খুলনায় তয়ন হত্যা: ৫ জনের ফাঁসির রায়

খুলনার খালিশপুরে দুই বছর আগে স্কুল শিক্ষক তাসফিন হোসেন তয়নকে হত্যার ঘটনায় পাঁচজনের ফাঁসির রায় দিয়েছে আদালত।

বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালের বিচারক মো. নজরুল হাওলাদার রোববার আলোচিত এ মামলার রায় ঘোষণা করেন।

সাজাপ্রাপ্ত প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করেছে আদালত।

মামলার সাত আসামির মধ্যে দুইজনকে আদালত খালাস দিয়েছে বলে ট্রাইবুনালের পিপি আহাদুজ্জামান জানান।

খুলনা নগরীর মুজগুন্নী এলাকার কাজী তোতার ছেলে কাজী তাসকিন হোসেন তয়ন (৩২) স্থানীয় একটি কিন্ডার গার্টেন স্কুলে শিক্ষকতা করতেন। ২০১৮ সালের ২৮ অগাস্ট বিকালে তিনি নিখোঁজ হলে ৮ সেপ্টেম্বর খালিশপুর থানায় মামলা দায়ের করেন তার বাবা।

সেই মামলার ভিত্তিতে পুলিশ সাইফুল নামে এক আসামিকে গ্রেপ্তার করে। পরে তার দেওয়া তথ্যে ১১ সেপ্টেম্বর আনসার উদ্দিন সড়কে ডোবা থেকে তয়নের গলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

সাজাপ্রাপ্তরা হলেন- কাজী মুরাদ, কাজী ফরহাদ হোসেন, মো. জাকির, কাজী রওনাকুল ইসলাম রনো ও সাইফুল।

তাদের মধ্যে মো. জাকির পলাতক রয়েছেন। অন্যরা রায় ঘোষণার সময় আদালতে ছিলেন।

অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় কাজী সাব্বির হোসেন ফাহিম ও কাজী মাসুম নামে দুই আসামিকে খালাস দিয়েছে আদালত।

পিপি আহাদুজ্জামান বলেন, গত ২৬ ফেব্রুয়ারি একই ট্রাইব্যুনালে এ মামলার যুক্তিতর্ক শুনানি শেষ হয়।

এ মামলার পাঁচ আসামি জামিনে ছিলেন। যুক্তিতর্ক শুনানি শেষ হওয়ার দিন তারা আদালতে হাজির হলে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বিচারক।

২০১৮ সালের ২৮ অগাস্ট রাতে তাকে হত্যার পর ডোবার মধ্যে লাশ চাপা দিয়ে রাখা হয়।

চলতি বছর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মামলাটি চাঞ্চল্যকর ও রোমহর্ষক মামলা হিসেবে দ্রুত বিচারের জন্য খুলনার বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠায়।

মামলার রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি বীরেন্দ্রনাথ সাহা বলেন, পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে সাইফুল স্বীকার করেন, সাইফুলসহ তার সহযোগীরা তাকে হত্যার পর বয়রা পুলিশ লাইন্সের পশ্চিম পাশের মোস্তফা কামালের ডোবা জমির উত্তর পাশের কচুরিপনা ও হোগলাবনের মধ্যে চাপা দিয়ে রাখেন তারা। সাইফুলের দেখানো ওই ডোবা থেকেই পিলার ও বাঁশের সঙ্গে বাঁধা তয়নের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

পরে আসামি সাইফুল ও তার সহযোগী কাজী মুরাদ মহানগর হাকিমের আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মো. মিজানুর রহমান সাতজনকে অভিযুক্ত করে ওই বছরের ১০ ডিসেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র দেন। মামলায় ২২ জনকে সাক্ষী করা হলেও তাদের মধ্যে ১৮ জন আদালতে সাক্ষ্য দেন।