ফায়ারম্যান রানাকে অশ্রুভেজা বিদায়

মানুষকে বাঁচানোর দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে না ফেরার দেশে চলে যাওয়া ফায়ার সার্ভিস কর্মী সোহেল রানাকে চোখের জলে বিদায় জানালেন তার সহকর্মীরা।

মঙ্গলবার বেলা ১১টায় ঢাকায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সদর দপ্তরে রানার জানাজা হয়।

তারপর রানার কফিন নিয়ে কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলার চৌগাংগা গ্রামের উদ্দেশে রওনা হয় একটি গাড়ি। সেখানে গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হবে দৃষ্টান্ত স্থাপন করে যাওয়া ২৫ বছর বয়সী এই উদ্ধারকর্মীকে।

গত ২৮ মার্চ বনানীর এফআর টাওয়ারে আগুন লাগার পর উদ্ধার অভিযানে যোগ দিয়েছিলেন কুর্মিটোলা ফায়ার স্টেশনের ফায়ারম্যান রানা। ২৩ তলা ওই ভবনে আটকা পড়া মানুষদের ল্যাডারের মাধ্যমে নামাচ্ছিলেন তিনি।

এক পর্যায়ে ল্যাডারে পা আটকে তিনি দুর্ঘটনায় পড়েন। তার ডান পা কয়েক জায়গায় ভেঙে যায়, সেফটি বেল্টের চাপে পেটের একটি অংশ থেঁতলে যায়।

ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে ভর্তি করে কয়েক দিন চিকিৎসা দেওয়ার পর রানাকে পাঠানো হয় সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোববার গভীর রাতে মারা যান রানা।
সোমবার রাতে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে রানার কফিন দেশে আসার পর তা সিএমএইচের হিমঘরে রাখা হয়। তার আগে বিমানবন্দরেই রানার কফিনে বাহিনীর পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানানো হয়।

সকালে তার মরদেহ ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তরে নেওয়া হলে আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। বাহিনীর কমলা রঙের পতাকায় মোড়া সোহেল রানার কফিনের সামনে সহকর্মীদের অনেকেই আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন।

জানাজার আনুষ্ঠানিকতায় স্বজনদের পক্ষ থেকে বক্তব্য দিতে এসে কান্নায় ভেঙে পড়েন রানার ছোট ভাই। পরিবারের অবলম্বন হারিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সহায়তা চান তিনি।

জানাজা শেষে সোহেল রানার পরিবারকে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।

ফায়ার সার্ভিসের সদ্য সাবেক মহাপরিচালক আলী আহমেদ খান, লালবাগ বিভাগের পুলিশ উপ-কমিশনার মোহাম্মদ ইব্রাহীম খানসহ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ফায়ার সার্ভিসের বিভিন্ন স্থরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা রানার জানাজায় অংশ নেন।