সূচনা বক্তব্যে ‘পথ’ বের করার প্রত্যয় প্রধানমন্ত্রীর

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে চাই, যাতে জনগণ তাদের নেতা খুঁজে নিতে পারেন। কীভাবে সেই নেতৃত্ব খুঁজে নেবে, সে পথ বের করাই আমাদের কাজ।

শুক্রবার সন্ধ্যায় গণভবনে যুক্তফ্রন্টের নেতাদের সঙ্গে সংলাপের সূচনা বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গণতান্ত্রিক ধারা ছাড়া কোনো দেশের উন্নয়ন সম্ভব না। গণতান্ত্রিক ধারাটা অব্যাহত থাকুক। তাহলেই উন্নয়নের গতি সচল থাকবে।’

তিনি বলেন, ‘অনেক ঘাত-প্রতিঘাত ও বাধা-অতিক্রম করে আমরা গণতান্ত্রিক ধারাকে অব্যাহত রাখছি। জনগণের কল্যাণে কাজ করছি। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। উন্নয়নের এই ধারা অব্যাহত থাকুক, এটাই আমরা চাই।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘গণতান্ত্রিক ধারা বজায় থাকলে দেশের মানুষ স্বাধীনভাবে ভোট দিতে পারে। আমরা সেই সুযোগ সৃষ্টি করতে চাই।’

বক্তব্যের শুরুতে গণভবনে আসার জন্য যুক্তফ্রন্টের নেতাদের স্বাগত ও ধন্যবাদ জানান তিনি। বলেন, ‘গণভবন জনগণের ভবন। আপনারা এখানে এসেছেন, এজন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’

এর আগে সন্ধ্যা ৭টা ৪৪ মিনিটে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের সঙ্গে যুক্তফ্রন্টের সংলাপ শুরু হয়।

সংলাপে ১৪ দলীয় জোটের ২৩ সদস্যের নেতৃত্ব দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিপরীতে যুক্তফ্রন্টের ২১ সদস্যের নেতৃত্ব দিচ্ছেন জোট নেতা ও বিকল্পধারার চেয়ারম্যান ডা. একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী।

সংলাপে অংশ নিতে শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বি. চৌধুরীরা গণভবনের ব্যাংকোয়েট হলে প্রবেশ করেন। সন্ধ্যা ৬টা ৪০ মিনিটে বারিধারার বাসা থেকে গণভবনের উদ্দেশে তারা রওনা হন।

সংলাপে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোটের ২৩ নেতা উপস্থিত রয়েছেন। তারা হলেন, দলনেতা আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা, সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমদ, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, মোহাম্মদ নাসিম, ড. আবদুর রাজ্জাক, কাজী জাফর উল্যাহ, রমেশ চন্দ্র সেন, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, ডা. দীপু মনি, আবদুর রহমান, দফতর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, আইনবিষয়ক সম্পাদক শ ম রেজাউল করিম, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও জাসদের একাংশের সভাপতি মইন উদ্দীন খান বাদল।

আর যুক্তফ্রন্টের ২১ নেতা সংলাপে উপস্থিত রয়েছেন। তারা হলেন, দলনেতা ডা. একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী, বিকল্পধারার মহাসচিব মেজর (অব.) আব্দুল মান্নান, প্রেসিডিয়াম সদস্য শমসের মবিন চৌধুরী, গোলাম সারোয়ার মিলন, আবদুর রউফ মান্নান, ইঞ্জিনিয়ার মুহম্মদ ইউসুফ, সহ-সভাপতি মিসেস মাহমুদা চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার ওমর ফারুক, সহ-সভাপতি মাহবুব আলী, সাবেক সংসদ সদস্য এইচ এম গোলাম রেজা, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (ন্যাপ) সভাপতি জেবেল রহমান গাণি, মহাসচিব এম গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া, বিএলডিপি সভাপতি নাজিম উদ্দিন আল আজাদ, মহাসচিব অ্যাডভোকেট দেলোয়ার হোসেন খান, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এনডিপি) চেয়ারম্যান খোন্দকার গোলাম মোর্ত্তজা, জাতীয় জনতা পার্টির সভাপতি শেখ আসাদুজ্জামান, বাংলাদেশ জনদলের চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান জয় চৌধুরী, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ইউনাইটেড মাইনরিটি ফ্রন্টের চেয়ারম্যান দীলিপ কুমার দাস, লেবার পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হামদুল্লাহ আল মেহেদী, সাবেক এমপি মজহারুল হক শাহ চৌধুরী ও এনডিপি’র মহাসচিব মো. মাযহারুল হোসেইন ঈসা।

এর আগে গত ৩১ অক্টোবর বিকল্পধারার চেয়ারম্যান বি. চৌধুরী সংলাপ চেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চিঠি দেন। এরপর গণভবনে তাদের শুক্রবার সংলাপের আমন্ত্রণ জানিয়ে চিঠি দেয় আওয়ামী লীগ।

এরপর গতকাল বৃহস্পতিবার বিকল্পধারা সংলাপের জন্য দলের নেতাদের তালিকা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের কাছে দেন। চিঠিটি সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগ সভাপতির কার্যালয়ে পৌঁছে দেন বিকল্পধারার সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার ওমর ফারুক।

একইসঙ্গে গণভবনে নৈশভোজে সাদা ভাত, লাল আটার রুটি, ফুলকপি, সিম, আলু ভাজি, যেকোনো মাছের ঝোল ও মসুরের ডাল রখার জন্য বি. চৌধুরীর পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হয়।