রোগ প্রতিরোধে সকালে হাঁটুন সূর্যালোকে

ভিটামিন ‘ডি’ সোলার ভিটামিন বা সানসাইন ভিটামিন নামে পরিচিত। সূর্যের আলোয় আমাদের ত্বকের গভীরতম স্তরে কলেস্টেরল থেকে ভিটামিন ডি-৩ (কলিক্যালসিফেরল) তৈরি হয়।

ভিটামিন ‘ডি’ দেহে ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস নিয়ন্ত্রণ করে হাড়, মাংসপেশি, দাঁতের গঠনসহ আরও নানাবিধ জৈবিক ক্রিয়াকলাপে নিয়ন্ত্রণ করে। তাই মাঝেমধ্যে সূর্যালোকে হাঁটতে হয়। এতে ভিটামিন ডি’র অভাব দূর হয়।

রক্তে পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন ‘ডি’ ক্যান্সার, ডায়াবেটিস, শ্বাসকষ্ট বা হাঁপানি রোগ (অ্যাজমা) এবং হাইপ্রেশার হওয়ার এর ঝুঁকি বহুলাংশে কমিয়ে দেয়।

গবেষণায় প্রমাণিত ভিটামিন ডি-৩ ফুসফুসের ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া জীবাণুবাহিত রোগের সংক্রমণ ঠেকাতে শক্তিশালী ভূমিকা পালন করে।

ভিটামিন ‘ডি’ ও করোনাভাইরাস

করোনাভাইরাসের আক্রমণে শরীরে অতিমাত্রার ইনফ্ল্যামেটরি মেডিয়েটর সাইটোকাইন রিলিজ হয়। একে সাইটোকাইন স্ট্রোম-ই বা সাইটোকইন ঝড় বলে। প্রাকৃতিক ডিফেনসিভ মেকানিজমের ফলেই এমন হয়।

ধারণা করা হচ্ছে, মূলত এই সাইটোকাইন ঝড়ের প্রভাবেই ফুসফুস তীব্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং অক্সিজেন স্বল্পতা ঘটে অবশেষে মাল্টি অর্গান ফেইলর হয়ে মৃত্যু হয়।

তবে এই ভাইরাসে আক্রান্ত ৮০ শতাংশ মানুষের হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। এ রোগে মৃত্যুর হার ২-৩ শতাংশ। তবে এ রোগ তীব্র ছোঁয়াচে।

ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গেনাইজেশন এই করোনাভাইরাস মহামারীতে ভিটামিনের অভাব যেন না হয়, তার জন্য নিয়মিত ভিটামিন ‘ডি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে।

সম্প্রতি ইউরোপে একটি গবেষণায় দেখা গেছে, এই ভাইরাসের সংক্রমণে মারা যাওয়া বেশিরভাগেরই ভিটামিন ‘ডি’র ঘাটতি রয়েছে। সকালে সূর্যালোকে হাঁটলে এই ভিটামিনের ঘাটতি পূরণ হয়।

ভিটামিন ‘ডি’ কীভাবে পাবেন

১. প্রতিদিনের খাবারে পর্যাপ্ত ভিটামিন মিনারেল দেহের জন্য অতিজরুরি। দুধ ও ডিমে ভিটামিন ‘ডি’ পাওয়া যায়। তা ছাড়া ভিটামিন ‘ডি’ ট্যাবলেট আকারেও পাওয়া যায়। ক্যালসিয়াম ট্যাবলেটের সঙ্গে ভিটামিন ডি-৩ মিশ্রিত থাকে।

২. ভিটামিন ডি’র অভাব দূর করতে প্রতিদিন সকালে খানিকটা সময় সূর্যালোকে হাঁটার অভ্যাস করুন। লেখক: সহকারী অধ্যাপক, সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ।