নির্বাচন পেছানোর দাবিতে শাহবাগে অবরোধ

আগামী ৩০ জানুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের নির্বাচন পেছানোর দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মত শাহবাগ মোড় অবরোধ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থীরা।

বুধবার দুপুরে তারা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন।

এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন তারা। কর্মসূচি শেষে নির্বাচন কমিশন অফিস অভিমুখে পদযাত্রা ও ঘেরাও কর্মসূচি পালন করার জন্য রওনা দিলে শাহবাগ মোড়ে বাধা দেয় পুলিশ।

এ কারণে শিক্ষার্থীরা শাহবাগ মোড় অবরোধ করে অবস্থান কর্মসূচি পালন শুরু করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হল ছাড়াও বিভিন্ন হলের দুই শতাধিক শিক্ষার্থী এতে অংশ নেন।

শাহবাগ অবরোধের কারণে ওই সড়ক দিয়ে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।

মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে সংহতি প্রকাশ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস) সাদ্দাম হোসেন, সংস্কৃতি সম্পাদক আসিফ তালুকদার, সদস্য তানভীর হাসান সৈকত, জগন্নাথ হল ছাত্র সংসদের ভিপি উৎপল বিশ্বাস, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) কাজল দাশ প্রমুখ।

এসময় বিভিন্ন হল সংসদের ভিপি, জিএস, এজিএসসহ ছাত্রলীগের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে সাদ্দাম হোসেন বলেন, মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ঐক্যবদ্ধ। হাইকোর্টের উপর বন্দুক রেখে নির্দেশ দিয়ে আমাদের গায়ে আগুন ঢেলে দেবেন না। আপনারা (ইসি) নিজে তার উদ্যোগ নেন।

প্রগতিশীল আইনজীবীদেরে এ দাবি আপিল বিভাগে তোলার আহ্বান জানিয়ে সাদ্দাম বলেন, ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রে অনতিবিলম্বে তারিখ পরিবর্তনের করতে হবে। নির্বাচন কমিশন বোকার স্বর্গে বাস করছেন। এসময় শিক্ষক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন, সুশীল সমাজ, ক্রিয়াশীল সব ছাত্র সংগঠনকে অপমান, অধিকার হরণের বিরুদ্ধে একতাবদ্ধ হওয়ার কথা বলেন তিনি।

উৎপল বিশ্বাস বলেন, আমরা নির্বাচন কমিশন বরাবর চিঠি দিয়েছি। তারপরেও কেন দাবি মেনে নেওয়া হলো না তা আমরা জানতে চাই। একইদিনে সার্বজনীন উৎসব স্বরস্বতী পূজা এবং নির্বাচন কখনও হতে পারে না। কারণ শিক্ষার্থীরাসহ ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার অংশগ্রহণের মাধ্যমে পূজা উদযাপন করা হয়। একই তারিখে যদি নির্বাচন হয় তাহলে উৎসবের আনন্দ হবে না, তাই আমরা চাই এ দিনে যেন নির্বাচন না হয়।

তিনি বলেন, আমরা মঙ্গলবার ১৮ ঘণ্টা আল্টিমেটাম দেওয়ার পরেও কেন আমাদের দাবি মেনে নেওয়া হলো না, তার সুস্পষ্ট জবাব চাই। আমি এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করি। তিনি বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত আমাদের দাবি মেনে না নেওয়া হবে ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাব।

এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘পূজার দিনে নির্বাচনে মানি না, মানি না’, ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’, ‘শেখ হাসিনার বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’, ‘৩০ তারিখের নির্বাচন মানি না, মানব না’ বলে স্লোগান দেন।

উল্লেখ্য, সরস্বতী পূজার কারণে ভোটগ্রহণের তারিখ পেছানোর নির্দেশনা চেয়ে করা রিট আবেদন মঙ্গলবার হাইকোর্ট খারিজ করে দিলে গতকালও শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা।