐক্যফ্রন্টের সাত দফায় কী আছে

বিএনপি, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া, জেএসডি ও নাগরিক ঐক্য নিয়ে গত ১৩ অক্টোবর জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আত্মপ্রকাশ ঘটে। সেদিন জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে করে এই ঘোষণা দেওয়া হয়। নতুন জোটের আহ্বায়ক করা হয় গণফোরামের সভাপতি ও সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. কামাল হোসেনকে। নতুন জোটের পক্ষে সাত দফা দাবি ও ১১ দফা লক্ষ্য ঘোষণা করেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন (বর্তমানে কারাবন্দি), গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী প্রমুখ।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সাত দফায় যা আছে :

১. অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষ্যে সরকারের পদত্যাগ, জাতীয় সংসদ বাতিল, সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে নির্বাচনকালীন নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকার গঠন এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াসহ সব রাজবন্দির মুক্তি ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার নিশ্চিত করতে হবে।

২. গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের সমন্বয়ে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন ও নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার না করার নিশ্চয়তা প্রদান করতে হবে।

৩. বাক, ব্যক্তি, সংবাদপত্র, টেলিভিশন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও সব রাজনৈতিক দলের সভা-সমাবেশের স্বাধীনতা এবং নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে।

৪. কোটা সংস্কার আন্দোলন, নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন, সাংবাদিকদের আন্দোলন এবং সামাজিক গণমাধ্যমে স্বাধীন মতপ্রকাশের অভিযোগে ছাত্রছাত্রী, সাংবাদিকসহ সবার বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার ও গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মুক্তির নিশ্চয়তা দিতে হবে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ সব কালো আইন বাতিল করতে হবে।

৫. নির্বাচনের ১০ দিন আগে থেকে নির্বাচনের পর সরকার গঠন পর্যন্ত ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতাসহ সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে হবে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়োজিত ও নিয়ন্ত্রণের পূর্ণ ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনের ওপর ন্যস্ত করতে হবে।

৬. নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে দেশি ও আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক নিয়োগের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা এবং সম্পূর্ণ নির্বাচন প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণে ভোট কেন্দ্র, পোলিং বুথ, ভোট গণনাস্থল ও কন্ট্রোল রুমে তাদের প্রবেশে কোনো প্রকার বিধিনিষেধ আরোপ না করা। নির্বাচনের সময়ে গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর যেকোনো ধরনের নিয়ন্ত্রণ বন্ধ করতে হবে।

৭. নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার তারিখ থেকে নির্বাচনের ফল চূড়ান্তভাবে প্রকাশিত না হওয়া পর্যন্ত চলমান সব রাজনৈতিক মামলা স্থগিত রাখা ও কোনো ধরনের নতুন মামলা না দেওয়ার নিশ্চয়তা প্রদান করতে হবে।

ঐক্যফ্রন্টের ১১ দফা লক্ষ্যে যা আছে :

১. মহান মুক্তিসংগ্রামের চেতনা ভিত্তিক বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে বিদ্যমান স্বেচ্ছাচারী শাসন ব্যবস্থার অবসান করে সুশাসন, ন্যায়ভিত্তিক, শোষণমুক্ত ও কল্যাণমূলক রাষ্ট্র গঠন করা। এক ব্যক্তিকেন্দ্রিক নির্বাহী ক্ষমতা অবসানকল্পে সংসদে, সরকারে, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য আনয়নসহ প্রশাসন বিকেন্দ্রীকরণ ও ন্যায়পাল নিয়োগ করা।

২. ৭০ অনুচ্ছেদসহ সংবিধানের যুগোপযোগী সংশোধন করা। জনগণের ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করাসহ সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানগুলোর গুরুত্বপূর্ণ পদে নির্দলীয়, নিরপেক্ষ, সৎ, যোগ্য ব্যক্তিদের নিয়োগদানের জন্য সাংবিধানিক কমিশন ও সাংবিধানিক কোর্ট গঠন করা।

৩. বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও ক্ষমতা নিশ্চিত করা এবং স্বচ্ছ নিয়োগ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিচারক নিয়োগের নীতিমালা প্রণয়ন ও সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠন করা।

৪. দুর্নীতি দমন কমিশনকে যুগোপযোগী করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সংস্কার নিশ্চিত করা, দুর্নীতিমুক্ত, দক্ষ ও জবাবদিহিমূলক প্রশাসন গড়ে তুলে সুশাসন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে দুর্নীতিকে কঠোর হস্তে দমন।

৫. দেশে বিনিয়োগ বৃদ্ধির পরিবেশ সৃষ্টি, বেকারত্বের অবসান ও শিক্ষিত যুবসমাজের সৃজনশীলতাসহ রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে নিয়োগদানের ক্ষেত্রে মেধাকে যোগ্যতা হিসেবে বিবেচনা করে প্রয়োজনীয় কোটা সংস্কার করা।

৬. সকল নাগরিকের জানমালের নিরাপত্তা ও মৌলিক মানবাধিকার নিশ্চিত করার বিধান করা, কৃষক শ্রমিক ও দরিদ্র জনগণের শিক্ষা, চিকিৎসা, বাসস্থান ও পুষ্টি সরকারি অর্থায়নে সুনিশ্চিত করা এবং নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করা।

