খালেদা জিয়ার নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে আপিলে যাচ্ছে বিএনপি

khaleda zia

জিয়া অরফানেজ-জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে দেয়া সাজার বিরুদ্ধে আপিল করবে বিএনপি। আইনগতভাবে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে চায় দলটি।

মঙ্গলবার রাতে বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতা ও আইনজীবীদের এক সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

বৈঠকে দুই মামলায় খালেদা জিয়াকে দেয়া সাজার বিরুদ্ধে আপিল ও জামিন চাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

বৈঠকে অংশ নেয়া নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সিনিয়র আইনজীবী জানান, খালেদা জিয়ার সাজার বিরুদ্ধে আপিল করার বিষয়ে এবং তার জামিন চাওয়ার বিষয়ে আমরা আইনগত দিক নিয়ে আলোচনা করেছি। বৈঠকে সাজার বিরুদ্ধে আপিল ও জামিনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

তিনি বলেন, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে বিচারিক আদালতের দেয়া পাঁচ বছরের সাজা থেকে বাড়িয়ে ১০ বছর করেন হাইকোর্ট। এ রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি এখনও প্রকাশিত হয়নি। অনুলিপি প্রকাশিত হলে আমরা লিভ-টু আপিল (নিয়মিত আপিল) করব।

তিনি জানান, এর আগেই আমরা চেম্বার আদালতে এ রায়ের বিরুদ্ধে আবেদন (সিএমপি) ফাইল করব। পাশাপাশি খালেদা জিয়ার জামিনও চাওয়া হবে। আর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় বিচারিক আদালতে খালেদা জিয়াকে দেয়া সাত বছরের সাজার বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল এবং জামিনও চাওয়া হবে। আগামী দুই-তিন দিনের মধ্যে আশা করছি ওই রায় প্রকাশিত হবে।

বৈঠকের বিষয়বস্তু সম্পর্কে খালেদা জিয়ার আইনজীবী বিএনপির গণশিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক সানাউল্লাহ মিয়া বলেন, আগামী নির্বাচনে খালেদা জিয়া যেন অংশ নিতে পারেন, সে লক্ষ্যে আপিল ও জামিন চাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসনকে ১৭ বছরের সাজা দেন দুই আদালত।

ফলে তার নির্বাচনে অংশগ্রহণ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। সেই সাজার বিরুদ্ধে আমরা আইনগত দিক নিয়ে আলোচনা করেছি। বৈঠকে সাজার বিরুদ্ধে আপিল ও জামিন চাওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। তা ছাড়া ম্যাডামের বিরুদ্ধে থাকা অন্যান্য মামলার বিষয়েও আলোচনা হয়েছে।

সন্ধ্যা ৬টা থেকে শুরু হওয়া বৈঠক চলে প্রায় দুই ঘণ্টা। বৈঠকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ, জমিরউদ্দিন সরকার, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, জয়নুল আবেদীন, এজে মোহাম্মদ আলী, যুগ্ম মহাসচিব এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক মাসুদ আহমেদ তালুকদার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

গত ৮ ফেব্রুয়ারি বকশীবাজারে কারা অধিদফতরের প্যারেড গ্রাউন্ডে স্থাপিত ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক ড. মো. আখতারুজ্জামান জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন। এ দিন থেকে তিনি কারাগারে আছেন। পরে দুদকের আপিলের পরিপ্রেক্ষিতে একই মামলায় খালেদার সাজা বাড়িয়ে ১০ বছর করা হয়। আর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে সাত বছর সাজা দেন আদালত।