পান চাষ লাভজনক হওয়ায় যশোরের কেশবপুর উপজেলায় পান চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে। কেশবপুর শহরে শনি, সোম ও বুধবারে পানের হাট বসে। বিভিন্ন অঞ্চলের পান ব্যাবসায়ীরা কেশবপুর বাজারের পান হাট থেকে পান ক্রয় করে রাজধানী ঢাকাসহ বিদেশেও রপ্তানি করে। ফলে পান চাষ করে লাভের মুখ দেখছেন পান চাষীরা।
পান চাষীরা জানান, গত বছর জলাবদ্ধতা থাকায় অনেক পান বরজ পানিতে তলিয়ে পানের ক্ষেত নষ্ট হওয়ার কারণে অনেক পান চাষীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন। এবছর জলাবদ্ধতা না থাকায় পান চাষে ঝুঁকে পড়েছেন অনেক কৃষকরা।
উপজেলার চালিতাবাড়িয়া. শ্রীরামপুর, সাঁগরদাড়ি, কোমরপুর, মঙ্গলকোট, আলতাপোল, ব্রহ্মকাটি, রামচন্দ্রপুর, মধ্যকুল, পাঁজিয়াসহ অনেক গ্রামে এ পান চাষ হয়। উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে ঘুরে দেখা গেছে পানের বরজ।
ব্রহ্মকাটি গ্রামের তারিফ মোড়ল ও হযরত আলী জানান, গতবছর জলাবদ্ধতার কারণে পান বরজে হালকা পানি উঠায় আমরা কিছুটা ক্ষতির সম্মুখিন হয়ে পড়েছিলাম। এবছর জলাবদ্ধতা না থাকায় বরজে ব্যাপক ফলন হয়েছে। বাজারে পানের দামও যথেষ্ট ভাল পাওয়া যাচ্ছে। তাদের মতে, দেড় থেকে দু’বিঘা জমিতে পানের বরজ থাকলে এবং তার সঠিক পরিচর্যা ও সংরক্ষণ করতে পারলে অধিক লাভবান হওয়া যায়।
কোমরপুর গ্রামের পান চাষী রমজান আলী জানান, গত বছর কপোতাক্ষ নদের উপচে পড়া পানিতে আমার প্রায় ২ শতক জমির পান নষ্ট হয়েছিল। যার কারণে আমি অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলাম। এবছর জলাবদ্ধতা না থাকায় পানের বরজে শুধু ফলন আর ফলন ধরেছে। পান বিক্রি করে সংসার চালানো সহ ছেলে-মেয়েদের পড়া শোনার খরচও চালিয়ে যাচ্ছি ভালো ভাবে।
পান চাষী আবদুল মালেক, আনন্দ রায়, রবীন দাস, গোবিন্দ রায়, গৌর পদ দাস, গোলাম মোস্তফা, আলা উদ্দীন আলী, আবদুল খালেকসহ অনেকেই জানান- আমরা কেশবপুর শহরে প্রতি হাটবারে পান হাটায় পান বিক্রি করি। আমাদের কাছ থেকে বিভিন্ন অঞ্চলের পান ব্যবসায়ীরা পান ক্রয় করে রাজধানী ঢাকাসহ বিদেশেও রপ্তানি করে। কেশবপুর উপজেলার প্রধান বাজারসহ বিভিন্ন হাট বাজারের দোকানদাররা পান ক্রয় করে খিলি পান হিসাবে ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করে থাকে।
উপজেলা কৃষি অফিসার মহাদেব চন্দ্র সানা বলেন, কেশবপুর উপজেলায় কৃষকরা ২৪৭ হেক্টর জমিতে পান চাষ করেছে। গত বছরের তুলনায় এবছর বেশির ভাগ কৃষকরা পান চাষ করেছেন। তিনি মাঝে মধ্যে এসব এলাকায় ঘুরে পান চাষী কৃষকদের বিভিন্ন পরামর্শ দেয়া অব্যহত রেখেছেন বলে জানান।