রাবিতে ১১ মার্চ চতুর্থবারের মত শুরু হচ্ছে চিহ্নমেলা

রাবি প্রতিনিধি: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ছোটকাগজ ‘চিহ্ন’র আয়োজনে চতুর্থবারের মত দুই দিনব্যাপী ‘চিহ্নমেলা’ শুরু হচ্ছে আগামী ১১ মার্চ। শনিবার দুপুরে ডিন্স কমপ্লেক্সের শিক্ষক লাউন্সে চিহ্ন আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান চিহ্নের সম্পাদক ও মেলার আহ্বায়ক অধ্যাপক শহীদ ইকবাল।

‘চিরায়িতবাঙলা’ এ স্লোগানে এবারের মেলায় ভারতের ৩০টি ও বাংলাদেশের ৯৫টি ছোটকাগজ অংশ গ্রহণ করাবে। দুই দেশের দুই শতাধিক ছোটকাগজ ও পত্রিকার কর্মী-সম্পাদক-লেখক-পাঠকের সম্মেলন ঘটবে বলে আশা প্রকাশ করছেন আয়োজক সংস্থা। এছাড়া এবারের মেলায় ১৩০ টি স্টল থাকবে।

এবারের চিহ্নমেলায় সৃজনশীল ও মননশীল শাখায় প্রান্তিক দুজন লেখক-সাহিত্যিকসহ দুই বাংলার ৮টি ছোটকাগজকে সম্মননা প্রদান করা হবে। এর মধ্যে ভারতের ৩টি ও বাংলাদেশের ৫টি ছোটকাগজকে সম্মাননা দেয়া হবে

এবার সৃজনশীল শাখায় পুরস্কার কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর উপজেলার নতুন অন্তরপুর গ্রামের সরকার মাসুদ (১৯৬১)। তার প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থগুলো হলো, আবহমান উলুধ্বনি (১৯৮৭), নিভৃতিচর্চা (১৯৯১), কাচপোকার ঘূর্ণিপোকা (১৯৯৬), নির্বাচিত কবিতা (২০০৭), জঙ্গলের চাবি (২০১৩)। এছাড়া তিনি রচনা করেন ৩টি গল্পগ্রন্থ ও প্রবন্ধের বই।

মননশীল শাখায় নির্বাচিত হয়েছেন যশোর জেলার কৃষ্ণনগরের হোসেনউদ্দীন হোসেন (১৯৪১)। তার কাব্যগ্রন্থগুলো হলো, যশোরাদ্য দেশ (১৯৭৪), অমৃত বৈদেশিক (১৯৭৪), ঐতিহ্য আধুনিকতা ও আহসান হাবীব (১৯৮৫), বাংলার বিদ্রোহ (১ম-৩য় খ-, ১৯৯০), রণক্ষেত্রে সারাবেলা (২০১২), সাহিত্যে চিত্রবিচিত্র (২০১৯), কালান্তরের রূপরেখা (২০১৯)।

মেলার প্রথম দিন সকাল ১০টায় উদ্বোধন ও র‌্যালির মাধ্যমে দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের পর্দা উঠবে। এরপর থাকবে কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হকের সভাপতিত্বে প্রভাত চৌধুরীর রবীন্দ্র-তর্পন। ‘ডিজিটাল বাংলাদেশে বাঙালি জীবনের সাহিত্য’ বিষয়ে কথা বলবেন প্রভাত চৌধুরী, সনৎকুমার সাহা, জুলফিকার মতিন, মহীবুল আজিজ, প্রবালকুমার বসু, ইমানুল হক, কানাই সেন ও সোয়েব শাহরিয়ার।

আলোচনা অনুষ্ঠানে থাকবে ‘ছোট প্রকাশনা : সম্ভাবনা ও সমস্যা’, চিহ্ন প্রকাশিত ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতিচর্চা’ গ্রন্থটির পাঠ উন্মোচন, ‘কবির প্যাথোস ও আজকের কবিতা’ এবং ‘সাহিত্য পাঠের সমাজতত্ত্ব ও ছোট পত্র-পত্রিকা’ শীর্ষক কথাশিল্পী দেবেশ রায়ের বক্তৃতা, ‘বিবর্তনের আলোয় সংগ্রহের ইতিহাস-১’ শীর্ষক বিশেষ প্রদর্শনীটিও চিত্তাকর্ষক হবে। শেষে থাকবে অংশগ্রহণকারী সম্পাদকদের ক্রেস্ট প্রদান ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

কবিতা পাঠ দিয়ে শুরু হবে মেলার দ্বিতীয় দিন। এরপর ‘সাহিত্য ও বিজ্ঞান : দোঁহে অভেদ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে বিধানচন্দ্র দাসের প্রবন্ধকে কেন্দ্র করে কথা বলবেন ইমেরিটাস অধ্যাপক অরুণ কুমার বসাক, অধ্যাপক মুহম্মদ নূরুল্লাহ্, অধ্যাপক গোলাম কবীর ও অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার। ‘এই যে আমি চলেছি’ শিরোনামে প্রবালকুমার বসুর সঙ্গে আড্ডা, ‘গল্পের দোয়েল ফড়িং ও বৈদ্যুতিন মানুষ’ কিংবা ‘এ পর্যন্ত লিটলম্যাগ : বয়ে চলা স্বপ্ন’ শিরোনামে আলোচনা, আবৃত্তি-সংগঠন স্বনন-এর বসন্তের কবিতা পাঠ, বিশেষ প্রদর্শনী ‘বিবর্তনের আলোয় সংগ্রহের ইতিহাস-২’ অনুষ্ঠিত হবে। সবশেষে চিহ্ন পুরস্কার ও ছোটকাগজ সম্মাননার পর সঙ্গীত পরিবেশন করবে কলকাতার গানের দল ‘মনভাষা’।

প্রসঙ্গত, উনিশ বছর বয়সী ‘চিহ্ন’ তিন বছর পরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ্ কলাভবন চত্বরে চিহ্নমেলার আয়োজন করে। ২০১১ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে এই মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। এছাড়া চিহ্নের ‘স্নান’ নামে একটি সংবাদপত্র রয়েছে।#