যশোরে ফাঁদে ফেলে দুই সন্তানের জননীকে গণধর্ষণ, আটক ১

যশোরের অভয়নগরে এক গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ও সহযোগিতার অভিযোগে মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় সোহেল রানা নামে এক অভিযুক্তকে আটক করেছে পুলিশ। নির্যাতিত ওই নারীর দাবি, সতিনকে ছাড়িয়ে দেবার (তালাক) কথা বলে ডেকে নিয়ে কৌশলে তাকে ধর্ষণ করা হয়েছে।

অভিযুক্তরা হলো অভয়নগরে উপজেলার ইছামতি গ্রামের মিজানুর রহমানের ছেলে সোহেল রানা (২৬), গোপীনাথপুর গ্রামের খোকা শেখের ছেলে হেকমত শেখ (৩০), বারিক শিকদারের ছেলে টিপু শিকদার (৪০), হিদিয়া গ্রামের মুনসুর গাজীর ছেলে নাজমুল গাজী (২৬) ও খায়বার বিশ্বাসের ছেলে শফিকুল বিশ্বাস।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, দুই সন্তানের জননী নির্যাতিত ওই নারী একজন স্কুল শিক্ষকের স্ত্রী। ১০/১২দিন আগে তিনি অটোবাইকে চড়ে মামা বাড়ি যাচ্ছিলেন। এসময় নাজমুল গাজী ও শফিকুল বিশ্বাসের সাথে তার পরিচয় হয়। আলাপচারিতার একপর্যায়ে ওই নারী তার স্বামীর দ্বিতীয় বিয়ে ও সাংসারিক জটিলতার বিষয়ে তাদের জানান। এসময় নাজমুল ও শফিকুল তাকে সতিনকে তালাক দেয়ার ব্যবস্থা করবে বলে আশ্বাস দিয়ে মোবাইল ফোনের নম্বর নেয়।
এরপর গত ২৪ মার্চ তারা ফোন দিয়ে ওই নারীকে ইছামতি গ্রামের পাগলা বাবার মাজারে দেখা করতে বলে। দেখা করতে গেলে তারা ওই নারীর কাছ থেকে তার স্বামীর ফোন নম্বর নিয়ে দ্বিতীয় স্ত্রীকে তালাক দেয়ার জন্য হুমকি দেয়। এরপর তার জানায় ওঝার মাধ্যমে ঝাড়ফুক করে সতিনের তালাক করিয়ে দেবে। এজন্য শুধু তাদের সাথে যোগাযোগ রাখতে বলে।
এরপর গত ২৮ মার্চ সন্ধ্যায় ফোন দিয়ে ফের একইস্থানে ওই নারীকে ডাকা হয়। এসময় ওই স্থানে নাজমুল ও শফিকুলের সাথে হেকমত শেখ উপস্থিত ছিল। এসময় নাজমুল ও শফিকুল পুলিশ আসছে বলে দৌড়ে পালিয়ে যায়। পরক্ষণই সেখানে মোটরসাইকেল নিয়ে হাজির হয় সোহেল রানা ও টিপু শিকদার। তারা এসে বলে তোরা এখানে খারাপ কাজ করছিস। এরপর তারা জোর করে হেকমত শেখের সামনে থেকে ওই নারীকে মোটারসাইকেলে উঠিয়ে গলাচিপা মোড়ের সুশান্তের পরিত্যক্ত জমিতে নিয়ে যায়। সেখানে সোহেল রানা হত্যার হুমকি দিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। কিছু সময় পরে সেখানে হাজির হেকমত শেখ এবং সে ওই নারীকে ধর্ষণ করেন। এরপর সোহেল রানা ও টিপু শিকদার মোটরসাইকেলে উঠিয়ে ইছামতি প্রাইমারি স্কুলের সামনে নামিয়ে চলে যায়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা( ওসি) তাজুল ইসলাম বলেন, রোববার সন্ধ্যায় ওই নারীর লিখিত অভিযোগ মামলা হিসেবে গ্রহণ করা হয়। এরপর অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত সোহেল রানাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্য অভিযুক্তরা পলাতক রয়েছে। এছাড়া ওই নারীর ডাক্তারি পরীক্ষা করানো হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, আটক আসামির জীজ্ঞাসাবাদ শেষে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।