ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবিতে নিহত ৬৫ অভিবাসীর অধিকাংশই বাংলাদেশি

ভূমধ্যসাগরের তিউনিসিয়া উপকূলে নৌকাডুবিতে নিহত ৬৫ জন অভিবাসীর অধিকাংশই ছিলেন বাংলাদেশি। এ ছাড়া ওই নৌকাডুবিতে যে ১৬ জনকে উদ্ধার করা হয়, তার ১৪ জনই বাংলাদেশি বলে জানা গেছে। তিউনিসিয়া রেড ক্রিসেন্টের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।

উদ্ধার হওয়া অভিবাসীরা জানান, ওই নৌকায় অন্তত ৫১ বাংলাদেশি ছিলেন। এ ছাড়া তাঁদের মধ্যে মিসরের তিনজন, মরক্কো, শাদ ও আফ্রিকার কয়েকটি দেশের আরো কয়েকজন নাগরিক ছিলেন।

বিবিসি জানায়, দুর্ঘটনার শিকার নৌকাটি গত বৃহস্পতিবার লিবিয়ার জুয়ারা শহর থেকে ইতালির উদ্দেশে রওনা দেয়। এর মধ্যে গভীর সাগরে যখন তাঁদের বড় নৌকা থেকে ছোট নৌকায় তোলা হয়, তার কিছুক্ষণ পরই সাগরের উত্তাল ঢেউয়ের মুখে নৌকাটি ডুবে যায়।

এদিকে, নৌকাডুবির পর তিউনিসিয়ার জেলেরা ১৬ জনকে উদ্ধার করে জারজিজ শহরের তীরে নিয়ে যান। উদ্ধার হওয়া অভিবাসীরা জানান, সাগরের ঠাণ্ডা পানিতে প্রায় আট ঘণ্টা ভেসে ছিলেন তাঁরা।

লিবিয়ার ত্রিপোলিতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শেখ সিকান্দার আলী বিবিসিকে বলেন, তাঁরা দুর্ঘটনার কথা জানেন এবং তিউনিসিয়ার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তাঁদের যোগাযোগ চলছে। যত দ্রুত সম্ভব তাঁরা জারজিজে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। তিনি আরো বলেন, লড়াই চলার কারণে সড়কপথে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না বলে তাঁদের আকাশপথে যেতে হবে।

তিউনিসিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে জানানো হয়, নৌকাডুবির খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দেশটির নৌবাহিনী দুর্ঘটনাস্থলে একটি উদ্ধারকারী জাহাজ পাঠায়। সেখানে পৌঁছালে দেখা যায়, মাছ ধরার একটি নৌকা জীবিতদের উদ্ধার করে নৌকায় তুলছে।

জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর জানায়, উদ্ধারকৃত অভিবাসীদের তিউনিসিয়া উপকূলে নিয়েছে দেশটির নৌবাহিনী। অভিবাসীদের নৌকা থেকে উপকূলে নামানোর ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের অনুমতির অপেক্ষা করছেন তাঁরা। কয়েকজনকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।

প্রতিবছর ভূমধ্যসাগর হয়ে ইউরোপে পাড়ি দিতে গিয়ে প্রাণ হারান হাজার হাজার অভিবাসী। ইউএনএইচসিআরের মতে, চলতি বছরের প্রথম চার মাসে সমুদ্রপথে কেবল লিবিয়া থেকে ইউরোপে যাওয়ার পথে অন্তত ১৬৪ জনের প্রাণহানি ঘটে।