৭. জনপ্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও স্থানীয় সরকারসহ রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানসমূহকে দুর্নীতি ও দলীয়করণের কালো থাবা থেকে মুক্ত করার লক্ষ্যে এসব প্রতিষ্ঠানের সার্বিক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করে প্রয়োজনীয় আইন প্রণয়ন ও কাঠামোগত সংস্কার সাধন করা।

৮. রাষ্ট্রের আর্থসামাজিক উন্নয়ন, জনগণের আর্থিক সচ্ছলতা ও সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকসহ রাষ্ট্রের সব আর্থিক প্রতিষ্ঠানের শৃঙ্খলা নিশ্চিত করা, জাতীয় সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহার, সুষম বণ্টন, ধনী-দরিদ্রের বৈষম্য দূরীকরণ ও জনকল্যাণমুখী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করা। নিম্ন আয়ের নাগরিকদের মানবিক জীবনমান নিশ্চিত করা এবং দ্রব্যমূল্যের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ বেতন-মজুরি কাঠামো নির্ধারণ করা।

৯. জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে জাতীয় ঐকমত্য গঠন এবং প্রতিশোধ, প্রতিহিংসা ও নেতিবাচক রাজনীতির বিপরীতে ইতিবাচক সৃজনশীল এবং কার্যকর ভারসাম্যের রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করা। কোনো জঙ্গিগোষ্ঠীকে বাংলাদেশের ভূখণ্ড ব্যবহার করতে না দেওয়া।

১০. ‘সকল দেশের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে শত্রুতা নয়’—এই নীতির আলোকে জনস্বার্থ ও জাতীয় নিরাপত্তাকে সমুন্নত রেখে স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করা এবং প্রতিবেশী দেশসমূহের সঙ্গে পারস্পরিক সৎ প্রতিবেশীসুলভ বন্ধুত্ব ও সমতার ভিত্তিতে ব্যবসা-বাণিজ্য, যোগাযোগ ও বিনিয়োগ ইত্যাদির ক্ষেত্রে আন্তরিকতাপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলার কার্যকর উদ্যোগ ও পদক্ষেপ গ্রহণ করা।

১১. বিশ্বের সব নিপীড়িত মানুষের ন্যায়সংগত অধিকার ও সংগ্রামের প্রতি পূর্ণ সমর্থন, মিয়ানমারের রোহিঙ্গা শরণার্থীদের তাদের দেশে ফেরত ও পুনর্বাসনের কূটনৈতিক তৎপরতা জোরদার এবং দেশের সার্বভৌমত্ব ও রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা সুরক্ষার লক্ষ্যে প্রতিরক্ষা বাহিনীর আধুনিক প্রশিক্ষণ এবং দেশের সার্বভৌমত্ব, প্রযুক্তি ও সমরসম্ভারে সুসজ্জিত, সুসংগঠিত ও যুগোপযোগী করা।

ওই সাত দফা দাবি ও ১১ লক্ষ্য নিয়ে আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংলাপে বসার আগ্রহ দেখিয়ে গত রোববার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চিঠি দেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন। চিঠির বিষয়বস্তু নিয়ে গতকাল সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত সবার সঙ্গে আলোচনা করেন। সেখানেই প্রধানমন্ত্রী সিদ্ধান্ত দেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে সংলাপে বসার।

বিকেলে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমণ্ডির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে দলটির সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানান, দেশের রাজনীতির জন্য একটি সুখবর আছে। যা সারা দেশের রাজনীতির অঙ্গনে স্বস্তির সুবাতাস বইয়ে দেবে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রস্তাবে সম্মত এবং আমরা সবাই এই ব্যাপারে আমাদের নেত্রীর সঙ্গে একমত যে আমরা ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের সঙ্গে সংলাপে বসব।’

ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে সংলাপের দিনক্ষণ পরে তাদের জানানো হবে জানিয়ে কাদের বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই তা হতে পারে। বহুল প্রত্যাশিত এই সংলাপে আওয়ামী লীগের পক্ষে দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নেতৃত্ব দেবেন বলেও জানান কাদের।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমরা কোনো প্রি-কন্ডিশন দেবো না। আর আমরা কারো চাপের মুখে নতিস্বীকার করিনি। আমাদের পক্ষ থেকে কাউকে সংলাপে ডাকিনি। সংলাপের দরজা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বন্ধ করে দিতে চান না।’

তবে এই সংলাপে নির্দিষ্ট কী বিষয়ে আলোচনা হবে, তা নিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের কিছু বলেননি।

এদিকে, ওবায়দুল কাদেরের সংবাদ সম্মেলনের পর গতকাল সন্ধ্যায় জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা সংলাপে বসার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানান।

এরপর গতকাল রাত সাড়ে ৮টার দিকে ওবায়দুল কাদের সংলাপের জন্য জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য মোস্তফা মহসিন মন্টুকে ফোন করে আমন্ত্রণ জানান। তিনি জানতে চান, ঐক্যফ্রন্টের কতজন সদস্য সংলাপে অংশ নেবেন। এ জন্য একটি তালিকা চান কাদের। মঙ্গলবার ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে একটি তালিকা পাঠানো হবে বলে জানান মন্টু।