আত্মহত্যা নাকি পরিকল্পিত হত্যা? সুদীপের মৃত্যু ঘিরে রহস্য

ঝিনাইদহ শহরের কে পি বসু সড়কের একটি বাসা থেকে সুদীপ জোয়ারদার (৩৫) নামে এক যুবকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পরিবারের দাবি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে সে। মরদেহের পিঠে ও পায়ে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। আঘাতের চিহ্নের কারনে তার মৃত্যু ঘিরে তৈরি হয়েছে রহস্য। নিহত সুদীপ জোয়ারদার ওই এলাকার সুনীলের জোয়ারদারের ছেলে।

শনিবার (০৬ জুলাই) নিজ ঘরে তোয়ালে দিয়ে ফাঁস দেওয়া অবস্থায় সুদীপের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। বন্ধু বান্ধব, মামা ও স্থানীয়দের মতে ঘটনাটি আত্মহত্যা নয় বরং একটি সুপরিকল্পিত হত্যার ইঙ্গিত দিচ্ছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ছোট বেলায় সুদীপের মা মারা যান। পরে তার বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করেন। সৎ মায়ের সঙ্গে বেড়ে উঠলেও পরিবারে রয়েছে তার পালিত ভাই শিলন জোয়ারদার। তাদের মধ্যে পারিবারিক সম্পর্কও ছিল কিছুটা জটিল ও টানাপোড়েন পূর্ণ। সদা হাস্যোজ্জ্বল ও সদালাপী সুদীপ এমনভাবে আত্মহত্যা করবে সেটি মানতে পারছেন না তার মামা ও বন্ধুদের কেউই।

নিহত সুদীপের বন্ধু ফাহাদ মাহমুদ মারুত বলেন, সুদীপ সবসময় হাসিখুশি থাকতো। বাড়িতে সৎমায়ের সাথে তার বিরোধ চলে আসছিল। মাঝে শারীরিকভাবে কিছুটা অসুস্থ হলেও বাড়ি থেকে চিকিসার কোন ব্যবস্থা করেনি। ওর আচার আচরণে কখনো এমনটি মনে হয়নি যে ও আত্মহত্যা করতে পারে। মৃত্যুর পর তার পকেটে দুটি মোবাইল ফোন পাওয়া যায়। যা আত্মহত্যার সময় থাকা সন্দেহজনক।

নিহতের ছোট চাচা তপন জোয়ারদার বলেন, বাবা, মা ও ছোট ভাইয়ের সাথে সুদীপের তেমন ভালো সম্পর্ক ছিলো না। মাঝে মাঝে তাঁদের ঝামেলা হতো।

নিহতের ছোট মামা প্রশান্ত রায় বলেন, সুদীপ আত্মহত্যা করেনি, তাঁকে হত্যা করা হয়েছে। তোয়ালে দিয়ে ফাঁস নিয়েছে সে। তার দুই পায়ে রশি দিয়ে বাঁধার দাগ রয়েছে। তার পিঠে ও পায়ে আঘাতের দাগ রয়েছে। আমি ভাগ্নে হত্যার বিচার চাই।

ঝিনাইদহ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলে বলা যাবে এটি নাকি আত্মহত্যা। তবে পরিবারের পক্ষ থেকে এখনও কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। তবে অভিযোগ পেলে পরবর্তীতে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।