ডেঙ্গুতে ৩ জেলায় তিনজনের মৃত্যু

মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গু নিয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার কুষ্টিয়া, ফরিদপুর ও ময়মনসিংহে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে।

এর মধ্যে কুষ্টিয়ায় ভেড়ামারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এক গৃহবধূ এবং ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এক নারী মারা যান। আর ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এক গ্রাম পুলিশের মৃত্যু হয়।

ভেড়ামারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার মিজানুর রহমান জানান, মীনা খাতুন নামে ২৫ বছর বয়সী ওই নারী শুক্রবার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন।মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে তার মৃত্যু হয়।

তিনি বলেন, “মীনার শারীরিক অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় সোমবার তার স্বজনদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল।কিন্তু তারা রাজশাহী নিয়ে যেতে রাজি না হওয়ায় মীনার মৃত্যু হয়।”

উপজেলায় এই প্রথম ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর মৃত্যু হলো বলে মিজানুর জানান।

মীনার স্বামী ভেড়ামারা উপজেলার কাজিহাটা গ্রামের আবু রায়হান বলেন, জ্বর নিয়ে মীনাকে ভেড়ামারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তির পর পরীক্ষা করে ডেঙ্গু সনাক্তের কথা জানান চিকিৎসকরা।পরে রাজশাহী মেডিকেলে নিয়ে যাওয়া প্রস্তুতির মধ্যে তার স্ত্রী মৃত্যু হয়।

এদিকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সিদ্দিকুর রহমান (৫৫) নামের এক গ্রাম পুলিশের ডেঙ্গু জ্বরে মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন হাসপাতলর পরিচালক ডা. কামুদা প্রসাদ সাহা।

তিনি বলেন, ডেঙ্গু জ্বর সোমবার বিকাল বেলা ৩টার দিকে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া সিদ্দিকুর মঙ্গলবার ভোরে মারা যান।

সিদ্দিকুরের বাড়ি মাদারীপুর জেলার রাজৈর এলাকার কবিরাজপুর গ্রামে। তিনি কবিরাজপুর ইউনিয়নের গ্রাম পুলিশ ছিলেন।

ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সিভিল সার্জন এনামুল হক জানান, ফরিদপুরে এ পর্যন্ত ২২২৩ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন।এর মধ্যে ১৬৪২ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে।আর মৃত্যু হয়েছে আটজনের।

এছাড়াও গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৫ জন রোগী ডেঙ্গু রোগ নিয়ে জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। বর্তমানে জেলায় ২৩০ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছে।

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডেঙ্গুজ্বরে ফাতেমা আক্তার নামে ৫০ বছরের এক নারীর মৃত্যু হয়েছে।

ফাতেমা কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলার নাজমুল হকের স্ত্রী।

হাসপাতালের উপ-পরিচালক লক্ষ্মী নারায়ণ মজুমদার বলেন, গত ৩ সেপ্টম্বর ডেঙ্গুজ্বর নিয়ে ফাতেমা ময়মনসিংহ মেডিকেলের ১১ নাম্বার ওয়ার্ডে ভর্তি হন।

“পরে তার শারীরক অবস্থার অবনতি হলে ৭ সেপ্টেম্বর তাকে আইসিইউতে নেওয়া। ভোরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আইসিইউতে তার মৃত্যু হয়।“

এ নিয়ে ময়মনসিংহ মেডিকেলে ডেঙ্গু জ্বরে সাতজন মারা গেলো বলে লক্ষ্মী নারায়ণ জানান।

সরকারি তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর এ পর্যন্ত ৭৭ হাজার ২৩০ জন ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

এই সময়ের মধ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ, গবেষণা ইনস্টিটিউটে (আইইডিসিআর) ডেঙ্গু সন্দেহে ১৯২টি মৃত্যুর তথ্যে এসেছে। এর মধ্যে ১০১টি মৃত্যু পর্যালোচনা করে ৬০ জনের ডেঙ্গুতে মৃত্যু নিশ্চিত করেছে আইইডিসিআর।