আইভি রহমানের আজ ১৫তম মৃত্যুবার্ষিকী

আওয়ামী লীগের সাবেক মহিলাবিষয়ক সম্পাদক আইভি রহমানের ১৫তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগ আয়োজিত সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে গ্রেনেড হামলায় আহত হয়ে ৪ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে ২৪ আগস্ট মারা যান আইভি রহমান।

প্রতিবারের মতো এবারও দিনটিতে সকাল সাড়ে ৮টায় বনানী কবরস্থানে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ, উপদেষ্টা পরিষদ এবং সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে মরহুমার কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হবে। বাদ আসর পরিবারের পক্ষ থেকে আইভি কনকর্ড টাওয়ারে (বাড়ি-২২, সড়ক-১০৮, গুলশান-২, ঢাকা) মিলাদ ও দোয়া মাহফিল আয়োজন করা হয়েছে।

এছাড়া দিনটি উপলক্ষে ভৈরব উপজেলা ও শহর আওয়ামী লীগ নানান কর্মসূচির আয়োজন করেছে। আইভি রহমান ১৯৪৪ সালের ৭ জুলাই কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরব শহরের চন্ডিবে সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পুরো নাম জেবুন্নেছা আইভি। ১৯৫৮ সালের ২৭ জুন নবম শ্রেণিতে অধ্যয়নকালে ভৈরবের কৃতীসন্তান জিল্লুর রহমানের ( প্রয়াত রাষ্ট্রপতি) সঙ্গে তার বিয়ে হয়। এরপর তার নামের সঙ্গে রহমান যুক্ত করে তিনি আইভি রহমান নামে পরিচিতি পান। তার বাবা জালাল উদ্দিন আহমেদ ছিলেন ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ। মা হাসিনা বেগম ছিলেন গৃহিণী। ৮ বোন ৪ ভাইয়ের মধ্য তিনি ছিলেন ৫ম। ১৯৭১ সালে তিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।
১৯৭৫ সালে আইভি রহমান মহিলা আওয়ামী লীগের সদস্য এবং ১৯৮০ সালে তিনি কেন্দ্রীয় মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হন। এরপর তিনি দীর্ঘদিন এ দায়িত্ব পালন করেন।

রাজনৈতিক সম্পর্ক ছাড়াও আইভি রহমান জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মীয়। তার বিয়ের সাক্ষী ছিলেন বঙ্গবন্ধু। এছাড়া তার বড় বোন সামসুন্নাহার সিদ্দিক বঙ্গবন্ধুর মেয়ে শেখ রেহানার শাশুড়ি। এই সূত্রে আইভি রহমান শেখ রেহানার খালা শাশুড়ি। আইভি রহমানের এক ছেলে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন ও দুই মেয়ে তানিয়া এবং ময়না। নাজমুল হাসান পাপন মায়ের মর্মান্তিক মৃত্যুর বিষয়ে বলেন, ‘আমার মায়ের গুরুতর আহত হওয়ার খবর শুনে আমি প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছুটে গেলাম। সেখানে গিয়ে দেখলাম ডাক্তার-নার্স কেউ নেই। তখন অন্য হাসপাতালে মাকে নিতে চাইলে পুলিশ বাধা দেয়। পরে অনেকটা কষ্টে, জোর করে মাকে সিএমএইচে নিলাম। সেখানেও চিকিৎসায় বিলম্ব করল।’ তিনি বলেন, ‘আমার বাবা জিল্লুর রহমানকে দুই দিন মাকে দেখতে দিল না তৎকালীন সরকার। কি নির্মম নিষ্ঠুরতায় তিন দিন পর মা মারা গেল! লাশ আমার বাবার বাড়ি ভৈরবে জানাজা দিতে নিতে চাইলাম। কিন্তু বাধা দিল খালেদা জিয়ার সরকার। পরে অনেক নিরাপত্তার মধ্যে বনানী কবরস্থানে মাকে দাফন করা হল। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার বিচারের রায় হয়েছে কিন্তু এখনও বাস্তবায়ন হয়নি। আমি রায় বাস্তবায়ন দেখতে চাই। তাহলেই আমার মায়ের আত্মা শান্তি পাবে।’