কর্মীদের বেতন ইস্যুতে মুখ খুললেন সাকিব

করোনার দুর্যোগে যুক্তরাষ্ট্রে থেকে নিজের সাধ্যমতো মানুষকে সাহায্য করার চেষ্টা করে যাচ্ছেন সাকিব আল হাসান। এরই মধ্যে একটা নেতিবাচক সংবাদের শিরোনাম হতে হয়েছে তাঁকে। সাতক্ষীরায় তাঁর অ্যাগ্রো ফার্মের শ্রমিকরা চার মাসের বেতন বকেয়া দাবি করে বিক্ষোভ শুরু করেন। মুহূর্তের মধ্যে এ খবর ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে। করোনায় দুস্থদের সাহায্যে তহবিল গঠন করলেও নিজের কর্মচারীদের বেতন না দেওয়া নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি। তবে অবশেষে বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছেন সাকিব।

বিষয়টি নিয়ে নিজের ফেসবুক পেজে সবার কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন সাকিব। সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘দেরিতে সাড়া দেওয়ার জন্য আমি দুঃখিত। তবে আপনাদের কাছে সত্যটা তুলে ধরার জন্য আমি সমস্ত তথ্য এক করার চেষ্টায় ছিলাম। আমার নামের সঙ্গে একটি অ্যাগ্রো ফার্মের সরাসরি নামকরণ হওয়া মূলত প্রশ্ন তোলা হয়েছে। ব্যস্ততার কারণে আমার অন্য কোম্পানিগুলোর মতো এখানেও আমার সহমালিক বা পার্টনাররা দেখভাল করছেন। এ কারণে নিয়মিত আমার খোঁজ নেওয়া কষ্টকর হয়ে যায়।

আপনারা সবাই জানেন, আমার বছরের বেশিরভাগ সময় দেশের বাইরে থাকতে হয়, এ ছাড়া আমাদের দ্বিতীয় সন্তান আসছে। ফলে অ্যাগ্রো ফার্মের সব খবর আমি নিতে পারিনি। মিডিয়ার মাধ্যমে আমি শ্রমিকদের এই বিষয়টা জেনেছি। তবে আমার পার্টনাররা আমাকে পুরো বিষয়টি জানাতে ব্যর্থ হয়েছেন। শ্রমিকদের আগামী ৩০ এপ্রিলের মধ্যেই সব পাওনা দেওয়ার ব্যাপারে বলা হয়েছে। যদিও সবার কাজ জানুয়ারিতেই শেষ হয়েছিল। কিন্তু ৩০ এপ্রিলের মধ্যে পাওনা পাওয়ার ব্যাপারটি জানলেও হঠাৎই তারা রাস্তার নেমে আসে। যাই হোক, এমন বিষয় জানার সঙ্গে সঙ্গে আমি সমাধানের উদ্যোগ নিয়েছি। আমার নিজের আয় থেকে তাদের বেতন পরিশোধ করে দেব, কোনো কোম্পানি বা আমার অংশীদারদের থেকে নিয়ে নয়। আসলে আমি মনে করি, এটা কোম্পানির অভ্যন্তরীণ একটা বিষয়, যা অভ্যন্তরীণ থাকাই উচিত ছিল। আমি খুবই মর্মাহত হয়েছি তাদের মাস শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে না দেখে। যেহেতু তারা নিজেরাই এ বিষয়ে সম্মত হয়েছিল। আরো অনেকের মতো আমিও অসহায় মানুষের জন্য অর্থ সংগ্রহ করছি। তাই অবাক হচ্ছি যে, মানুষ এটা কীভাবে ভাবল এত বিপুল সংখ্যক শ্রমিককে আমি বঞ্চিত করব, যাদের তিন বছর ধরে নিয়মিত বেতন দিয়ে আসা হচ্ছে। দুঃখজনকভাবে বলতে হচ্ছে, মিডিয়ার ভুল তথ্যের কারণে এটা এমন আকার ধারণ করেছে। এটা ভালো হতো যদি তারা রং ছড়ানো হেডলাইন না করে আসল সত্যটা সামনে আনত। যেটা আংশিক মিথ্যা ও বেশিরভাগই ভিত্তিহীন। আমার মনে হয়, মিডিয়ার একটা শক্তিশালী ভূমিকা আছে, সত্য যাচাই করার এবং সঠিক তথ্যের ওপর প্রতিবেদন তৈরি করার। তা না হলে হয়তো তারা আরো অনেককেই আমার মতো আঘাত করবে কোনো কারণ ছাড়া। তারা পুরো বিষয়টায় ভালোভাবে নজর দিয়ে বাকি অংশীদারদের নামেও দায় আনতে পারত শুধু আমার নামটা তুলে ধরার বদলে। আমি আশা করি, মিডিয়া এবং সাংবাদিকরা প্রতিবেদন করার বেলায় আরো যত্নবান হবেন। একটা জাতি হিসেবে আমি মনে করি, আমাদের আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় রয়েছে মনোযোগ দেওয়ার এবং আমাদের উচিত মিথ্যা, ভিত্তিহীন তথ্যের ব্যাপারে সতর্ক থাকা এবং কঠোর হওয়া। আমার মনে হয়, আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের দিকে আমাদের এখন নজর দেওয়া উচিত। সবাই নিরাপদে থাকুন, ভালো থাকুন।’