মোবাইল সেবায় শুল্ক বাড়ানো আত্মঘাতী: এএমটিওবি

phone call

বাজেটে মোবাইল ফোন ব্যবহারের ওপর শুল্ক বৃদ্ধির প্রস্তাবকে আত্মঘাতী বলে অভিহিত করেছে মোবাইল ফোন অপারেটরদের সংগঠন এসোসিয়েশন অব মোবাইল টেলিকম অপারেটরস অব বাংলাদেশ (এএমটিওবি)। ২০১৯-২০ অর্থবছরে মোবাইল ফোনের সব রকম সেবায় শতকরা ৫ ভাগ সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে। শনিবার তারা সরকারের এ সিদ্ধান্তকে আত্মঘাতী বলে আখ্যায়িত করে।

বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে বাজেট পেশ করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি মোবাইল ফোনের সব রকম সেবার ওপর বিদ্যমান শতকরা ৫ ভাগ শুল্ক বাড়িয়ে ১০ ভাগ করার প্রস্তাব দিয়েছেন।

এএমটিওবি’র সাধারণ সম্পাদক এসএম ফরহাদ বলেছেন, ইতিমধ্যেই দেশের এক কোটি ৬০ লাখ ৫ হাজার মোবাইল ফোন ব্যবহারকারী শতকরা ১৫ ভাগ ভ্যাট দিচ্ছেন। সঙ্গে ফোনকল ও এসএমএস খাতে শতকরা একভাগ সারচার্জ দিচ্ছেন এবং ইন্টারনেট ডাটা ব্যবহারে শতকরা ৭.৫ ভাগ ভ্যাট দিচ্ছেন। এর ওপর সরকারের ওই শুল্ক বাড়ানোর সিদ্ধান্তে এসব মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর ওপর বোঝা বাড়বে।

নতুন করে শুল্ক আরোপের ব্যাপারে এএমটিওবি বিবৃতিতে বলেছে, এমন আত্মঘাতী সিদ্ধান্তে আমরা নিরুৎসাহিত হয়ে পড়েছি এবং আমাদের হৃদয় পুরোপুরি ভেঙে গেছে। ডিজিটাল বাংলাদেশের দর্শনকে বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে টেলিকম শিল্প যে উল্লেখযোগ অবদান রেখে চলেছে ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে তাকে খাটো করে দেখা হয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এতে আমরা গভীরভাবে বেদনাহত। ওদিকে জাতীয় সংসদে বাজেট উত্থাপনের পর পরই জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ওই রাতেই নতুন সম্পূরক শুল্ক বাস্তবায়নের জন্য সব মোবাইল অপারেটরদের কাছে রেগুলেটরি নির্দেশনা পাঠিয়েছে।

এএমটিওবি বলেছে, ব্যাপকভাবে স্বীকৃত বিষয় হলো বিশ্বে সবচেয়ে বেশি ট্যাক্স চাপিয়ে দেয়া হয়েছে বাংলাদেশের টেলিকম সেক্টরে। এই ট্যাক্সের বোঝা চাপিয়ে দেয়ায় ক্ষতিকর প্রভাব যা হবে তা হলো, বছরের পর বছর চারটি অপারেটরের মধ্যে তিনটি লোকসান দিতে থাকবে।
উপরন্ত প্রস্তাবিত বাজেটে সিম-এর ওপর ট্যাক্স ১০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২০০ টাকা করার কথা বলা হয়েছে। এর ফলে নতুন সিম ব্যবহারকারীর সংখ্যা কমে যাবে। মোবাইল অপারেটররা সর্বনিম্ন যে আয়কর দিতো তা এখন শতকরা ২ ভাগে দাঁড়াবে, যা শতকরা ০.৭৫ ভাগের চেয়ে অনেক বেশি।

এএমটিওবি বলেছে, এমন ট্যাক্স আরোপের প্রস্তাবনায় আমরা ভীষণ হতাশাগ্রস্ত। এটা ব্যাপকভাবে স্বীকার করে নেয়া হয় যে, ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের শিখরে অবস্থান করছে বাংলাদেশ। এক্ষেত্রে মোবাইল অপারেটরদের বড় রকমের বিনিয়োগ আছে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আমরা আন্তরিকভাবে আশা করি, শুভবুদ্ধির উদয় হবে এবং এই শিল্পের পক্ষে সরকার তার প্রস্তাবনা ফিরিয়ে নেবে। ৫ জি, ইন্টারনেট থিংস, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সসহ চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে বড় রকমের বিনিয়োগ প্রয়োজন। এই স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে হলে টেলিকম শিল্পকে দেশের স্বার্থের উপযোগী করা প্রয়োজন।