‘চট্টগ্রামে নির্বাচনকালীন ২৫০০ মামলার এজাহারের ভাষা ও ঘটনা একই’

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ও পরে চট্টগ্রামে আড়াই হাজার গায়েবি মামলার এজাহারের ভাষা ও ঘটনা একই, শুধু আসামির নাম ও তারিখ পরিবর্তন করা হয়েছে বলে দাবি করেছে চট্টগ্রামের জাতীয়বাদী আইনজীবী ফোরাম।

নিম্ন আদালতগুলোতে সরকারের অতিরিক্ত নিয়ন্ত্রণের কারণে আসামিরা হয়রানির শিকার হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন আইনজীবী নেতারা।

সোমবার সকালে চট্টগ্রাম আইনজীবী সমিতির অডিটরিয়ামে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন বক্তারা।

সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সদস্য অ্যাডভোকেট দেলোয়ার হোসেন, চট্টগ্রাম আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট বদরুল আনোয়ার, চট্টগ্রাম জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জহুরুল আলম, মহানগর বিএনপির সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট মফিজুল হক ভূঁইয়া ও অ্যাডভোকেট আব্দুস সাত্তার বক্তব্য দেন।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুসারে রাজনৈতিক কর্মীরা নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করলে আদালত মামলার মেরিট বিবেচনা করছেন না। আদালত রাজনৈতিক বিবেচনায় আসামিদের জেলহাজতে পাঠাচ্ছেন। এ ছাড়া এতে নিম্ন আদালত সরাসরি সরকারের নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে বলে অভিযোগ করা হয়।

চট্টগ্রাম আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট বদরুল আনোয়ার বলেন, দেশে যে অবস্থা বিরাজ করছে, আইনের শাসন বলতে কিছু নেই। আমি আইন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। উনারা বলছেন, উনারা অসহায়। এই যে হস্তক্ষেপ, নগ্ন হস্তক্ষেপ এখান থেকে যদি দেশ বের হতে না পারে তাহলে কিন্তু আমরা যতই বলি দেশের মঙ্গল আমরা কামনা করতে পারব না।’

নিজেদের জায়গা থেকে আইনজীবীদের প্রতি এই ব্যাপারগুলো তুলে ধরার আহ্বান জানান বদরুল আনোয়ার।

বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সদস্য অ্যাডভোকেট দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘উচ্চ আদালতে বিচার পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু নিম্ন আদালতের ক্ষেত্রে যেটা হয়েছে, সরকার নিম্ন আদালতকে সরাসরি চাপের মুখে রেখে কন্ট্রোল করতেছে। একদম সরাসরি করতেছে। কোনো কোনো কোর্ট স্পষ্ট করে বলছে, আপনারা জানেন না? আমরা খুব চাপে আছি।’

দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমাদের বলতে হয়েছে, শুধু আমরা না সারা দেশের মানুষ জানে নিম্ন আদালতের জজ সাহেবদের চাপে রাখা হয়েছে। পুলিশের রেফারেন্সে বলা আছে, প্রত্যেকটি এজাহারের ভাষা একই, শুধু নামগুলো চেঞ্জ করে একটা তারিখ ঠিক করে দেওয়া হচ্ছে। একাদশ জাতীয় নির্বাচনের আগে পরে চট্টগ্রামে আড়াই হাজার এমন মামলা হয়েছে, যার এজাহারের ঘটনা একই রকম, শুধু নাম ও তারিখ পরিবর্তন করা হয়েছে।’