করোনাভাইরাসে মৃত্যু বেড়ে ৩২০২

korona virus

বিশ্বব্যাপী চীন থেকে ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ৩ হাজার ২০২ জনের মৃত্যু হয়েছে।

এ ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৯৩ হাজার ১৫৮ জন। বিশ্বের ৮০ দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে এ প্রাণঘাতী ভাইরাস। তবে এখন পর্যন্ত ৫০ হাজার ৬৯১ জন চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। খবর বিবিসি ও রয়টার্সের।

শুধুমাত্র চীনের মূল ভূখণ্ডেই করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৮০ হাজার ২৭০ জন। সেখানে মারা গেছে ২ হাজার ৯৮১ জন।

চীনের বাইরে সবচেয়ে বেশি আক্রান্তের সংখ্যা দক্ষিণ কোরিয়ায়। দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৫ হাজার ৩২৮ জন এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। অন্যদিকে মারা গেছে ৩১ জন।

চীনের পর সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর ঘটনা ইরানে। সেখানে এখন পর্যন্ত ৭৭ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং আক্রান্তের সংখ্যা ২ হাজার ৩৩৬ জন। ইরানে জেল থেকে ৫৪ হাজার কয়েদিকে মুক্ত করে দেয়া হচ্ছে এ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায়।

ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে ইতালিতেই এই ভাইরাসের প্রকোপ সবচেয়ে বেশি। সেখানে ২ হাজার ৩৬ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে এবং মারা গেছে ৫২ জন।

জাপানে নোঙর করা প্রমোদতরী ডায়মন্ড প্রিন্সেসের ৭০৬ যাত্রী করোনায় আক্রান্ত হয়েছে এবং মারা গেছে ৬ জন।

অপরদিকে জাপানের বিভিন্ন স্থানে আক্রান্তের সংখ্যা ২৯৪ এবং মৃত্যু হয়েছে ৬ জন। ফ্রান্সে এখন পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ২০৪ এবং মৃত্যু ৪ জন।

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস সম্পর্কে বিজ্ঞানীরা সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, মোবাইল ফোনের স্ক্রিনের মতো কঠিন পদার্থ এ ভাইরাস সংক্রমণের একটি সম্ভাব্য মাধ্যম।

কোনোভাবে এই ভাইরাসের জীবাণু এসব পদার্থের সংস্পর্শে এলে টানা এক সপ্তাহ পর্যন্ত থেকে যেতে পারে সেখানে। খবর ডেইলি মেইলের।

করোনাভাইরাস শুধু মানব শরীরে নয়, সুপ্ত অবস্থায় থেকে যেতে পারে মোবাইলের স্ক্রিনের মতো কঠিন পদার্থের সঙ্গেও।

বিজ্ঞানীরা বলেছেন- কাশি, সর্দির মাধ্যমে হ্যান্ডেল, হ্যান্ডসেটের মতো পদার্থে ছড়িয়ে পড়তে পারে করোনার জীবাণু। তা এক সপ্তাহ পর্যন্ত সেখানে থেকে যেতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের বিস্তারের জন্য ফোন পেট্রি ডিশ (ল্যাবরেটরিতে ব্যবহৃত এক ধরনের ছোট গোল স্বচ্ছ পাত্র) হিসেবে ভূমিকা রাখতে পারে।

এ জন্য দিনে দুবার অ্যালকোহল মিশ্রিত টিস্যু দিয়ে ফোনের স্ক্রিন পরিষ্কার করার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।

ইংল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি অব সাউথহ্যাম্পটনের অধ্যাপক উইলিয়াম কেভিল ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘আপনি হাত ধুয়ে নিলেন ঠিকই, কিন্তু যখন স্মার্টফোন নিয়ে নাড়াচাড়া শুরু করলেন এবং মুখে হাত নিলেন, তখনই আপনার শরীরে ছড়িয়ে পড়তে পারে এই ভাইরাস।’

দিনে দুবার ফোন জীবাণুমুক্ত করার পরামর্শ দিয়েছেন ইউনিভার্সিটি অব ওয়াটারলুর অধ্যাপক পেটার হল। তার মতে, অন্তত দুপুরে খাওয়ার সময় ও চা পান করার সময় ফোন পরিষ্কার করা উচিত।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ধরনের ভাইরাস ধ্বংসের জন্য অ্যালকোহল মিশ্রিত টিস্যু (অ্যালকোহল ওয়াইপস) খুবই কার্যকর।

তবে মার্কিন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান অ্যাপল বলছে, ফোনের স্ক্রিন জীবাণুমুক্ত করার জন্য মাইক্রোফাইবার ক্লথ (এক ধরনের তোয়ালে) ও সোপি ওয়াটার (সাবান পানি) ব্যবহার করা উচিত।

গত বছরের ডিসম্বরে চীনের হুবেইপ্রদেশের রাজধানী উহানের একটি বুনোপ্রাণীর বাজার থেকে করোনাভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ে বলে ধারণা করা হয়।

চীনসহ এ পর্যন্ত বিশ্বে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ২০২ জনে। ৭০টিরও বেশি দেশ ও অঞ্চলে এ ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৯২ হাজার ছাড়িয়েছে। চীনের হুবেইপ্রদেশেই অধিকাংশ মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। বুধবার নতুন করে আরও ৩১ জনের মৃত্যু হয়েছে।

এখন পর্যন্ত ৪৮ হাজার ২ জন চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ১৩ হাজার ৫৩০ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।