নানা অভিযোগ সহকারি প্রোগ্রামার অরিন্দমের বিরুদ্ধে

যশোরের মণিরামপুর উপজেলা আইসিটি ট্রেনিং এন্ড রিসোর্স সেন্টারের সহকারি প্রোগ্রামার অরিন্দম মন্ডলের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ করা হচ্ছে, তিনি প্রশিক্ষণ চালাতে গিয়ে স্বজনপ্রীতি, ভূয়া বিল ভাউচার দেখিয়ে টাকা উত্তোলণ, শিক্ষকদের নাস্তার টাকা আত্মসাৎ, কর্মক্ষেত্রে ঠিকমত হাজির না থাকা সহ নানা অনিয়মের সাথে জড়িয়ে পড়েছেন। তার অনিয়মের প্রতিবাদ করলে তিনি শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছেন। ফলে মুখ থুবড়ে পড়েছে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম।

এদিকে বিষয়টির প্রতিকার চেয়ে শনিবার ব্যানবেইসের মহাপরিচালকসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন বেসিক কোর্সের প্রশিক্ষকরা। তবে, অভিযোগগুলো সাজানো বলছেন অরিন্দম মন্ডল।

জানাযায়, মাল্টিমিডিয়ার মাধ্যমে শ্রেণীকক্ষে শিক্ষার্থীদের পাঠদানের জন্য শিক্ষকদের আইসিটি বিষয়ে প্রশিক্ষনের জন্য ২০১৬ সালের ২ মার্চ ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মণিরামপুরসহ দেশের ১২৫ টি উপজেলা আইসিটি ট্রেনিং এন্ড রিসোর্স সেন্টারের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের অধিন বাংলাদেশ শিক্ষা তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরো (বেনবেইস) কর্তৃক পরিচালিত মনিরামপুরে আইসিটি সেন্টারে এই উপজেলা ছাড়াও কেশবপুর এবং অভয়নগর উপজেলার মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মাদ্রাসা এবং কলেজের শিক্ষকরা প্রশিক্ষণ নেন। বর্তমানে সেন্টারটির দায়িত্বে রয়েছেন সহকারি প্রোগ্রামার অরিন্দম মন্ডল। এখানে সকাল-বিকেল দুই ব্যাচে ২৪ জন করে শিক্ষক প্রশিক্ষণে অংশ নেন।

আইসিটি বেসিক কোর্সে প্রশিক্ষক রয়েছেন ছয়জন। অপরদিকে হার্ডওয়ার ট্রাবলশুটিং কোর্সে প্রশিক্ষক রয়েছেন তিন জন। কিন্তু অভিযোগ রয়েছে, বেসিক কোর্সে ছয়জন প্রশিক্ষক থাকা সত্ত্বেও ট্রাবলশুটিং কোর্সের প্রশিক্ষক মনোজিত বিশ্বাসকে বেসিক কোর্সের প্রশিক্ষণে অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। কিন্তু ট্রাবলশুটিংয়ের তিনটি ব্যাচে বেসিক কোর্সের কোন প্রশিক্ষককে অন্তর্ভূক্ত করা হয়নি।

শুধু তাই নয় অরিন্দম মন্ডল এখানকার প্রধান কর্মকর্তা হলেও প্রশিক্ষকদের বঞ্চিত করে নিজেই প্রশিক্ষক সেজে ভাতার টাকা উত্তোলন করেন। এছাড়া প্রশিক্ষানার্থীদের জন্য প্রতিদিন নাস্তা খরচ ৫০ টাকা বরাদ্দ থাকলেও মাত্র ১৫ টাকার নাস্তা দিয়ে বাকি টাকা হাতিয়ে নেন তিনি। অন্যদিকে বিদ্যুৎ বিভ্রাট হলে জেনারেটর চালুর জন্য প্রতিব্যাচে চার হাজার টাকা বরাদ্দ রয়েছে। কিন্তু বিদ্যুৎ বিভ্রাট হলে জেনারেটর চালু করা হয়না একদিনের জন্যও। ফলে এসময় প্রশিক্ষণ ক্লাশ বন্ধ থাকে। অথচ তিনি ভাউচার দিয়ে বরাদ্দকৃত অর্থ উত্তোলন করেন।

আবার তিনি নিজেই রিসোর্স পার্সন সেজে ভাতা উত্তোলন করেন। কাজ না করিয়ে আইসিটি ভবন মেরামতের জন্য বরাদ্ধের টাকাও পকেটে ঢোকান তিনি। আর সপ্তাহের অধিকাংশ সময় তিনি কর্মক্ষেত্রে থাকেন না।

প্রশিক্ষকরা তার এসব অনিয়ম এবং দূর্নীতির প্রতিবাদ করায় ২২ অক্টোবর থেকে তিনি প্রশিক্ষণ কার্যক্রম বন্ধ করে দেন।
কেন্দ্রটির প্রশিক্ষক মজনুর রহমান জানান, এমন কোন ক্ষেত্র নেই যেই টাকা পকেটে ঠোকাননা সহকারি প্রোগ্রামার অরিন্দম মন্ডল। তার দূর্নীতির কারণে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম মুখ থুবড়ে পড়েছে।

জানতে চাইলে সহকারি প্রোগ্রামার অরিন্দম মন্ডল তার বিরদ্ধে আনিত অভিযোগগুলো সাজানো বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেন, হার্ডওয়ার ট্রাবলশুটিং কোর্সের প্রশিক্ষক মনোজিত বিশ্বাসের পারফরমেন্স ভাল। তাকে অতিরিক্ত বেসিক কোর্সের প্রশিক্ষক করায় এখানকার প্রশিক্ষকরা আমার ওপর ক্ষেপেছেন। দ্রুত বেসিক কোর্সের প্রশিক্ষণ শুরু হবে বলে জানান তিনি।