৫০ কোটি টাকা দেওয়া হলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে খুন করবো। সদ্য প্রকাশিত একটি ভিডিও ফুটেজে এই কথা বলতে শোনা গেছে লোকসভা নির্বাচনে মোদীর বিরুদ্ধে প্রার্থী হওয়া তেজবাহাদুর যাদবকে। দু্ই বছর আগে ভিডিওটি ধারণ করার সময় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী-বিএসএফের জওয়ান ছিলেন তিনি। পরে জওয়ানদের ভালো খাবার দেয়ার দাবি তুলে বরখাস্ত হন।
তেজবাহাদুর স্বীকার করেছেন যে প্রকাশিত ভিডিও ফুটেজে তিনিই ছিলেন। তাঁর অভিযোগ, ভোটের মওসুমে এ ধরনের ভিডিও প্রকাশ্যে আসার পিছনে ষড়যন্ত্র রয়েছে৷ ভিডিও প্রকাশিত হওয়ায় তেজবাহাদুরের কড়া সমালোচনা করেছে বিজেপি।
সোমবার দিল্লিতে বিজেপি সাংসদ জিভিএল নরসিমা রাও বলেন, ‘বারানসী আসনে সমাজবাদী পার্টির প্রার্থীর বক্তব্য শুনে আমরা স্তম্ভিত। তিনি যেভাবে ৫০ কোটি টাকার বিনিময়ে প্রধানমন্ত্রীকে খুন করার কথা বলেছেন তা ভাবা যায় না। কংগ্রেসের মতো দল এ ধরনের অসামাজিক ব্যক্তিকে সমর্থন করছে। তাদের সরকার নিয়ে কোনও উদ্বেগ নেই। বিষয়টি অত্যন্ত নিন্দনীয়। সব তদন্তকারী সংস্থার উচিত, এই বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করা।’
চলতি লোকসভা নির্বাচনে বারাণসী কেন্দ্রে মনোনয়নপত্র পেশ করেছিলেন তেজবাহাদুর যাদব। কিন্তু কমিশন তেজবাহাদুরের মনোনয়নপত্র খারিজ করে দেয়। কমিশনের ওই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে সোমবার সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছেন তেজবাহাদুর।
জানা গেছে, দুই বছর আগে সেনা জওয়ানদের দেওয়া খাবারের মান নিয়ে অভিযোগ তুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট করেছিলেন তেজবাহাদুর। সেই পোস্ট নিয়ে তোলপাড় হয়। ঘটনার জেরে ২০১৭-য় তেজবাহাদুরকে বরখাস্ত করে বিএসএফ।
এবারের লোকসভা নির্বাচনে সমাজবাদী পার্টির টিকিটে তেজবাহাদুর বারাণসী কেন্দ্রে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে প্রার্থী হন। তেজবাহাদুর ২৪ এপ্রিল নির্দলীয় প্রার্থী হিসাবে বারাণসী কেন্দ্রে তাঁর প্রথম মনোনয়ন পেশ করেন। ওই দিন মনোনয়নপত্রের সঙ্গে দেওয়া হলফনামায় তেজবাহাদুর চাকরি থেকে বরখাস্ত হওয়ার কথা উল্লেখ করেছিলেন।
পরে ২৯ এপ্রিল তিনি সমাজবাদী দলের প্রার্থী হিসাবে দ্বিতীয়বার মনোনয়ন পেশ করেন। যদিও দ্বিতীয়বার পেশ করা হলফনামায় তেজবাহাদুর চাকরি থেকে বরখাস্ত হওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করেননি। কমিশন তেজবাহাদুরের মনোনয়ন বাতিল করতে গিয়ে জানায়, তাঁর দেওয়া দু’টি হলফনামার মধ্যে মিল নেই। এছাড়াও ভোটে লড়তে হলে বিএসএফের কাছ থেকে ‘নো অবজেকশন সার্টিফিকেট’ দেওয়া জরুরি ছিল। কিন্তু তেজবাহাদুর সেই প্রশংসাপত্র জমা দেননি।
তবে তিনি অভিযোগ করেন, তাঁর মনোনয়ন বাতিলের পিছনে বিজেপির চক্রান্ত রয়েছে। নো অবজেকশন’ সার্টিফিকেট জমা না দেওয়ার যে কথা বলা হচ্ছে তা ঠিক নয়। তিনি ‘এনওসি’ জমা করেছিলেন, এমনটাই দাবি তাঁর।