গণধর্ষণের ‘মূল ইন্ধনদাতা’ আ.লীগ থেকে বহিষ্কার

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট দেওয়াকে কেন্দ্র করে বিতণ্ডার জেরে নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার স্বামী-সন্তানদের বেঁধে রেখে এক নারীকে মারধর ও গণধর্ষণের ঘটনার ‘মূল ইন্ধনদাতা’ মো. রুহুল আমিনকে দল থেকে বহিষ্কারের সুপারিশ করা হয়েছে।

সুবর্ণচর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট ওমর ফারুক আজ শনিবার সকালে বলেছেন, ‘উপজেলা কমিটির প্রচার সম্পাদক রুহুল আমিনকে বহিষ্কারের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। গতকাল রাতে উপজেলা কমিটির এক সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। রুহুল আমিনকে দলের সব কাজ থেকে অব্যাহিত দেওয়া হয়েছে।’

আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র অনুসারে, দলের যেকোনো নেতাকে বহিষ্কারের এখতিয়ার কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের। কমিটি বাতিলের ক্ষমতাও কেন্দ্রের। তবে শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে কাউকে সাময়িক বহিষ্কারের সুপারিশ করার ক্ষমতা তৃণমূলের আছে। এ ক্ষেত্রে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার কেন্দ্রীয় কমিটিরই।

ভোট দেওয়াকে কেন্দ্র করে ভোটের দিন রাতে সুবর্ণচরের চরজুবলী ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডে একটি বাড়িতে এক নারীকে মারধর ও গণধর্ষণের ঘটনা ঘটে। পরে ভুক্তভোগীর স্বামী নয়জনকে আসামি করে থানায় মামলা করেন।

মামলার আসামিরা হলো মো. সোহেল (৩৫), হানিফ (৩০), স্বপন (৩৫), চৌধুরী (২৫), বেচু (২৫), বাসু ওরফে কুড়াইল্যা বাসু (৪০), আবুল (৪০), মোশাররফ (৩৫) ও সালাউদ্দিন (৩৫)। এরা সবাই সুবর্ণচরের মধ্যবাইগ্গা গ্রামের বাসিন্দা।

মামলার বাদী উল্লেখ করেন, গত ৩০ ডিসেম্বর ভোট গ্রহণ শেষে সরকারি দলের সমর্থক মোশারফ, সালাউদ্দিন ও সোহেলসহ ১০-১২ জন তাঁর বাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। এ সময় আসামিরা তাঁকে ও তাঁর মেয়েসহ বাড়ির অন্যদের পিটিয়ে আহত করে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে রাখে। পরে তারা তাঁর স্ত্রীকে ধর্ষণ করে এবং পিটিয়ে মারাত্মকভাবে আহত করে। পরের দিন সকালে এলাকাবাসী এসে তাঁদের উদ্ধার করে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ওই নারী।

এরই মধ্যে এ ঘটনার ‘মূল ইন্ধনদাতা’ সুবর্ণচর উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক মো. রুহুল আমিনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ছাড়া বেচু মিয়া, বাসু ওরফে কুড়াইল্যা বাসু, মো. স্বপন, মো. সোহেল, জসিম উদ্দিন ও হাসান আলী বুলুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ওই নারী ও তাঁর স্বামীকে দেখতে যান এবং তাঁর বক্তব্য শোনেন। এ সময় ওই নারী মো. রুহুল আমিনকে মামলার আসামি থেকে বাদ দেওয়ার ব্যাপারে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। ডিআইজি পরে সংবাদিকদের বিষয়টি ‘রাজনীতির বাইরে রেখে’ সুষ্ঠু ও যথাযথ তদন্ত করে দোষীদের বিচারের আওতায় আনার আশ্বাস দেন। পুলিশের এ প্রতিনিধিদলটি ঘটনাস্থলও পরিদর্শন করে।